ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

বেপরোয়া বাস, বেসামাল চালক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩:৩৫, এপ্রিল ৯, ২০১৮
বেপরোয়া বাস, বেসামাল চালক বাস চালকদের বেপরোয়া মনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যক্তিগত গাড়ি

ঢাকা: অফিস আওয়ারে ব্যস্ত ফার্মগেট এলাকা। কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ সড়কটিতে ছুটে চলছে যানবাহন। মিরপুর থেকে ছেড়ে আসা সদরঘাটগামী বিহঙ্গ পরিবহনের একটি বাস ‘বাস-বে’তে না ঢুকে মাঝ সড়কেই যাত্রী তোলার চেষ্টা করছে। আরেকটি বাসের সামনে যেতে সামনের প্রাইভেটকারটিকে এক পর্যায়ে ঘষা দিলো বিহঙ্গ। প্রাইভেটকারের পেছনে ডান পাশে খানিকটা দেবে গেলো। বাসটির অর্ধেক উঠে গেলো ফুটপাতে।

এবার সামনে দাঁড়িয়ে গেলো প্রাইভেটকার। বাস থামার আগেই সুপারভাইজার ভোঁ-দৌড়।

প্রাইভেটকারের চালক নেমে এসে বাসের চাবি নিলেন হাতের মুঠোয়। সাপ্তাহিক ছুটি শেষে রোববার (০৮ এপ্রিল) প্রথম কর্মদিবসে সকাল পৌনে ১০টার দিকে ফার্মগেটে এই ঘটনার পর তৈরি হলো যানজট।
 
বিহঙ্গ পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব ১১-৮৬১৩) বাস চালককে প্রাইভেটকারের (ঢাকা মেট্রো গ ১৯-৬০৩৫) চালক বকাঝকা শুরু করলেন। জরিমানা দিয়েই বাস ছাড়তে হবে। সাফ জানিয়ে দিলেন বেসরকারি কোম্পানির প্রাইভেটকার বহনকারী ও ব্যক্তি। অনুনয়-বিনয় করেও মন গলাতে পারলেন না বাস চালক।
 
সেখানে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা আ. গফুর এবং কনস্টেবল হারুন এসে দ্রুত নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে নিতে বললেন। নইলে থানায় যেতে হবে দুই পক্ষকেই। সময় গড়াতে গড়াতে বাসের যাত্রীরাও নেমে আসলেন। টাকা ফেরত পেতে চাপ বাস চালকের ওপর। এক পর্যায়ে একজন যাত্রী কলার চেপে ধরলেন চালক কাওসারের।  
 
প্রাইভেটকারের ওই চালক ধমকাতে থাকলেন বাস চালককে। ‘তোমরা বেয়াদব, রাস্তায় তোমাদের জন্য চলা যায় না। তোমার বাসের বডি দেখ, ঘষা দিতে দিতে খাল-বাকল তুলে ফেলেছ’।
 
বাস্তবে দেখা যায় বাসটির দুই পাশের বডির রঙ উঠে কোনো কোনো স্থানে বাকল ধরে উঠে গেছে বডির অংশ। ততক্ষণে ট্রাফিক পুলিশ ফুটপাতে থাকা বাসটি এগিয়ে নিয়ে রাস্তা ক্লিয়ার করে দিলেন।
ক্ষতিপূরণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হলেও বাসচালকরা শোধরায় না
সকাল সাড়ে নয়টা থেকে প্রায় ৪০ মিনিট ফার্মগেটে দাঁড়িয়ে থেকে বাসচালকদের এমন অসাধু প্রতিযোগিতা দেখা গেলো প্রতিদিনের মতো। একটি বাস আসছে তো আরেকটি ওভারটেকিং করে যাত্রী তুলছে। ট্রাফিক টুলিশ সদস্যরা তৎপর থাকলেও বাস চালকরা মানতে চাইছে না নিয়ম।
 
ট্রাফিক পুলিশ সদস্য হারুন বলেন, সুযোগ পেলেই চালকরা রাস্তায় বাস দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলে। আবার বাস না থামিয়ে যাত্রী নামায়। বাধ্য হয়ে মামলা দিতে হয় চালকদের বিরুদ্ধে। আবার যাত্রীদের মধ্যেও অসচেতনতা দেখা যায়। অনেকেই রাস্তার মধ্যে দাঁড়িয়ে বাসে উঠতে চায়। বাস চালক এবং যাত্রীদের সচেতনতাই দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।  
 
বিহঙ্গ পরিবহনের একজন নারী যাত্রী বলেন, আমি সামনে বসেছিলাম। মিরপুর থেকেই উল্টাপাল্টাভাবে চালাচ্ছে বাসটির চালব। সব সময়ই ভয়েছিলাম। এখানে এসে দুর্ঘটনা ঘটালো।
 
মধ্য বয়সী ওই বাসচালকের দাবি, ঠিকভাবেই চালাচ্ছি। যাত্রীরা অল্পতেই ভয় পায়। আর রাস্তায় চলতে একটু-আধটু সমস্যা হতেই পারে।

বাসচালক কাওসার মোবাইল ফোনে সুপারভাইজারকে ডাকছিলেন বারবার। কিন্তু আধাঘণ্টার মধ্যেও আসেনি সুপারভাইজার রহমান। পরে নিজেদের মধ্যে রফা করে ছাড়া পায় বাসটি।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৮
এমআইএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।