সম্প্রতি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপকালে ভারত সরকার রোহিঙ্গা ইস্যুতে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে এমন ব্যাখ্যা দেয়।
ভারত সরকারে দায়িত্বশীল কর্তাব্যক্তিরা জানান, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের কোনো প্রক্রিয়ায় তারা বাধা সৃষ্টি করছে না, বরং আন্তরিক সহযোগিতা করছে।
দেশটির এক কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারত সরকার বাংলাদেশের পাশে নেই এটা মোটেও সত্য নয়। ভারত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। তবে এ সংকট নিরসনে নিরাপদ, সুরক্ষিত ও টেকসই পদ্ধতি দরকার।
অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (

তিনি বলেন, ভারতের উদ্দেশ্য খুব পরিষ্কার এবং রোহিঙ্গা সংকটের একটি স্থায়ী সমাধান পাওয়ার জন্য সব সময় প্রচেষ্টা চলছে।
রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানের জন্য স্থায়ী ও টেকসই পরিকল্পনা দরকার বলে মনে করেন ড. জয়িতা ভট্টাচার্য।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সংকট ও বাংলাদেশে তার প্রভাবের বিষয়ে ভারত অবস্থান স্পষ্ট করেছে। এ নিয়ে ভারত আগ্রহ দেখিয়ে আসছে। তবুও মাঝে মধ্যে ভুল ধারণা করা হয়।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে এসে হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেছিলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয়ের প্রকৃত প্রতিবেশী হওয়া একমাত্র দেশ হিসেবে ভারত পরস্পরের কাছে গ্রহণযোগ্য। যে কোনো সমস্যা সমাধানে পূর্ণ সমর্থন দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাস্তুচ্যুত মানুষদের রাখাইন রাজ্যে তাদের বাড়িতে ফেরানো এবং সম্মানজনক জীবনের ব্যবস্থা করা উচিত।
রোহিঙ্গাদের ফেরার বিষয়টি এমনভাবে করতে হবে যাতে তা নিরাপদ, সুরক্ষিত ও স্থায়ী হয়। বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে কক্সবাজারের শিবিরগুলোতে পাঁচ কিস্তিতে সাহায্য দিয়েছে ভারত ও তারা আরও দিতে প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি দেশটি রাখাইন রাজ্যে গৃহায়নসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিনিয়োগ করছে বলে জানান হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।
ভারত সরকার বলছে, মানবিক দিক বিবেচনায় বাংলাদেশ প্রায় ১০ লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে। বাংলাদেশের এ ভূমিকা প্রশংসাযোগ্য। হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, এ সমস্যা সমাধানের পথে আসলে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। দুই দেশই একই লক্ষে কাজ করছে। এ সমস্যা সমাধানে প্রয়োগিক ও বাস্তববাদী সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচারে বাস্তুচ্যুত হয়ে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। নতুন ও পুরনো মিলে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে এখন বসবাস করছে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩১ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২০
এএ/টিসি