ঢাকা: মো. জালাল উদ্দিন, গ্রামের বাড়ি জামালপুর সদরে। বর্তমানে তিনি ঢাকার কাটাবন এলাকায় বসবাস করেন।
পরিবারের সম্মতিতে পাত্রী খুঁজছিলেন পত্রিকার পাতায়।
হঠাৎ করেই চোখ আটকে যায় সোমবার (২৫ আগস্ট ২০২৫) তারিখের একটি জাতীয় পত্রিকার ‘বয়স্ক পাত্র চাই’ বিজ্ঞাপনে। পত্রিকায় দেওয়া নম্বরে (০১৮৭২০৯০২৬৫) দেন ফোন কল। ফোন ধরলেন এক নারী। বললেন, পাত্রী নিজেই। পাত্রীর মিষ্টি কথার ফাঁদে পড়ে গেলেন পাত্র জালাল উদ্দিন।
পাত্রীর সঙ্গে কথা হলো পরের দিন মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) গাজীপুর ২৭ এলাকায় দেখা হবে। ভালো লাগলে সেদিনই বিয়ে করে ঢাকায় ফিরবেন।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে ১২টায় সেজেগুজে কাবিনের টাকা নিয়ে বাসে রওনা হন গাজীপুরের উদ্দেশ্যে। বেলা ১টায় উত্তরা যাওয়ার আগেই (০১৭১৯৫৮৮৪৮৩) নম্বর থেকে জানানো হয় গাজীপুর না, উনাকে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় নামতে হবে। সেখানে সবুজ নামে এক লোক তাকে রিসিভ করে বিকল্প রাস্তা দিয়ে দ্রুত গাজীপুর ২৭ নিয়ে যাবেন।
দুপুর দেড়টার দিকে বাজারের প্রধান সড়ক থেকে সবুজ নামে এক ব্যক্তি তাকে নিয়ে যান টঙ্গী বাজারের পূর্ব পাশের একটি টিনশেড রুমে। ঘরে ঢুকে দেখেন আরও দুজন বয়স্ক ব্যক্তি বসে আছেন। হঠাৎ দরজা আটকে দিয়ে তারা তাকে বেধড়ক মারধর শুরু করেন। সুঁই দিয়ে খোঁচানো হয় বিভিন্ন অঙ্গ। এসময় তার কাছে থাকা ১০ হাজার ৪৫০ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এরপর তার মোবাইল ফোন দিয়ে ছেলেকে ফোন করে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। দরকষাকষির পর তিন হাজার টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠাতে বাধ্য হন জালালের ছেলে।
এসব তথ্য জানিয়ে বুধবার (২৭ আগস্ট) ভুক্তভোগী জালাল উদ্দিন বাংলানিউজকে আরও বলেন, সবুজ নামে ওই প্রতারকসহ তিনজন আমাকে দুপুর দেড়টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নির্যাতন করে। আমাকে খাওয়া-দাওয়া বা বাথরুম ব্যবহারেরও সুযোগ দেওয়া হয়নি। পরে মুক্তিপণ নিয়ে টঙ্গী বাজারের প্রধান সড়কে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় তারা। পরে আমি টঙ্গী থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করতে চাইলে এসআই অভিযোগ নিতে অস্বীকৃতি জানান।
মো. জালাল উদ্দিন বলেন, এ ধরনের প্রতারণা আমার জীবনে প্রথম ঘটেছে। আমি আর বিয়ে করব না। আর এ ধরনের প্রতারণার ফাঁদে পা দেব না। বিয়ে করার ইচ্ছাই আমার কাল হয়ে দাঁড়ালো।
টঙ্গী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বায়জিদ নেওয়াজ বাংলানিউজকে জানান, ঘটনার দিন ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা “ট্রিপল নাইনে” ফোন করে পুলিশকে বিষয়টি জানান। পরে পুলিশ ভুক্তভোগী জালালের লোকেশন ট্র্যাক করে দেখতে পান, তিনি উত্তরায় অবস্থান করছেন। আমি ভুক্তভোগী জালালকে ফোন করলে, তিনি বলেন, টঙ্গী বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে, আমি অসুস্থ বাসায় চলে যাচ্ছি। আমি জালালকে জানিয়েছি, থানায় এসে অভিযোগ করলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
ডিএইচবি/এসআই