ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

মামলায়ও দমছে না বেপরোয়া গণপরিবহন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩:৪১, এপ্রিল ৯, ২০১৮
মামলায়ও দমছে না বেপরোয়া গণপরিবহন সামনে ফাঁকা থাকলেও আড়াআড়ি দাঁড়িয়ে পেছনে যানজট তৈরি করছে গণপরিবহনগুলো। ছবি- শাকিল আহমেদ

ঢাকা: ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ গত সপ্তাহে দৈনিক ৪শ’ থেকে সাড়ে ৪শ’ গণপরিবহনকে বিভিন্ন অপরাধে আইনের আওতায় আনে। প্রতিমাসে বাস চালক ও শ্রমিকদের নিয়ে সচেতনতামূলক ওয়ার্কশপের আয়োজন করে। তারপরও বেপরোয়া চালকদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না পুলিশ। 

ডিএমপির ট্রাফিক উত্তরের যুগ্ম-কমিশনার মোসলেহ উদ্দিন আহমদ রোববার (০৮ এপ্রিল) বাংলানিউজকে বলেন, বাস চালকদের সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। গত ৩ দিনে প্রায় ১৪শ’ গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।

গণমাধ্যম এ ব্যাপারে আরো সচেতনতামূলক প্রচারণা চালালে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
 
রোববার রামপুরা ব্রিজ থেকে কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, এই সড়কটিতে ভোগান্তির সবচেয়ে বড় কারণ গণপরিবহনের স্বেচ্ছাচারিতা, যেখানে সেখানে বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করা, একই রুটের একই পরিবহনের একাধিক বাসে যাত্রী ওঠানো নিয়ে প্রতিযোগিতা।
 
রামপুরা থেকে কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত সড়কে অন্তত ১০টি স্টপেজে যাত্রী ওঠা-নামা করা হয়। এগুলো হলো- মেরুল, দক্ষিণ বাড্ডা, মধ্যবাড্ডা, বাড্ডা লিংক রোডের মাথায়, উত্তর বাড্ডা, শাহজাদপুর, বাঁশপট্টি, নতুনবাজার, নর্দা-কালাচাঁদপুর, কুড়িল বিশ্বরোড। এসব স্টপেজ ছাড়াও গণপরিবহনগুলো যেখানেই যাত্রী হাত উঁচিয়ে গাড়ি থামাতে বলেন, সেখানেই থামিয়ে দেয়। রাস্তার পাশে না থামিয়ে মাঝখানে থামিয়েই যাত্রী উঠায় ও নামায়। এতে পেছন থেকে আসা গাড়িগুলো সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে যেতে বাধ্য হয়।
 
এসময় অন্য গণপরিবহন ওই গাড়িকে ওভারটেক করার জন্য আড়াআড়িভাবে অবস্থান নেয়। কিন্তু সামনের গাড়িটি তখন পেছনের গাড়িটিকে আটকাতে একটু চাপিয়ে দেয়। তখন দু’টো গাড়িই রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে যায়। এভাবে মিনিট দুই গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক বন্ধ থাকলে পেছনে কয়েকশ’ গাড়ি আটকা পড়ে। যা রূপ নেয় যানজটে।

এ বিষয়ে যুগ্ম-কমিশনার মোসলেহ উদ্দিন আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, রাস্তার সব জায়গায় সার্জেন্ট কিংবা কনস্টেবল থাকেন না। তারা বিভিন্ন ইন্টারসেকশনে (রাস্তার মোড়ে) দায়িত্ব পালন করেন। ওইসব ইন্টারসেকশনে এমন ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ব্যবস্থা নেন। এর বাইরে অন্যস্থানে পেট্রোল সার্জেন্টের চোখে পড়লেও তিনি ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন।
রাস্তার মাঝখানেই যাত্রী তুলছে
সুভাস্তু নজরভ্যালির সামনে কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা জহিরুল আমিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, এই রাস্তাটি দীর্ঘদিন ভাঙাচোরা ছিলো। তখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট লেগে থাকতো। এখন রাস্তা মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু যানজট কমছে না। কারণ গণপরিবহনের চালক-শ্রমিকদের স্বেচ্ছাচারিতা। যেখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠা-নামা, রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা, দুই গাড়িতে যাত্রী ওঠানোর প্রতিযোগিতা এসব নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা।
 
মধ্যবাড্ডা ও উত্তরবাড্ডা ফুট ওভারব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে দেখা যায়, গ্রেট তুরাগ পরিবহনের প্রতিটি গাড়ি রাস্তার মাঝখানের লাইনে দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠায় ও নামায়। এ সময় পেছনে গাড়ির দীর্ঘ লাইন থাকলেও চালক-কিংবা হেলপার সেদিকে নজর দেয় না। এমনকি পেছনের গাড়ির হর্নেও কোনো কর্ণপাত নেই।
 
কুড়িল থেকে রামপুরামুখী গাড়িগুলো উত্তরবাড্ডা বরিশাল স’মিলের সামনে এসেই রাস্তার মাঝের লেনে দাঁড়িয়ে যায়। অপরদিকে রামপুরা থেকে কুড়িলমুখী গাড়িগুলো বিক্রমপুর মিষ্টান্ন ভান্ডারের সামনে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করে। কোনো গাড়ি এক মিনিট আবার কোনো কোনোটি ২ মিনিটও মাছ সড়কে দাঁড়িয়ে থাকে।  
 
উত্তর বাড্ডায় হাসপাতালের সামনের ইউটার্নে সারাক্ষণ যানজট লেগেই থাকে। নতুন বাজারের দিক থেকে আসা জাবালে নূর পরিবহনের গাড়িগুলো ইউটার্ন নিয়ে আবার নতুন বাজারের দিকে যায়। এসময় রাস্তার দুই দিকেই দীর্ঘ জট তৈরি হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৮
এমএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।