ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ ভাদ্র ১৪৩২, ১৯ আগস্ট ২০২৫, ২৪ সফর ১৪৪৭

সারাদেশ

যাত্রী হয়রানি রোধে ওসমানী বিমানবন্দরে নিয়মিত অভিযান, ৫ জনের কারাদণ্ড

শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:৪৫, আগস্ট ১৯, ২০২৫
যাত্রী হয়রানি রোধে ওসমানী বিমানবন্দরে নিয়মিত অভিযান, ৫ জনের কারাদণ্ড সিলেট এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক লোডাররা

বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের হয়রানি রোধে সিলেট এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বহিরাগত লোডার চক্রের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছেন বিমানবন্দরে দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এ অভিযানে গত দুই সপ্তাহে পাঁচজনকে আটক করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

 

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে কর্মরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. এমদাদুল হক শরীফ।  

নিয়মিত অভিযানের ফলে বিমানবন্দরে এখন আর কোনো লোডার দ্বারা হয়রানির অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের লাগেজ টার্মিনাল ভবন থেকে গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার জন্য দুইটি প্রতিষ্ঠান মিট অ্যান্ড গ্রিট সার্ভিস হিসেবে কাজ করছে। যেকোনো যাত্রীর লাগেজ গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছানো বা গাড়িতে উঠিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হলে নির্দিষ্ট ফি এর বিনিময়ে তারা সার্ভিসটি নিয়ে থাকেন। যেসব যাত্রীর এই সার্ভিসের প্রয়োজন হয় না বরং নিজেই ট্রলিতে লাগেজ নিয়ে টার্মিনাল থেকে গাড়ির উদ্দেশে রওনা হন, তাদের টার্গেট করে পিছু নেয় বিমানবন্দরের লোডার পরিচয়ধারী তিন/চারজনের একটি টিম। গাড়িতে লাগেজ ওঠানোর পরপরই এই তিন/চারজন মিলে অন্যায্য টাকা দাবি করে। দাবিকৃত নগদ টাকা না দিলে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হতে হয় যাত্রীদের। এসব কর্মকাণ্ড ঘটাতে ৪০-৫০ সদস্যের একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।

এ বিষয়ে ওসমানী বিমানবন্দরে দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. এমদাদুল হক শরীফ বাংলানিউজকে বলেন, বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের কাছ থেকে বিমানবন্দরের লোডার পরিচয় দিয়ে টাকা দাবিসহ বিভিন্ন ধরনের হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল। তাই আমরা বিমানবন্দরের ক্যানোপি ও কার পার্কিং এলাকায় নিয়মিত অভিযান শুরু করি। এতে গত দুই সপ্তাহে পাঁচজনকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।  

তিনি বলেন, অভিযানের পর থেকে আমরা লক্ষ্য করছি যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের নিজস্ব লাগেজ বা মালামাল নিয়ে গাড়িতে উঠতে পারছেন। নিয়মিত অভিযানের ফলে বিমানবন্দরে এখন আর কোনো লোডার দ্বারা হয়রানির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। বিমানবন্দরের যাত্রীদের হয়রানি রোধ ও সর্বোচ্চ যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে এমন অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান। ফলে এ ধরনের হয়রানি পুরোপুরি নির্মূল করার প্রত্যাশা করেন তিনি।

এদিকে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ গত ০৩ জুলাই এক গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে। তাতে, বিমানবন্দর এলাকায় কতিপয় অসাধু ব্যক্তি দ্বারা ক্যানোপি ও গাড়ি পার্কিং এলাকায় বিমানবন্দরের লোডার-পোর্টার পরিচয় দিয়ে যাত্রীদের মালামাল পরিবহনের নামে হয়রানির চেষ্টা করা, প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও জোরপূর্বক ব্যাগ ও লাগেজ গাড়িতে উঠিয়ে দেওয়া, বাগবিতণ্ডা সৃষ্টি করে যাত্রীদের কাছ থেকে অন্যায্য অর্থ দাবি করা, ভিক্ষাবৃত্তি-আর্থিক সাহায্যের নামে যাত্রীদের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে টাকা আদায় ও হয়রানি করা, বিমানবন্দরের নির্দিষ্ট এলাকা ছাড়া নো-পার্কিং এলাকায় গাড়ি পার্কিং, আগমনী ও বহির্গমন যাত্রীদের গাড়িতে ওঠানামার ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ের (০৩ মিনিট) অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত ক্যানোপি এলাকায় গাড়ি রাখা, নির্ধারিত গতিসীমার ঊর্ধ্বে মোটরবাইক-গাড়ি চালানো এবং একমুখী চলাচল ব্যাহত করে উল্টোপথে গাড়ি চালানো, গাড়িচালক পরিচয়ে যাত্রীদের হয়রানি ও প্রতারণা করা, বিমানবন্দর এলাকায় অস্থায়ী ভিত্তিতে অবৈধ দোকানপাট বসানোসহ হকার ঘোরাঘুরি না করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।