আগুন এবং ভূমিকম্পের মতো দুর্ঘটনায় উঁচু ভবনে জান-মাল রক্ষাসহ নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতনতা করতেই এ মহড়া চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগীয় উপ-পরিচালক দেবাশীষ বর্ধণ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সহযোগিতায় সোমবার (১৩ মে) বেলা ১১টার দিকে অগ্নি ও ভূমিকম্পের নিরাপত্তার এ মহড়া চালানো হয়।
ছয় নম্বর ভবনে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও এ ভবনে একাধিক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দফতরে মন্ত্রী-সচিবসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিস করেন। অগ্নি ও ভূমিকম্প ঝুঁকি থেকেই এ মহড়া করা হয়েছে।
মহড়ায় ফায়ার সার্ভিসের বহুতল ভবনে আগুন নেভানো এবং উদ্ধার উপযোগী ‘ব্রনটু’ এবং ‘টিটিএল’ গাড়ি, টু-হুইলার ওয়াটার মিক্স, ফোর-হুইলার ওয়াটার মিক্স, পানিবাহী গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, ইমার্জেন্সি টেন্ডার, রেসকিউ টিম, ফাস্ট এইড টিম অংশগ্রহণ করে।
কোন ফ্লোরে আগুন লাগলে ভবনে রক্ষিত ফায়ার এক্সটিংগুশার দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কীভাবে নেভানো যায় এবং ফায়ার সার্ভিস কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে হাতে-কলমে জানতে পেরেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

‘ছোট খাট যে আগুন হয় তাতে ফায়ার এক্সটিংগুশার দ্বারা কীভাবে নির্বাপণ করা যায়- অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী এটার ব্যবহার জানে না। ফায়ার এক্সটিংগুশার তাদের দিয়ে অপারেট করে অগ্নিনির্বাপণ করেছি। ’
তিনি বলেন, প্রতি মাসে এ ধরনের মহড়া হলে প্রত্যেকটা ভবন সুরক্ষিত ও অগ্নি নিরাপত্তা জোরদার করা যাবে। মহড়া প্রতিনিয়ত করা হলে অগ্নি ঝুঁকি কমে যাবে। আর আগুন লাগলেও তারা নিজেরাই নির্বাপণ করতে পারবে। পর্যায়ক্রমে আমরা অন্যান্য ভবনেও করবো।
ছয় নম্বর ঝুঁকিপূর্ণ কিনা- প্রশ্নে ফায়ার কর্মকর্তা বলেন, মহড়া করার তো কিছু উদ্দেশ্য আছে। আমরা এর আগে প্রত্যেক ভবনে সার্ভে করে যে দুর্বলতা আছে, তা চিহ্নিত করে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। এ মহড়ার পরে আবারো চিঠি দিয়ে দুর্বলতাগুলো জানিয়ে দেবো। অবশ্যই দুর্বলতা আছে।
তিনি জানান, ব্রনটু এবং টিটিএল- গাড়ি নিয়ে এসেছি। এ গাড়ি সব গেটে ঢুকে না। এটা একটা বেরিয়ার। ছয় ও সাত নম্বর ভবনের মধ্যে ওয়াকিং ব্রিজ বেরিয়ার। এছাড়া সব গেটে গাড়ি ঢুকে না। পূর্ব দিকে এবং প্রেসক্লাব দিকের গেটে দিয়ে ঢুকে। এ বেরিয়ারগুলো আমরা চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেবো।
ব্রনটু এবং টিটিএল দিয়ে অগ্নিনির্বাপণ এবং উদ্ধার করা যায় জানিয়ে ফায়ার কর্মকর্তা দেবাশীষ বলেন, এর ওয়ার্কিং ক্যাসিটি ৫৪ মিটার অর্থাৎ ২৫ তলা পর্যন্ত পৌঁছেতে পারে।
মহড়ার পরে আগুন লাগলে কী করতে হবে- এ নিয়ে লিফলেটও বিতরণ করেছে ফায়ার সার্ভিস। এছাড়াও যেকোনো দুর্ঘটনায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের নম্বর (০২-৯৫৫৫৫৫৫) ও জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর (৯৯৯) জানিয়ে দেওয়া হয়।
মহড়ার আগের দিন টিটিএক্স (টেবিল টপ এক্সারসাইজ) করা হয়েছিল জানিয়ে ফায়ার কর্মকর্তা বলেন, ভবনের প্রত্যেক ফ্লোরে আলাদা টিম গঠন করা হয়েছিল, সেই টিম আমাদের সহযোগিতা করেছে।
সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী ছাড়াও ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৯
এমআইএইচ/আরবি/