ঢাকা, রবিবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৮ মে ২০২৫, ২০ জিলকদ ১৪৪৬

সারাদেশ

চা শ্রমিকের দাবি আপনাদের অধিকার: সাখাওয়াত হোসেন 

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩:৩১, মে ১৭, ২০২৫
চা শ্রমিকের দাবি আপনাদের অধিকার: সাখাওয়াত হোসেন  কথা বলছেন শ্রম উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন।

মৌলভীবাজার: শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘আপনারা চা-শ্রমিকেরা যা বললেন এগুলো দাবি বলাও ঠিক না, এগুলো আপনাদের অধিকার। আমরা অতি শিগগিরই চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনের ব্যবস্থা করছি।

পাশাপাশি যতগুলো সমস্যা আছে, সেগুলোর জন্য আমরা কাজ করব। শ্রমিকেরা যাতে ভালো থাকেন, সেলক্ষ্যে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। ’

শনিবার (১৭ মে) মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের সভাকক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চা-বাগানের শ্রমিক ও ইউনিয়ন নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এবলেন।

এ সময় চা শ্রমিকদের নেতারাও সভায় বক্তব্য রাখেন এবং তাদের দাবি-দাওয়ার একটি স্মারকলিপি উপদেষ্টার হাতে তুলে দেওয়া হয়।  

এর আগে উপদেষ্টা অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে চারারোপণ, শ্রীমঙ্গলে কলকারখানা ও পরিদর্শন অধিদপ্তরের নতুন ভবন উদ্বোধন করেন তিনি।

সভায় উপস্থিত চা শ্রমিক নেতারা তাদের অধিকারের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বলেন, চা–শ্রমিকদের অনেক কম মজুরিতে কাজ করতে হচ্ছে। এই মজুরি দিয়ে সংসার চালানো কঠিন। স্থায়ী শ্রমিকেরা রেশন পেলেও অস্থায়ী শ্রমিকেরা অনেক সুবিধাই পান না। অস্থায়ী শ্রমিকদের স্থায়ীকরণেও নানা বাধাবিপত্তি আছে। এ দেশে চা-শ্রমিকদের বসবাস প্রায় ২শ বছর ধরে।

তারা আরও বলেন, চা-শ্রমিকেরা একই বসতভিটায় বংশানুক্রমে বসবাস করে এলেও ভূমির অধিকার পাচ্ছেন না। সব চা-বাগানে এখনো সরকারি স্কুল নেই। চা-অধ্যুষিত এলাকায় চা-শ্রমিক সন্তানদের জন্য কর্মসংস্থান ও মেধা বিকাশের লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা বিদ্যালয় স্থাপন অতি আবশ্যক বলে জানান নেতারা।

চা বাগানে কর্মরত নারী চা শ্রমিকদের মানবাধিকারের বিষয়ে নেতারা বলেন, চা-বাগানগুলোর শ্রমিকদের চিকিৎসাব্যবস্থা উন্নত করা, নারীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি বাড়ানো, চট্টগ্রাম ভ্যালিতে শ্রমকল্যাণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নত করা এবং চা-শ্রমিকদের বিলুপ্তপ্রায় সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে ‘চা-জনগোষ্ঠী শিল্পকলা একাডেমি’ স্থাপনের দাবি জানান। শ্রমিকের কথায় ওঠে আসে রাষ্ট্রমালিকানাধীন এনটিসি চা-বাগান সঠিকভাবে মজুরি ও রেশন না দেওয়ার বিষয়টি।

চা বাগান বন্ধের প্রসঙ্গ টেনে তারা বলেন, ফুলতলা টি কোম্পানি লিমিটেডের ফুলতলা চা-বাগান দীর্ঘ নয় মাস ধরে বন্ধ। এসব বাগানের শ্রমিকেরা অনাহারে–অর্ধাহারে জীবন যাপন করছেন। তাদের সন্তানদের লেখাপড়া, চিকিৎসা ও সার্বিক সুবিধা ব্যাহত হচ্ছে। এমন অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে চা-বাগান চালু করার উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান তারা।

হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, চা বাগানের মালিকরা যদি শ্রমিকদের বেতন না দিয়ে বিদেশে পালিয়ে যান, তবে তাদের খুঁজে এনে বেতন আদায় করা হবে।  

সভায় বক্তব্য রাখেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ওমর মোহাম্মদ ইমরুল মহসিন, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন, পুলিশ সুপার এম. কে. এইচ. জাহাঙ্গীর হোসেন এবং শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসলাম উদ্দিন।

বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।