ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২, ১০ জুলাই ২০২৫, ১৪ মহররম ১৪৪৭

সারাদেশ

বৈরী আবহাওয়ায় সাগর উত্তাল, জেলেদের মাথায় হাত

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:০০, জুলাই ৯, ২০২৫
বৈরী আবহাওয়ায় সাগর উত্তাল, জেলেদের মাথায় হাত উপকূলীয় এলাকার চার শতাধিক ট্রলার মাছ ধরতে সাগরে যেতে পারেনি

পাথরঘাটা (বরগুনা): গভীর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে উপকূলীয় এলাকার চার শতাধিক ট্রলার মাছ শিকারের জন্য গভীর সমুদ্রে যেতে পারেনি।  

বৈরী আবহাওয়ার কারণে মাছ ধরায় ব্যাঘাত ঘটায় কয়েক হাজার জেলে এখন বেকার সময় কাটাচ্ছেন।

ক্ষতির মুখে পড়েছেন ট্রলার মালিক ও মাছ ব্যবসায়ীরাও। স্থানীয় বাজারে দেখা দিয়েছে ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের সংকট।

মৎস্যসম্পদ রক্ষায় সরকার গত ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। সেই নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা আশা করেছিলেন সাগরে গিয়ে ট্রলারভর্তি ইলিশসহ নানা প্রজাতির মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরবেন। ট্রলার মালিক ও ব্যবসায়ীরাও প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। কিন্তু বৈরী আবহাওয়া সেসব প্রস্তুতিকে হতাশায় পরিণত করেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছিল, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তার কারণে ৮ জুলাই সকাল ১০টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু এলাকায় ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারী (১৮৮ মিলিমিটার) বৃষ্টিপাত হতে পারে।  

চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস এবং বিভিন্ন মহানগরে জলাবদ্ধতার আশঙ্কার কথা জানানো হয় বার্তায়। পাশাপাশি, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর ও গভীর সমুদ্রে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার নির্দেশ দেয় আবহাওয়া অধিদপ্তর।

স্থানীয় জেলে ছগির হোসেন, মনির মিয়া, আনিচুর রহমান ও এমাদুল হোসেন জানান, ইলিশের মৌসুমে সরকার অবরোধ দেয়, আর অবরোধ শেষ হতেই শুরু হয় সাগরে নিম্নচাপ। গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বৈরী আবহাওয়ার কারণে তারা সমুদ্রে যেতে পারছেন না। ঝুঁকি নিয়ে যারা গিয়েছিলেন, তারাও খালি হাতে ফিরে এসেছেন। তেল, বরফ ও বাজার খরচ সবই লোকসানে গেছে। প্রতিবছর এমন হলে মাছে-ভাতে বাঙালি পরিচয়টাই হারিয়ে যাবে।

ট্রলার মালিক আবুল হোসেন ফরাজী বলেন, গত এক মাসে আমার তিনটি ট্রলারে ১৪ লাখ টাকার বাজারসামগ্রী নিয়ে সমুদ্রে পাঠিয়েছি। কিন্তু মাছ বিক্রি করতে পেরেছি মাত্র চার লাখ টাকার। প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে আমাদের এই পেশা ছাড়তে হবে।

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে উপকূলের চার শতাধিক ট্রলার ঘাটে নোঙর করে অলস সময় কাটাচ্ছে। একদিকে সরকারি নিষেধাজ্ঞা, অন্যদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ—সব মিলিয়ে জেলেরা চরম দুরবস্থায় পড়েছেন। গভীর সমুদ্রে ইলিশও কমে যাচ্ছে। প্রতি ট্রিপে ট্রলার মালিকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। মাছনির্ভর এই অঞ্চলের মানুষের জীবিকা বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সরকারের উচিত জেলেদের জন্য বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করা।

আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।