ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ জুলাই ২০২৫, ২৬ মহররম ১৪৪৭

সারাদেশ

লক্ষ্মীপুরে মাদরাসা অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:৫৬, জুলাই ২১, ২০২৫
লক্ষ্মীপুরে মাদরাসা অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি লক্ষ্মীপুরে মাদরাসা অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দাসের হাট হামিদিয়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মুরাদ হাসানের অপসারণের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।  

সোমবার (২১ জুলাই) সকালে দাসের বাজার সড়কে মাদরাসার সামনে দাঁড়িয়ে এক দফা দাবি জানিয়ে মানববন্ধন পালন করেন তারা।

এসময় বাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। এতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় এলাকাবাসী, অভিভাবক, শিক্ষক এবং সাবেক শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন।  

আন্দোলনকারীরা অধ্যক্ষ মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, আর্থিক দুর্নীতি, নিয়োগে অনিয়ম, আগের কমিটির মাধ্যমে নিজের প্রভাব-আধিপত্য বিস্তার, মাদরাসার অব্যবস্থাপনা, নিম্নমূখী শিক্ষার মান ও বিয়ের নামে নারীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ তোলেন।  

এর আগেও একই দাবিতে গত বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।  

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন- জনতা ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদল সভাপতি কামরুল শামিম, চরশাহী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ওমর ফারুক হৃদয় চৌধুরী, সাবেক শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার, সাইফুল ইসলাম, আলিম প্রথম বর্ষের ছাত্র আকরাম হোসেন, ফরহাদ হোসেন ও জান্নাতুল আফরিন।  

এদিকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে গত বৃহস্পতিবার মাদরাসা থেকে সটকে পড়েন অধ্যক্ষ। এরপর থেকে তিনি আর মাদরাসায় আসছেন না। অনুপস্থিত রয়েছেন বলে জানিয়েছে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।  

অন্যদিকে তার অনিয়মের তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।  

শিক্ষার্থীরা এতে উল্লেখ করেন, অধ্যক্ষ অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি নিজে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে ওই পদে নিয়োগ পেয়েছেন। পরে শিক্ষক ও অন্যান্য পদে নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। তার কারণে আমরা শিক্ষার্থীরা হয়রানির শিকার হচ্ছি।  

তারা আরও অভিযোগ করেন, শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক হারুনুর রশিদ প্রায় পাঁচ মাস আগে মারা যান। কিন্তু তার নামে এখনো বেতন বরাদ্দ হচ্ছে।  

মাদরাসার অধ্যক্ষ মুরাদ হাসান বলেন, আমার বিরুদ্ধে একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করছে। আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ সঠিক নয়। আমার কাছে অর্থের হিসাব রয়েছে। মাদরাসায় অনুপস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, আমি মাদরাসার কাজে ডিসি অফিসে আছি। যদিও মাদারাসায় অনুপস্থিতির বিষয়ে মাদরাসায় গিয়ে জানা গেছে, আন্দোলনের পর থেকে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির শঙ্কায় তিনি মাদরাসায় যাচ্ছেন না। এমনটিই জানিয়েছেন মাদরাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মো. ফখর উদ্দিন৷ 

তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে যাতে মাদরাসার পরিবেশ নষ্ট না হয়, সে জন্য আমরা শিক্ষকরা বসে মিটিং করেছি। অধ্যক্ষ কয়েকদিন থেকে আসছেন না। তবে তিনি মাদরাসায় এলে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠবেন। মাদরাসার শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফেরাতে আমরা শিক্ষক, অভিভাবক, স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজন এবং শিক্ষার্থীদের নিয়ে কমিটি গঠন করেছি।  

এ বিষয়ে জানতে মাদরাসার সভাপতি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামশেদ আলম রানার মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য জানা যায়নি।

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।