সাতক্ষীরা: হাজার হাজার গ্রাহকের প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে গা ঢাকা দিয়েছেন সাতক্ষীরার বুশরা ইসলামী মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড এবং এম আর বিজনেস গ্রুপের চেয়ারম্যান ইকবাল কবির পলাশ এবং শেখ শরিফুল ইসলাম।
জানা গেছে, সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধন না নিয়েই ২০০২ সালে জেলার কালিগঞ্জ উপজেলায় বুশরা সমবায় সমিতির কার্যালয় খুলে লাখে প্রতি মাসে সাড়ে ৩ হাজার টাকা মুনাফা দেওয়ার প্রলোভনে গ্রাহক ও আমানত সংগ্রহ করতে থাকে প্রতিষ্ঠানটি।
পরবর্তীতে জেলা জুড়ে শাখা খুলে হাজার হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেছে প্রতিষ্ঠান দুটি।
সমবায় সমিতি আইন ২০২৩ (সংশোধিত) অনুযায়ী, কোনো সমবায় প্রতিষ্ঠান জিপিএস, এফডিআর ও সঞ্চয় হিসাব খুলে গ্রাহকের আমানত সংগ্রহ করতে পারবে না।
অথচ আইনের তোয়াক্কা না করে গ্রামের সহজ সরল দিনমজুর, কৃষক, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীদের কাছ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আমানত গ্রহণ করে তারা।
আমানত গ্রহণের সময় রশিদ ছাড়া গ্রাহককে আর কিছু দেয়নি প্রতিষ্ঠান দুটি।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, নলতার সম্রাট সু’র মালিক রহমত সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা, সোনাটিকারীর স্বপন ৮০ লক্ষ টাকা, জাহাঙ্গীর ৬ লক্ষ টাকা, হাকিম ৫ লক্ষ টাকা, কালীগঞ্জের মুজিব ৫০ লক্ষ টাকা, মিজান ২২ লক্ষ টাকা, আমিন ১৭ লক্ষ টাকা, রশিদ ৪ লক্ষ টাকা, চাঁচাই গ্রামের রাশেদুল ৫০ হাজার টাকা, উভাকুড় গ্রামের উদ্ভব চন্দ্র ৪ লক্ষ টাকা এবং ভাড়াসিমলার শহিদুল ভুইফোড় এই সমবায় সমিতিতে ৮ লক্ষ টাকা সঞ্চয় করেছেন।
জেলার হাজারো গ্রাহকের কাছ থেকে এভাবে সংগৃহীত টাকা দিয়ে সাতক্ষীরা ও খুলনা শহরে জায়গা কিনে ফ্লাট এবং প্লটের ব্যবসা এবং পরবর্তীতে এম আর পরিবহন চালু করে শেয়ার বিক্রির প্রলোভনে ফেলে এম আর বিজনেস গ্রুপ নামে মোড়ে মোড়ে অফিস খুলে লাখে ১৫শ টাকা মুনাফার শর্তে আরো আমানত সংগ্রহ করতে থাকে প্রতিষ্ঠান দুটি। গত কয়েক মাস আগে গ্রাহকদের মূল টাকা এবং লভ্যাংশের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়ে গা ঢাকা দেয় বুশরা এবং এম আর বিজনেস গ্রুপের চেয়ারম্যান ইকবাল কবির পলাশ এবং শেখ শরিফুল ইসলাম।
এতে আমানতের এবং লভ্যাংশের টাকা না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে গ্রাহকরা। এ ব্যাপারে অনেক গ্রাহক সেনা ক্যাম্পে অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে কালিগঞ্জ উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আকরাম হোসেন জানান, প্রতিষ্ঠানটির অডিট সঠিকভাবে হয়েছে। তবে, প্রতিষ্ঠানের সম্পদ, আমানতের পরিমাণ, গ্রাহকের হিসাব এবং পরিধি সম্পর্কে কোনো প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
এমএম