ঢাকা, শনিবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩২, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৭

সারাদেশ

বৃষ্টিতে বাড়ে চার গ্রামের মানুষের চরম দুর্ভোগ

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮:৪৪, অক্টোবর ১১, ২০২৫
বৃষ্টিতে বাড়ে চার গ্রামের মানুষের চরম দুর্ভোগ

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার একটি সড়ককে ঘিরে মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েছেন কয়েকটি গ্রামের মানুষ। বৃষ্টির মৌসুমে এই সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ায় এলাকাবাসীর দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় নেমে আসে চরম ভোগান্তি।

রাজনগর-ফেঞ্চুগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের চেলারচক থেকে পশ্চিম দিকে চারটি গ্রাম চেলারচক, কশিকোনা, বারহাল ও শিমুলতলা। এসব গ্রামে কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। তাদের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা চেলারচক-বকশিকোনা সড়কটি। সড়কের একপাশে কুশিয়ারা নদী, অপর পাশে চিলওয়া জলমহাল। ফলে বর্ষায় ৬ মাস থাকে পানির নিচে। শুকনো মৌসুমে আবার ধুলোময় ও খানাখন্দে ভরে ওঠে। ফলে সারা বছরই দুর্ভোগ পোহাতে হয় এলাকার সাধারণ মানুষকে।

উত্তরভাগ ইউনিয়নের চেলারচক গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা খালিছ মিয়া বলেন, আমাদের ছয় মাস নাওয়ে (নৌকা) আর ছয় মাস পাওয়ে (পা) চলা লাগে। এই রাস্তার লাগি নেতা অখলর (নেতাদের) গেছে যাইতে যাইতে অবস্থা খারাফ অইগেছে। খয়েকটা (কয়েকটি) গ্রামের মানুষ এই রাস্তা দিয়া আইন যাইন কিন্তু আমরার কষ্ট তারার কেউরির চোখে পড়ে না।

স্কুল-কলেজগামী ছাত্রছাত্রী, রোগী এবং বাজার করতে যাওয়া সাধারণ মানুষ সবাইকে একই কষ্টের মুখোমুখি হতে হয়। বর্ষাকালে রাস্তা ৬ মাস পানির নিচে থাকে, তাই পায়ে হেঁটে বা নৌকায় চলাচল ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। এতে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছেন, অনেকের ক্ষেত্রেই স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কটির উন্নয়নের জন্য তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে গণস্বাক্ষরসহ লিখিত আবেদন দিয়েছেন। এমনকি মানববন্ধনও করা হয়েছে, কিন্তু এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

বকশিপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ মোশাহিদ আলী চৌধুরী বলেন, এই রাস্তা শুধু আমাদের নয়, কান্দিগাঁও, ছিক্কা, কামালপুর, ডেকাপুরসহ আশপাশের গ্রামের মানুষও ব্যবহার করে। বর্ষায় কাদামাটিতে ভরে যায়, কুশিয়ারার পানি বাড়লে ডুবে যায়। ফলে স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েরা বিদ্যালয়ে যেতে না পেরে কষ্টে পড়ে। অনেক সময় নৌকাই একমাত্র ভরসা হয়। এই দুর্ভোগের কারণে অনেক মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে।

উত্তরভাগ ইউপি চেয়ারম্যান দিগেন্দ্র চন্দ্র সরকার বলেন, আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পর এ সড়কে প্রায় ৩ লাখ টাকার মাটির কাজ করিয়েছি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, বোরো মৌসুমে জমিতে ধান রোপণের পর মাটি পাওয়া যায় না, তাই কাজ আটকে যায়। বিকল্প হিসেবে ছিক্কার পাশের বকশিপুর ব্রিজ থেকে টিআর-কাবিখা প্রকল্পে নতুন মাটির কাজের জন্য প্রকল্প দিয়েছি। কাজটি সম্পন্ন হলে কিছুটা সমস্যা লাঘব হবে।

রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরোজা হাবিব শাপলা বলেন, এ সড়কের জন্য আবেদন পাওয়া গেছে। আমরা এটি নিয়ে প্রকল্প হাতে নিচ্ছি। সড়কের কাজের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিবিবি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।