ঢাকা: আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের মূলহোতা আমিনুল ইসলামসহ তার চার সহযোগীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাদের কাছ থেকে দেড় কোটি টাকারও বেশি নগদ অর্থ, জালিয়াতিতে ব্যবহৃত পাসপোর্ট ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস জব্দ করা হয়েছে।
জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের তথ্যের ভিত্তিতে গত রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার ১১ নম্বর সেক্টরে আমিনুল ইসলামের বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও র্যাব।
গ্রেফতাররা হলেন আমিনুল ইসলাম (৪৬), আব্দুল হাকিম (৫৬), মো. নূর ইসলাম (৩১), আসাদুজ্জামান (৩৫) ও মো. শাহরিয়ার শেখ মুরাদ (৪২)।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) র্যাব-২-এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার খান আসিফ তপু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
র্যাব-২ জানায়, পাঁচজনকে ধরার সময় তাদের কাছে নয়টি পাসপোর্ট, ১০টি স্মার্টফোন, একটি বাটন ফোন ও মানবপাচারের মাধ্যমে অর্জিত নগদ এক কোটি ৫৬ লাখ ২৬ হাজার টাকা পাওয়া যায়।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তাররা দীর্ঘদিন ধরে ভিসা ও পাসপোর্ট জালিয়াতির মাধ্যমে দেশের তরুণদের মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও ইউরোপে পাঠানোর প্রলোভনে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। ইউরোপে পাঠানোর জন্য জনপ্রতি ২০-২৫ লাখ টাকা নিতেন। এক্ষেত্রে ভিকটিমদের প্রথমে মিসর, তারপর লিবিয়া হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ নৌরুটে ইউরোপে পাঠানো হতো।
এই চক্রের বাংলাদেশ অংশের দায়িত্বে ছিলেন আমিনুল। আর লিবিয়া অংশের তত্ত্বাবধানে ছিলেন তার সহযোগী আবদুল্লাহ।
হাজারীবাগ থানায় এ সংক্রান্ত একটি মামলার এজাহার অনুযায়ী, এই চক্রের অন্যতম ভিকটিম জাহিদ হোসেন (৪২)। তাকে ইতালিতে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমিনুল ইসলাম কিস্তিতে ২০ লাখ টাকা আদায় করেন। এরপর গত ১৩ জুলাই তাকে মদিনা হয়ে মিসরে পাঠানো হয়। সেখানে পৌঁছানোর পর জাহিদকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি করে।
এ ঘটনায় জাহিদের ভাই বাদী হয়ে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে হাজারীবাগ থানায় মামলা (গত ৭ সেপ্টরম্ব) দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর বিষয়টি নজরদারিতে রাখে এনএসআই। এরপর তাদের তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-২ এবং হাজারীবাগ থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে আসামিদের ধরা হয়।
গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে চক্রের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
এজেডএস/এইচএ/