মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযোগ্য মর্যাদায় শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের উল্টো রথযাত্রা উৎসব পালিত হয়েছে।
সোমবার (৭ জুলাই) ইসকন মন্দির এবং শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের আখরা থেকে দুটি পৃথক উল্টা রথযাত্রা বের করা হয়।
সকাল থেকে দুটি মন্দিরে শত শত ভক্ত বৃন্দ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেন। জগন্নাথ দেবের পূজা, নাম সংকীর্তন ও জগন্নাথ দেবের ভোগ আরতির মধ্য দিয়ে শেষ হয়। পরে মন্দিরে মন্দিরে মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়।
সনাতন শাস্ত্র জানায়, আষাঢ় মাসের দ্বিতীয়ায় শুক্লপক্ষে রথযাত্রায় বেরিয়ে পড়েন প্রভু জগন্নাথ। পুরীর রথযাত্রায় জগন্নাথদেব রওনা দেন তার মাসির বাড়ি। কিছুদিন মাসির বাড়িতে থাকেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা। তারপরেই উল্টো রথে নিজের ধামে ফেরেন। দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রাকে নিয়ে তার এই স্বর্গীয় রথযাত্রা হিন্দু শাস্ত্রীয় বিধি মেনে ধুমধাম সহকারে আয়োজিত হয়।
পৌরানিক ঐতিহাসিক শাস্ত্র মতে, ১০৭৮ সালে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে রথযাত্রার ইতিহাস তৈরি হয়েছিল। তারপর থেকেই উপমহাদেশে বিভিন্ন প্রান্তে ক্রমান্বয়ে গোড়াপত্তন ঘটে রথযাত্রা উৎসবের।
ব্রহ্মাণ্ডপুরাণ বলে, রাজা ইন্দ্রদ্যুন্ম ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত। স্বপ্নে বিষ্ণু মন্দির গড়ার আদেশ পেয়েছিলেন ইন্দ্রদ্যুন্ম। মূর্তি গড়ার দায়িত্ব পড়েছিল স্বয়ং বিশ্বকর্মার কাঁধে। বিশ্বকর্মার শর্ত ছিল যে, মূর্তি গড়ার সময়ে কেউ মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন না। কিন্তু রাজা সেই শর্ত মানতে পারেননি। মূর্তি গড়ার সময় মন্দিরের ভেতর থেকে কোনো আওয়াজ না পেয়ে রাজা প্রবেশ করেছিলেন মন্দিরে। মূর্তি তখন সবেমাত্র অর্ধেক গড়া হয়েছে। রাজা ঢুকে পড়ায় আর সম্পূর্ণ হয়নি সেই মূর্তিগুলো। মুহূর্তে অদৃশ্য হয়ে যান বিশ্বকর্মা। রাজা তারপর থেকে সেই অসম্পন্ন মূর্তিকেই দেবজ্ঞানে পুজো করেন। তখন থেকেই ভারতের পুরীর মন্দিরে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার পুজো হয়ে আসছে।
বিবিবি/আরএ