মাদারীপুর: আসছে শীত, আর এ কারণে শীতকালীন শাক-সবজি ফলাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মাদারীপুরের কৃষকরা। তবে বৃষ্টি বাগড়া দিচ্ছে বলে জানান তারা।

আর মাত্র মাস খানেকের মধ্যেই বাজারে উঠতে শুরু করবে শীতকালীন নানান শাক-সবজি। এই শাক-সবজি ফলাতে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে নদ-নদীর চরাঞ্চল এলাকায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

মাদারীপুর জেলার সদর, শিবচর, রাজৈর ও কালকিনির বিভিন্ন স্থানে শীতের সবজির চাষ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদের চরাঞ্চল এলাকায় উৎপাদিত শীতকালীন সবজি চাহিদা মেটায় স্থানীয় বাজারের। সাধারণ ক্রেতারাও নিজ এলাকায় উৎপাদিত এসব শাক-সবজি কিনতে আগ্রহী থাকেন। আর এই চাষাবাদ করে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল রয়েছেন কৃষকরা। চরাঞ্চলের কৃষকদের বড় একটা অংশ সারাবছরই শাক-সবজি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাদারীপুর জেলার পদ্মা-আড়িয়াল খাঁ নদের চরাঞ্চলসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে নানান জাতের সবজি যেমন-বেগুন, মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, পালং শাক, লাল শাক, ডাটা শাক, ধনিয়া পাতা, পুঁই শাক চাষাবাদ করছেন তারা। একই জমিতে একাধিক শাক-সবজির চাষাবাদও করছেন। লাল শাকের জমিতে একইসঙ্গে বেগুনের আবাদ করেছেন অনেকেই। লাল শাক বিক্রি হতে হতে বেগুন গাছেও ফলন আসতে শুরু করেছে। স্থানীয় বাজারে খুচরা ও পাইকারি ক্রেতাদের কাছে এসব শাক-সবজি বিক্রি করেন তারা। মাদারীপুরের হাট-বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে এ অঞ্চলের উৎপাদিত শাক-সবজি বিক্রি হয়ে থাকে।  

চরাঞ্চলের এসব চাষিরা দীর্ঘদিন ধরেই শুধুমাত্র চাষাবাদের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। সারা বছরই মৌসুমি সবজির চাষাবাদ করেন তারা।  

জেলার শিবচর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীর চরাঞ্চলসহ আশপাশের বিস্তীর্ণ জমিতে সবজির আবাদ হয়ে থাকে। প্রতি বছরই এই এলাকার জমিতে উৎপাদিত সবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে অন্য এলাকাতেও রপ্তানি করা হয়। চলতি মৌসুমে এই এলাকায় ১২শ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হচ্ছে। শিবচরে ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, ধনিয়াপাতা, বরবটি, শিম, পালং শাক, নানান জাতের বেগুন, লালশাকসহ শীতকালীন সবজি চাষ ভালো হয়। ইতোমধ্যে চাষাবাদ শুরু হয়েছে।

জানতে চাইলে স্থানীয় কৃষক সূর্য মিয়া খান বলেন, আমরা প্রতি বছরই সবজির চাষ করি। এখন জমিতে বেগুন লাগিয়েছি। এর আগে লাল শাক, পুঁইশাক ছিল। ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলার আবাদ হচ্ছে।

মাওলাদাদ খান নামে আরেক কৃষক বলেন, সারা বছরই শাক-সবজি চাষ করে থাকি। শীতের মৌসুমের জন্য জমিতে ফুলকপি, বেগুনের চাষ করেছি। তবে ঘন ঘন বৃষ্টি হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। ফুলকপির বীজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. রহিমা খাতুন বলেন, মাদারীপুরের কৃষিজমি চাষাবাদের জন্য উর্বর। এখানে সারা বছরই নানা জাতের ফসল ফলানো হয়। তবে শীতের আয়োজন একটু ভিন্ন। কৃষকরা ইতোমধ্যে তাদের জমিতে শীতকালীন শাক-সবজি লাগানো শুরু করেছেন। আমরাও সার্বিকভাবে কৃষকদের পাশে রয়েছি।

আরএ