ঢাকা, শনিবার, ৭ ভাদ্র ১৪৩২, ২৩ আগস্ট ২০২৫, ২৮ সফর ১৪৪৭

সারাদেশ

জামায়াত ধর্মের নামে প্রতারণা করছে: আযম খান

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:৩৮, আগস্ট ২২, ২০২৫
জামায়াত ধর্মের নামে প্রতারণা করছে: আযম খান বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান

লক্ষ্মীপুর: জামায়াত ধর্মের নামে প্রতারণা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান।

তিনি বলেছেন, জামায়াত ঘরে ঘরে গিয়ে বেহেস্তের টিকিটের কথা বলে ভোট চাইছে।

মা-বোনদের সঙ্গে এমন কথা বলে তারা প্রতারণা করছে।

শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আহমেদ আযম খান এ কথা বলেন।  

আলেকজান্ডার মডেল সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ আয়োজন করা হয়।

আযম খান বলেন, আজ এখানে জামায়াতের একজন নেতা বক্তব্য দিয়েছেন। তারা একদিকে ৩০০ আসনে মনোনয়ন দিয়েছেন, সেটা স্বীকারও করেছেন। অন্যদিকে তারা পিআরের জন্য আন্দোলনের ঘোষণা দিচ্ছেন। তিনি প্রশ্ন রাখেন, যদি পিআরের জন্য আন্দোলন করেন তাহলে নমিনেশন দিলেন কেন? পিআরের তো কোনো প্রার্থী নেই। একজন প্রার্থীও থাকবে না, শুধু দল থাকবে আর মার্কা থাকবে। জাতির সামনে এই প্রতারণা বন্ধ করতে হবে। জাতি এ ধরনের প্রতারণা দেখতে চায় না। আজ তারা ধর্মের নামে প্রতারণা করছে। ঘরে ঘরে গিয়ে বলছে— ‘আমাদের মার্কায় ভোট দিন, আপনাদের জন্য বেহেস্তের টিকিট এনেছি। ’ -নাউজুবিল্লাহ।

তিনি আরও বলেন, তারা বলে— ‘আমাদের ভোট না দিলে মৃত্যুর পরে জানাজা পড়াবে কে?’ মা-বোনদের এ ধরনের কথা বলে কত বড় প্রতারণা করছে! বিএনপির সঙ্গে দেশের ৯০ ভাগ আলেম-ওলামা আছেন। মাত্র ৫ ভাগ আলেম-ওলামা নিয়ে তারা বড়াই করছে। আমরা যারা বিএনপি করি, আমরা ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাস করি। অথচ তারা প্রতারণামূলক বক্তব্য নিয়ে মা-বোনদের কাছে যাচ্ছে। আপনাদের সচেতন হতে হবে। ঘরে ঘরে গিয়ে বুঝিয়ে দিতে হবে যে, এই দলটি রাজনৈতিক প্রতারণার পাশাপাশি ধর্মের নামেও প্রতারণা করছে।

গণঅভ্যুত্থানকে স্বাধীনতার সঙ্গে মেলানো যাবে না উল্লেখ করে আহমেদ আযম খান বলেন, আমাদের ১৭ বছরের আন্দোলন রক্তের রাজপথে বিএনপি নেতাকর্মীদের। হাজারও গুম-খুন হয়েছে, ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আর ১৭ বছর পর ৩৬ দিনের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৮০০ নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। আমরা সেই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে ধারণ করি, স্বীকার করি, লালন করি। কিন্তু সেটা দ্বিতীয় স্বাধীনতা নয়। স্বাধীনতা একবারই এসেছে, ১৯৭১-এ। যারা দ্বিতীয় স্বাধীনতার কথা বলে, তারা প্রথম স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে। জুলাই ঘোষণায় যখন একাত্তরের নাম আসে, ওই দলটি মেনে নিতে পারে না। একাত্তরের কথা শুনলেই তারা অস্বস্তিতে পড়ে। কারণ একাত্তরে তারা বাংলাদেশ চায়নি, স্বাধীনতাও তাদের ভালো লাগে না।

তিনি বলেন, একাত্তর আমাদের স্বাধীনতা, একাত্তর আমাদের লাল-সবুজের পতাকা।

বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের লুটপাট আমরা দেখেছি। শেখ মুজিবের কন্যা শেখ হাসিনার শাসনকালেও একই দুর্নীতি, ব্যাংক লুট এবং ফ্যাসিবাদ দেখেছি। গত ১৭ বছরে ২৮ লাখ কোটি টাকা অফিসিয়ালি এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে ৪০ লাখ কোটি টাকা পাচার করে বাংলাদেশকে দেউলিয়া করার চেষ্টা করেছেন শেখ হাসিনা। আমরা শেখ মুজিবের উত্তরসূরি নই, দুর্নীতির উত্তরসূরিও নই। আমরা শহীদ জিয়ার উত্তরসূরি, খালেদা জিয়ার উত্তরসূরি, আমরা উন্নয়নের উত্তরসূরি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের পথে ফেরাতে হলে প্রয়োজন একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। সেই নির্বাচনের জন্য দেশবাসীর মতো সবাই অপেক্ষা করছে। কিন্তু দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা সেই নির্বাচন ঠেকানোর জন্য কাজ করছে, যাতে বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে না পারে।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি।  

রামগতি পৌর বিএনপির আহ্বায়ক সাহেদ আলী পটুর সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির সহ-শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজান।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান, বাফুফে সহ-সভাপতি ওয়াহেদ উদ্দিন হ্যাপি ও রামগতি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জামাল উদ্দিন প্রমুখ।

এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।