ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ জুলাই ২০২৫, ২৬ মহররম ১৪৪৭

সারাদেশ

অপহরণের ৩ দিন পর মিলল অর্ধগলিশ লাশ, গ্রেপ্তার ২ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২:০৩, জুলাই ২১, ২০২৫
অপহরণের ৩ দিন পর মিলল অর্ধগলিশ লাশ, গ্রেপ্তার ২  ছৈয়দ নুর

উখিয়ার যুবক ছৈয়দ নুরকে ডেকে নিয়ে অপহরণ করার চারদিনের মাথায় তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় এক রোহিঙ্গা যুবকসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সোমবার (২১ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের দেওয়া তথ্যমতে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আজুখাইয়া ফকির পাড়া সংলগ্ন গহীন পাহাড় থেকে মুখে স্কচটেপ লাগানো, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়।  

নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাশরুরুল হকের নেতৃত্বে থানা পুলিশ ও ঘুমধুম পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র পুলিশের আইসি মো. জাফর ইকবালের যৌথ দল এই উদ্ধার অভিযান চালায়।

নিহত ছৈয়দ নুর উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দরগাহ বিল বাগান পাড়ার বাসিন্দা আলী আহমদের ছেলে। তিনি সীমান্ত এলাকায় টুকিটাকি ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। পূর্ব লেনদেনের টাকা বাবদ সিগারেট দেওয়ার কথা বলে প্রধান অভিযুক্ত আসামি ইসমাঈল মোবাইলে ফোন করে নুরকে ডাকেন। তখন নিজের মোটরসাইকেল চালিয়ে আমতলী ছড়ায় যান ছৈয়দ নুর। ওখান থেকে বাইশফাঁড়ী যাওয়ার কথা বলে সেই দিনই গহীন পাহাড়ে নিয়ে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে, হাত-পা বেঁধে মেরে ফেলে দেওয়া হয়।

ছৈয়দ নুরের স্ত্রী জোবাইদা বেগম (২২), ফারজানা ইয়াসমিন মুন্নি সাড়ে ৫ ও জান্নাতুল ফেরদৌস উর্মি নামের আড়াই বছর বয়সী দুই কন্যা সন্তান রয়েছে।

নিহতের খালাতো ভাই আবদুস সালাম জানান, গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঘুমধুম ইউনিয়নের আজুখাইয়া এলাকার অচিয়র রহমানের ছেলে ইসমাইল ব্যবসায়িক কথা আছে এবং টাকা দেবে বলে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ছৈয়দ নুরকে ডেকে নিয়ে যান।

এ ঘটনা নাইক্ষ্যংছড়ি ও ঘুমধুম পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে জানালে আসামি ইসমাইলকে গ্রেপ্তার করে ঘুমধুম পুলিশ। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ইসমাইলের দেওয়া তথ্যমতে আরও এক রোহিঙ্গা যুবককে আটক করে পুলিশ। দুইজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপহরণের চারদিনের মাথায় ছৈয়দ নুরের লাশ উদ্ধার করা হয়।  

নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাশরুরুল হক জানান, গত ১৯ জুলাই অপহরণের অভিযোগে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় অপহৃত ছৈয়দ নুরের স্ত্রী জোবাইদা বেগম বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের দেওয়া তথ্যে ঘুমধুমের পাহাড় থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।  

অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা হলেন- প্রধান অভিযুক্ত নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আজুখাইয়া গ্রামের বাসিন্দা অচিয়র রহমানের ছেলে ইসমাইল (৩০) ও উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১'র সি ব্লকের আশ্রিত রোহিঙ্গা আলী উল্লাহ ও শামসুন্নাহার দম্পতির ছেলে  রহমত উল্লাহ (৩০)। তার ব্লক মাঝি মো. আয়াস। তদন্ত চলছে বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার ও নিহতের মোটরসাইকেল উদ্ধারে পুলিশি অভিযান চলমান রয়েছে।

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।