প্রথমবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ খেলতে নেমে (২০১৮-১৯) বসুন্ধরা কিংস চতুর্থ ক্লাব হিসেবে একনাগাড়ে পাঁচ মৌসুমে শিরোপা জিতে দেশের ফুটবলে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। এর মধ্যে গত মৌসুমে আবার ‘ট্রেবল’ জয় প্রিমিয়ার ফুটবলে দ্বিতীয় দল হিসেবে।
বসুন্ধরা কিংস রোমাঞ্চকর ফুটবলের ভালো এবং খারাপ উভয় দিকটি দেখে ফেলল! জীবন অবশ্য অনেক পাওয়া আর অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত হওয়ার গল্পে ঠাসা!
বিগত পাঁচটি বছর একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে ঘরোয়া ফুটবলের সিংহাসনে আরোহণ করা বসুন্ধরা কিংস চলমান মৌসুম শুরু করেছে প্রথম এক ম্যাচের ‘চ্যালেঞ্জ কাপ’ এবং এরপর ফেডারেশন কাপ জিতেছে যথাক্রমে মোহামেডান ও আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে। গত সাত মৌসুমের মধ্যে বসুন্ধরা কিংস চতুর্থবারের মতো কাপ জয় করে প্রমাণ করেছে তারাই ঘরোয়া ফুটবলে সবচেয়ে সফল দল। দেশের ফুটবলে পরাশক্তি। মৌসুমের তিনটি ট্রফির মধ্যে দুটি ঘরে তুলেছে কিংস—এটি অবশ্যই বিশেষ কিছু।
অনেক বড় কৃতিত্ব এবং সফলতা। এ ক্ষেত্রে কিছু প্রচারণায় কিংস ব্যর্থ হয়েছে বলে উল্লেখ করা হচ্ছে, এর কোনো যুক্তিসংগত কারণ আছে বলে মনে করি না। তিনটির মধ্যে দুটিতে জয়—এর পরও ব্যর্থ হয় কিভাবে!
প্রিমিয়ার লীগে এবার অপ্রত্যাশিত এবং অস্বাভাবিকভাবে প্রথম লেগেই বসুন্ধরা কিংস রেসে পিছিয়ে গেছে, যা বিগত কোনো বছর লক্ষণীয় হয়নি। ক্লাব ম্যানেজমেন্ট, টিম ম্যানেজমেন্ট, খেলোয়াড় এবং দেশজুড়ে বিরাটসংখ্যক সমর্থক ও ভক্তদের জন্য এটি একটি অভিজ্ঞতা।
কিংস মাঠে এসে নতুন সমর্থক সৃষ্টি করা ছাড়াও দৃষ্টিনন্দন ফুটবল এবং বারবার বিজয়ের সান্নিধ্য উপহার দেওয়ায় একসময় যাঁরা ফুটবলে অন্য ক্লাবকে সমর্থন করতেন, তাঁদের অনেকেই এখন বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছেন। এটি বাস্তবতা। এবারের অভিজ্ঞতার মধ্যে বার্তা আছে ভবিষ্যতের জন্য যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়টি, যেটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।
যে দলটির প্রখর মধ্যাহ্নের সূর্যের মতো ফুটবল মাঠে বিচরণ করার কথা, সেই দলটি কেন শিরোপার দৌড়ে পিছিয়ে পড়ল, এটি নিয়ে এরই মধ্যে অনেক আলোচনা হয়েছে। এর পরও আলোচনার দাবি রাখে!
বসুন্ধরা কিংস বাংলাদেশের ফুটবলের একটি ‘ব্র্যান্ড’। ক্লাবটি তো এখন শুধু বসুন্ধরা গ্রুপের নিজস্ব কোনো বিষয় নয়! এটি শুধু ক্লাব কর্মকর্তা ও খেলোয়াড়দেরও নয়! ক্লাব অগণিত মানুষের, যারা ভালো ফুটবল দেখতে চায়, যারা ফুটবলের সংস্কৃতিতে গুণগত পরিবর্তন চায়, দেশের ফুটবলে জাগরণ প্রত্যাশা করে, তাদের কাছ থেকে আলোচনা এবং গঠনমূলক যৌক্তিক সমালোচনা ঈর্ষার বহিঃপ্রকাশ এবং মিথ্যা অনুমানের ভিত্তিতে না হলে ক্লাব সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে সব সময় স্বাগত। এটিই বারবার বলা হয়েছে। কেননা এর মধ্যে ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা এবং ইতিবাচক দিক আছে।
বিগত ছয়-সাত বছরে বসুন্ধরা কিংস শুধু ঘরোয়া ফুটবলে ২০টি লীগ এবং টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে ১৭টি ট্রফি জিতেছে। এত অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের ফুটবলের ইতিহাসে এ ধরনের উজ্জ্বল নৈপুণ্য প্রদর্শনের নজির আর নেই। ২০১৮ সালে মাঠে এসে বারবার পরাজিত করেছে জনপ্রিয় এবং পরিচিত দলগুলোকে। এর জন্য কেউ কেউ ঈর্ষার বশবর্তী হয়ে বসুন্ধরা কিংসের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ এবং অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। ধারাবাহিকতার সঙ্গে। এমনটি ক্লাবসংশ্লিষ্ট মহল থেকে বলা হয়েছে! কিংস বারবার দেশের সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে বড় দল গঠন করে। এতে জাতীয় দলের স্কোয়াডে তাদের বেশি খেলোয়াড়ের স্থান হয়—ক্লাবটির প্রভাব থাকে জাতীয় দল গঠনের ক্ষেত্রে। এটি কোন ধরনের মানসিকতা! বলা হয়, খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক বাড়িয়ে দিয়ে অন্য ক্লাবগুলোর জন্য মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কিংস। সামর্থ্য আছে, তাই স্পোর্টস