ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্যমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:৩৩, মে ১৪, ২০১৯
যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্যমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর তৌফিক-ই এলাহীর সঙ্গে বৈঠক করে ইয়ান স্টেফ

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত সহকারী বাণিজ্যমন্ত্রী এবং যুক্তরাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য সার্ভিসের মহাপরিচালক ইয়ান স্টেফ ঢাকা সফর (১১-১৩ মে) করেছেন। ট্রেড উইন্ডস ইন্দো-প্যাসিফিক ফোরাম অ্যান্ড মিশন’-এ অংশগ্রহণ এবং যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যেই তিনি এ সফর করেন।

ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস থেকে মঙ্গলবার (১৪ মে) পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।  

এতে উল্লেখ করা হয়, ‘ট্রেড উইন্ডস’ বিষয়ক আয়োজনটিতে যুক্তরাষ্ট্রের ১২টি কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর ৪০টির বেশি ‘বিজনেস-টু-বিজনেস’ বৈঠক হয়।

সহকারী বাণিজ্যমন্ত্রী ইয়ান স্টেফ বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। মেধাস্বত্ত্ব অধিকারসহ বিনিয়োগ পরিবেশ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি।

সহকারী বাণিজ্যমন্ত্রী স্টেফ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা ক্রমেই সম্প্রসারিত হচ্ছে। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য বেড়ে চলা ও আমাদের বাণিজ্য মিশনে কোম্পানিগুলোর ব্যাপক অংশগ্রহণই এর প্রমাণ। আমি এ ব্যাপারে আস্থাবান যে, বিনিয়োগ পরিবেশ, মেধাস্বত্ত্ব অধিকার ও শ্রমিকদের বিষয়গুলো সমাধানের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক অব্যাহতভাবে জোরদার হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। ’

সহকারী বাণিজ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য দ্বিগুণ হয়ে ৮শ’ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। তিনি অবশিষ্ট বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতাগুলো অপসারণ এবং ব্যবসা প্রক্রিয়া আরও সহজ করার মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্কের সম্ভাবনা পুরোপুরি কাজে লাগাতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। ইয়ান স্টেফ গত সোমবার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই এলাহী চৌধুরীসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা এবং বাণিজ্যসচিব মফিজুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অর্থনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।  

জনসংখ্যার আকারে বাংলাদেশের স্থান বিশ্বে অষ্টম। এ দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও বিশ্বে সর্বোচ্চগুলোর অন্যতম। আর তাই বাংলাদেশের ক্রমশই বেশি করে স্বচ্ছল হয়ে ওঠা কোটি কোটি ভোক্তা যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর জন্য ব্যবসার বিশাল সম্ভাবনা সৃষ্টি করছে।  

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের শীর্ষ বাণিজ্য সহযোগীদের অন্যতম।

ট্রেড উইন্ডস ইন্দো-প্যাসিফিক সাম্প্রতিক ইতিহাসে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তরের পাঠানো প্রথম বড় বাণিজ্য মিশন। বাংলাদেশ যে ন্যায্য ও পারস্পরিক বাণিজ্যের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করতে প্রস্তুত। সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর আস্থা এ মিশনে তাদের বড় সংখ্যায় অংশগ্রহণ থেকেই বোঝা যায়। ৬ মে ভারতের নয়াদিল্লিতে শুরু এবং ১৩ মে ঢাকায় শেষ হয় বাণিজ্য মিশনটি।

এ বছর ট্রেড উইন্ডস মিশন একাদশ বছরে পড়েছে। এটি ৪০টির বেশি দেশে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৪০ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের পণ্য রপ্তানিতে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেছে। ২০১৮ সালে ভারত মহাসাগরীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য ও সেবার রপ্তানি ছিল ৪৭ হাজার ৬শ’ কোটি ডলারের বেশি। ২০১৭ সালে মিশন একশটি কোম্পানিকে দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপে নিয়ে যায় এবং এ অঞ্চলে ৩শ’ কোটি ডলারের বেশি অঙ্কের রপ্তানি করতে সহায়তা করে। ‘ট্রেড উইন্ডস’ এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোকে বিশ্ব জুড়ে ৪ হাজারের বেশি ‘বিজনেস-টু-বিজনেস’ এবং ৬ হাজারের বেশি ‘গভর্নমেন্ট-টু-বিজনেস’ বৈঠক করতে সহায়তা করেছে।  

এটি ছিল সহকারী বাণিজ্যমন্ত্রী ইয়ান স্টেফের প্রথম বাংলাদেশ সফর। বাংলাদেশের জনগণের আন্তরিকতা ও আতিথেয়তা তাকে মুগ্ধ করেছে। বাংলাদেশ মাঝারি আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার ঘটনায় তিনি অভিভূত। রাষ্ট্রদূত মিলারের আয়োজিত একটি ইফতার পার্টিতে যোগ দিয়ে আনন্দিত ইয়ান স্টেফ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৯
টিআর/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।