ঢাকা, শনিবার, ১ ভাদ্র ১৪৩২, ১৬ আগস্ট ২০২৫, ২১ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

সংরক্ষিত নারী আসন বৃদ্ধি ও সরাসরি নির্বাচন দাবিতে মানববন্ধন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:২২, আগস্ট ১৬, ২০২৫
সংরক্ষিত নারী আসন বৃদ্ধি ও সরাসরি নির্বাচন দাবিতে মানববন্ধন

আইন প্রণয়ন ও নীতি নির্ধারণে অর্ধেকের বেশি জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা এবং সংরক্ষিত নারী আসন বৃদ্ধি ও সরাসরি নির্বাচনের দাবিতে মানববন্ধন করেছে নারী সংহতি।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপের প্রেক্ষিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন আগের মতোই দলীয় মনোনয়নের ভিত্তিতে ৫০টি বহাল রাখা এবং দলের প্রার্থী মনোনয়নে মাত্র ৭ শতাংশ নারী প্রার্থীর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে সংগঠনটি।

শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে নারী সংহতির আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নারী সংহতির সভাপ্রধান শ্যামলী শীলের সভাপতিত্বে এবং নারী সংহতির সাধারণ সম্পাদক অপরাজিতা দেবের সঞ্চালনায় সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশের অর্ধেকের বেশি জনগোষ্ঠী নারী হওয়া সত্ত্বেও জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে রাজনীতির সব ক্ষেত্রেই তার প্রতিনিধিত্ব অত্যন্ত নগণ্য।

নারী নেতৃবৃন্দ বলেন, নারীবিহীন ঐকমত্য কমিশনে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের প্রস্তাব সংরক্ষিত আসনে দলীয় মনোনয়ন অগণতান্ত্রিক ও অন্যায্য। যখন দলীয় মনোনয়নের ভিত্তিতে সংরক্ষিত আসনে নারী সাংসদ মনোনীত হন, তখন সবার প্রথমে বঞ্চিত হন দেশের জনগণ। তাই সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচনের প্রশ্নটি কেবলমাত্র নারীর প্রশ্ন নয়; বরং এরও আগে এটা নারী-পুরুষসহ সব নাগরিকের রাজনৈতিক অধিকারের প্রশ্ন। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকেও জনগণের ভোট প্রয়োগের ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে এই প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, রাষ্ট্র গঠনের পর থেকে সাংবিধানিকভাবে আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে স্বীকৃতি না দেওয়ার ফলে এদেশের আদিবাসী জনগোষ্ঠী ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই তাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতে সংসদে আসন সংরক্ষণের দাবি জানানো হয়।

একই সাথে সিলেটে হুমকির মুখে এক ট্রান্স অধিকার অ্যাক্টিভিস্ট শিক্ষার্থীকে মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার ও হত্যার হুমকির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সব পরিচয়ের নাগরিকের স্বীকৃতি দেওয়া ও অধিকার নিশ্চিতের জন্য প্রান্তিক লিঙ্গ পরিচয়ের মানুষের জন্য মানববন্ধন থেকে সংসদে আসন সংরক্ষণের দাবি তোলা হয়।

মানববন্ধনে গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ও গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত তাসলিমা আখতার বলেন, ঐকমত্য কমিশনকে নারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপের মাধ্যমে সরাসরি নির্বাচনে জাতীয় সংসদে অন্তত ১০০ আসন নারীর জন্য সংরক্ষণের প্রস্তাব দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বাড়াতে দলগুলোকে যেমন নারীর অধিকার-মর্যাদা প্রতিষ্ঠাকে গুরুত্ব দিতে হবে। সরাসরি রাজনীতিতে অংশ নিয়ে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে নারীবিদ্বেষ প্রতিহত করতে নারীর লড়াই এদেশের নারীকেই করতে হবে। প্রত্যক্ষ ভোটে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচন এদেশে প্রগতিশীল নারী আন্দোলনের বহুদিনের দাবি।

মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক ও সাংস্কৃতিককর্মী বীথি ঘোষ, নৃবিজ্ঞানী ও গবেষক সায়েমা খাতুন, ইউপিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অ্যাক্টিভিস্ট মাহ্রুখ মহিউদ্দীন, আমজনতার দল-এর সহ-সভাপতি সাধনা মহল, শিল্পী-অধিকারকর্মী ও নারীপক্ষের সদস্য ওয়ারদা আশরাফ, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জুলহাসনাইন বাবু, নাট্যকর্মী ও শিল্পী ঋতু সাত্তার, বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সুস্মিতা রায়, সমগীত সংস্কৃতি প্রাঙ্গনের সভাপ্রধান রেবেকা নীলা, অ্যাক্টিভিস্ট ও উন্নয়নকর্মী মাহমুদা খাঁ, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন টাঙ্গাইল জেলার আহ্বায়ক ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সংগঠক ফাতেমা রহমান বীথি, ‘চব্বিশের উত্তরা’র সংগঠক মণীষা মাফরুহা, সংস্কৃতি ও মানবাধিকারকর্মী মাহফুজা হক নীলা, আইনজীবী বিলকিস নাসিমা রহমান তুহিন, গণিতবিদ নাফিসা রায়হানাসহ নারী সংগঠনের প্রতিনিধি, নারী অধিকার কর্মী, সাংস্কৃতিক কর্মী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ব্যক্তিরা।  

এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।