রোববার (৮ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করে তাকে কারাগারে রাখার জন্য আবেদন করে দুদক। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম মঈন উদ্দিন সিদ্দিকী তাকে কারাগারে রাখার আদেশ দেন।
এর আগে রোববার দুপুরে সরকারি জমি দখল ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় করা একটি মামলায় রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা কুতুবউদ্দিনকে গ্রেফতার করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মীর্জা জাহিদুল ইসলাম।
দুদক সূত্র জানায়, রাজধানীর গুলশানে ১০ কাঠা জমি ভুয়া আম মোক্তারনামা দেখিয়ে নিজের শ্বশুরের নামে হস্তান্তর করেন তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের ছয়গাঁও গ্রামের এক সাধারণ পরিবারের সন্তান কুতুব উদ্দীন। তিনি ক্ষমতাসীনদের যোগসাজশে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ টাকার সম্পত্তির মালিক বনে গেছেন।
দুদক সূত্র আরো জানায়, চাকরিতে আগে প্রবেশ করলেও কুতুবউদ্দিনের ভাগ্য পাল্টাতে থাকে মূলত ২০০১ সালে চার দলীয় জোট ক্ষমতায় আসার পর থেকে। ওই সময় ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রটোকল কর্মকর্তা কুতুবউদ্দিন জোট সরকারের ভূমি প্রতিমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর সঙ্গে যোগসাজশে চেইনম্যানের ৩৩৬টি পদে নিয়োগের সময় প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ঘুষ আদায় করেন। এ সময় প্রত্যেক প্রার্থীর কাছ থেকে নেওয়া হয় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা করে।
এরপর থেকে কুতুবউদ্দিন অন্যদের কাছে ‘ভূমি কুতুব’ হিসেবেই পরিচিত হতে থাকেন। অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকার সরকারি খাস জমি তিনি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দিয়েছেন।
এসব অভিযোগে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেও তাকে গ্রেফতার করে দুদক। কিন্তু মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক নেতাদের ধরে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন এবং চাকরিতে যোগ দেন।
তার বিরুদ্ধে ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি জমিকে খাস দেখিয়ে তা বন্দোবস্ত নেওয়া বাবদ সচিবালয়, ভূমি মন্ত্রণালয় ও ঢাকার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে কমপক্ষে এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেন হওয়ার সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর বাইরেও ঘুষ লেনদেন হওয়ার অভিযোগ আছে।
দুদক সূত্র বলছে, কুতুবের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। দুদকে তার মামলা রয়েছে একাধিক। যার প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পেয়েছে দুদক।
** দুদকের হাতে গ্রেফতার ‘ভূমি কুতুব’
বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০১৮
এমআই/ওএইচ/