এই প্রথমবারের মতো অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। এএফসি বাছাইপর্বে বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর মুখোমুখি হবে আগামী ১০ জুন।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত শনিবার দুপুর ১২টা থেকে এই ওয়েবসাইটে টিকিট ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু পরে সময় পিছিয়ে নেওয়া হয় রাত ৮টা পর্যন্ত। তখন অনেকেই ওয়েবসাইটে ঢুকতে পারেননি। কেউ কেউ প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়ার পর শেষ ধাপে গিয়ে টিকিট পাননি। এমন নানা বিড়ম্বনার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরেন অনেকে। তিন ঘণ্টা টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শেষে সাইবার অ্যাটাকের কারণে টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পর আজ রাত দশটার দিকে আবারও টিকিট বিক্রি শুরু করে টিকিফাই। আজ সকালেই বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল বলেছিলেন, রাত ১০টার দিকে টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শুরু করা হবে। সেই অনুযায়ী রাত ১০টা থেকে টিকিট কাটতে গিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বিড়ম্বনা। টিকিটিং পার্টনার টিকিফাইয়ের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচ অপশন ক্লিক করার পর ডিসপ্লেতে বড় করে ভেসে আসছে, "You are in line. ধৈর্য ধারণের জন্য ধন্যবাদ। " এই প্রতিবেদক নিজেই টিকিট কাটার জন্য এক ঘণ্টার বেশি সময় ‘ভার্চুয়াল লাইনে’ অপেক্ষমাণ ছিলেন, তবে কোনো সুরাহা মেলেনি।
বাংলাদেশ ফুটবলের সমর্থক গোষ্ঠী ‘সেভ বাংলাদেশ ফুটবল’-এর অ্যাডমিন দ্বীন মোহাম্মদ টিকিট কেনার অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, "আসলে সমর্থকদের জন্য টিকিফাইয়ের টিকিট কাটার অভিজ্ঞতা সুখকর না। বাফুফে আগে ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের যে প্রীতি ম্যাচ আছে, সেটার টিকিট বিক্রির দায়িত্ব টিকিফাইকে দিয়ে পরখ করে নিতে পারতো। সেক্ষেত্রে তাদের সক্ষমতা যাচাইয়ের সুযোগ থাকতো বাফুফের হাতে। টিকিট কাটতে গিয়ে এমন অভিজ্ঞতা সমর্থকদের ভোগান্তিতেই ফেলছে। বুথ কিংবা ব্যাংকের মাধ্যমে এখনো সুযোগ আছে টিকিটগুলো ছেড়ে দেওয়ার!"
বাংলাদেশের ফুটবলের পাগলাটে সমর্থক গোষ্ঠী ‘বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাস’। দেশের যেকোনো খেলায় গ্যালারিতে তাদের সরব উপস্থিতি সকলের নজর কাড়ে। আলট্রাসের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান অভি টিকিট কাটার অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, "আমরা প্রায় ১০ জন একসঙ্গে টিকিট কাটার জন্য চেষ্টা করছিলাম। কেউই টিকিট কাটতে পারিনি। শুধু শুধু সময় নষ্ট করতে হলো। প্রিয় দলের খেলা দেখার টিকিট কাটতে গিয়ে বেশ বিড়ম্বনার মধ্যেই পড়তে হয়েছে। সাধারণ দর্শকরা এমন ভোগান্তির শিকার হলে এটা তাদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। "
"শুরুতে তো শুনেছিলাম, টিকিফাইয়ের সার্ভার অনেক ভালো, অনেক ট্রাফিক সামলাতে পারবে। তবে এখন তো দেখছি ঠিক উল্টো। স্বস্তির বদলে তো বিড়ম্বনাই বেশি। এর চাইতে বুথ কিংবা ব্যাংকের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি করলে নিশ্চয়তা পাওয়া যেত," যোগ করেন তিনি।
টিকিট কাটা নিয়ে এমন বিড়ম্বনার অভিযোগ অনেক। এটি একদিকে হতাশার, অন্যদিকে মানুষের টিকিটের জন্য এত আগ্রহ বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য আশাজাগানিয়া। মাঠের পারফরম্যান্স দিয়ে দর্শকদের এই আগ্রহ ধরে রাখতে হবে দেশের ফুটবলারদেরই।
এআর