ঢাকা, সোমবার, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

মিরপুরে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীর জন্য ১০৫৩ ফ্ল্যাট

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২:৪৬, এপ্রিল ১৮, ২০১৮
মিরপুরে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীর জন্য ১০৫৩ ফ্ল্যাট মিরপুরে বস্তির আগুনের ফাইল ছবি

ঢাকা: সম্প্রতি রাজধানীর মিরপুর পল্লবীতে ইলিয়াস আলী মোল্লা বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে পুড়ে যায় সহস্রাধিক বসতবাড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত এসব বস্তিবাসীর জন ১ হাজার ৫৩টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে সরকার।

প্রতিটি ফ্ল্যাট হবে ৬৫৭ বর্গফুটের। দুই রুমের ফ্ল্যাটে থাকবে একটি কমন বাথরুম, একটি রান্নাঘর ও একটি বারান্দাসহ উন্নত জীবনধারণের সব সুবিধা।

মিরপুর হাউজিং এস্টেট এলাকায় ৩ দশমিক ৩০ একর জমিতে ফ্ল্যাটগুলো নির্মাণ করা হবে।

ফ্ল্যাটগুলো হয়তো সবাই পেতে চাইবে। সেজন্য সিটি কর্পোরেশনের নেতৃত্বে স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনারের সহায়তায় প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীদের নির্বাচন করা হবে। সংশ্লিষ্টদের নিয়ে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত নির্বাচন করবে সরকার। বস্তিবাসীরা বস্তিতে ভাড়া দিয়ে বসবাস করেন। এসব ভাড়ার তথ্য সার্ভে করে সাধারণ একটি ভাড়া নির্ধারণ করা হবে। মাঠ পর্যায়ে কয়েক দফা সার্ভে হবে।

প্রকৃত বস্তিবাসী নির্বাচনে সরকারের পাশাপাশি সার্ভে কাজে স্থানীয় জনগণ ও জনপ্রতিনিধিদের মতামত নেওয়া হবে।

ঢাকার মিরপুরে ছিন্নমূল বস্তিবাসীর জন্য ভাড়াভিত্তিক ১০৫৩টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ২০৫ কোটি ১০ লাখ টাকা। চলতি সময় থেকে জুন ২০২০ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

বর্তমানে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে। প্রকল্পের ওপর কয়েক দফা প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ে প্রকল্পটি একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে। বস্তিবাসীদের জন্য ভাড়ার বিষয়টি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্ধারণ করবে বলে জানা গেছে।

প্রকল্প প্রসঙ্গে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-প্রধান (পরিকল্পনা কোষ) সাজ্জাদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, প্রকৃত বস্তিবাসীর জন্য আমরা প্রকল্প গ্রহণ করতে যাচ্ছি। পরিকল্পনা কমিশনে পিইসি সভা হয়েছে। দ্রুত সময়ে একনেক সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হবে। সিটি কর্পোরেশন ও স্থানীয় কমিশনারদের নিয়ে সার্ভে করে প্রকৃতি ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসী নির্বাচন করা হবে।

ফ্ল্যাটের ভাড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বস্তিবাসীরা ভাড়া দিয়েই বস্তিতে বসবাস করেন। সার্ভে করে ভাড়ার বিষয় নির্ধারণ করা হবে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে একনেক। এখনই ভাড়ার বিষয়ে কিছু বলা যাবে না।

প্রকল্পের আওতায় ভূমি উন্নয়ন, রাস্তা নির্মাণ, ড্রেন, কালভার্ট, প্রধান গেট নির্মাণ, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, গ্যাস সংযোগ, বৃক্ষরোপণ ও সাপ্লাই অ্যান্ড সার্ভিসেস সকল সুযোগ সুবিধা থাকবে। নিজস্ব একটা গভীর নলকূপ থাকবে। এছাড়া এখানে থাকবে পার্টি সেন্টার।

নানা কারণে ফ্ল্যাটগুলো নির্মিত হচ্ছে। ঢাকা শহরে বসবাসরত বস্তিবাসীর তীব্র আবাসন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে স্বল্প জায়গায় সর্বাধিক আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। রাজধানীতে অপরিকল্পিতভাবে স্বল্প পরিসরে অস্বাস্থ্যকর মানবেতরভাবে বসবাসরত বস্তিবাসীর আধুনিক সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে। বস্তিবাসীদের যুক্তিসঙ্গত ও সহনীয় ভাড়ায় এখানে বসবাসের সুযোগ সুবিধা গড়ে তোলা হবে। আবাসিক সুবিধার পাশাপাশি অস্থায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এখানে।

স্বল্প জমি ব্যবহারের মাধ্যমে ফ্ল্যাট বিল্ডিং নির্মাণ করে ছিন্নমূল বস্তিবাসীদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণ করে ঢাকা মহানগরীর পরিবেশ উন্নত করাই প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য। নগরীর পরিধি যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই হারে আবাসন বৃদ্ধি পাচ্ছে না। এছাড়া লোক সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় আবাদি জমি নষ্ট হচ্ছে। তাই স্বল্প জমি ব্যবহার করে অধিক মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হবে। প্রকল্পে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে মিরপুরে আগুনে পুড়ে ঘরবাড়ি হারানো বস্তিবাসীদের।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৮
এমআইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।