কমপ্লেক্স নিজস্ব অ্যারেনা নির্মাণ করে দেশের ফুটবলের ক্লাব সংস্কৃতিতে ‘সিঙ্গল আউট’ হয়েছে—এগুলো কোন ধরনের বক্তব্য? নিজস্ব আন্তর্জাতিক অ্যারেনা তো দেশের গৌরব। ক্লাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং মনগড়া। পেশাদার ফুটবলে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভেন্যুর খবর সচেতনমহলের কাছে অজানা নয়। প্রচারে বলা হচ্ছে কিংস ভেন্যু নিরাপদ নয়। এটি ক্লাবের বিরুদ্ধে অসত্য প্রচার। ফুটবল অনুষ্ঠিত হবে অথচ কিছুটা উন্মাদনা লক্ষণীয় হবে না, এটি তো হতে পারে না। কিংসের আধুনিক অ্যারেনা দেশের যেকোনো ভেন্যু থেকে অনেক বেশি নিরাপদ। তা ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে বাস্তবতার ভিত্তিতে এই ভেন্যুকে আরো গুছিয়ে পরিচালনার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। দেশে একটিমাত্র প্রাইভেট অ্যারেনা ফিফা এবং এএফসি স্বীকৃত। এটির বিরুদ্ধে অপপ্রচারের পরিণাম দেশের ফুটবলের জন্য কি ভালো হবে? জাতীয় দল এবং ক্লাব একাদশ তৈরির ক্ষেত্রে কোচের সিদ্ধান্তই সব সময় চূড়ান্ত মনে করে বসুন্ধরা কিংস কর্তৃপক্ষ। এই নীতিতে তারা সব সময় অটল। অটল শৃঙ্খলা, দায়িত্বশীলতা এবং দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রে।
কয়েক বছর ধরে বসুন্ধরা গ্রুপ তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে প্রতিটি ফুটবল কম্পিটিশনকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে। পৃষ্ঠপোষকতা করছে ঢাকার বাইরে কোথাও কোথাও জেলা লীগ ও ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে। এটিও কারো কারো মনোব্যথার কারণ হয়েছে। দুনিয়াজুড়ে খেলার চর্চাকে বেগবান রেখেছে তো বাণিজ্যিক পৃষ্ঠপোষকতা। বাণিজ্যিক পৃষ্ঠপোষকতা তো উভয়কে উভয়ের প্রয়োজনের মতো।
স্বাধীনতার পর আবাহনী ক্রীড়া চক্র মাঠের ফুটবলের সনাতনি পেক্ষাপট পাল্টে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে যখন বৃহত্তর ফুটবল অঙ্গনে পদার্পণ করে, তখন তাদের বিরোধিতা করা হয়েছে। পেছনে লেগে থেকে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালানো হয়েছে। আবাহনী ক্রীড়া চক্রের মাঠে আগমন সেই ১৯৭২ সালে। এর ৪৬ বছর পর ২০১৮ সালে বসুন্ধরা গ্রুপের ক্লাব যখন সময়ের চাহিদা থেকে দেশের ফুটবলের অগ্রগতি এবং উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে মাঠে এসে ঠিক সেই একই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করা সত্ত্বেও সুস্থ ফুটবল মানসিকতার পরিবর্তন এবং নতুন সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার জন্য লড়ে চলেছে। পরিবর্তনের বিষয়টি এখন যাকে ইচ্ছা করলেও আটকে রাখা যায় না। সময়ের ঘড়ি ঠিক সময়ে বাজে।
বসুন্ধরা কিংস দেশের বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের পেট্রোনাইজেসনে পরিচালিত একটি পেশাদার ফুটবল ক্লাব। বসুন্ধরা গ্রুপ দেশের ফুটবল উন্নয়নে সরাসরি ভূমিকা রাখার নির্দিষ্ট লক্ষ্য বাস্তবায়িত করার জন্য ক্লাবটিকে মাঠে এনেছে। তারা বিশ্বাস করে, পেশাদার মোড়কে মোড়ানো এই ক্লাব সময়ের দাবি এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারবে।
সেই ১৯১৫ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত অখণ্ড ভারতবর্ষের পূর্ব বাংলা, পাকিস্তানের পূর্ব পাকিস্তান, সর্বশেষ স্বাধীন বাংলাদেশে মোট ১১০ বছরের ফুটবল ইতিহাসে কোনো সরকারি, আধাসরকারি সার্ভিসেস এবং করপোরেট প্রতিষ্ঠানের দল ফুটবল মাঠে এসে একনাগাড়ে প্রবল দাপটের সঙ্গে ভালো ফুটবল খেলে পাঁচবার শিরোপা জয় করতে পারেনি, যা পেরেছে বসুন্ধরা গ্রুপের ক্লাব বসুন্ধরা কিংস।
২০২৪-২৫ মৌসুমে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে বসুন্ধরা কিংস তার সমর্থকদের প্রত্যাশা শতভাগ পূরণ করতে পারেনি। যে কিংস দলকে সবাই মাঠে দেখে অভ্যস্ত, সেই দলকে লীগে খুঁজে পাওয়া যায়নি। লীগে তাদের এত পরাজয় আর ড্রর স্বাদ অতীতে কখনো পেতে হয়নি। প্রতিটি খেলায় গোলের সুযোগের সদ্ব্যবহার না করতে পারায় খেলার গল্প রচিত হয়েছে ভিন্নভাবে। এবারের লীগ অন্য যেকোনোবারের চেয়ে অনেক বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়েছে। সাতটি দল যেভাবে লড়েছে, এটি ফুটবলের জন্য ইতিবাচক। তবে লীগের নেতিবাচক দিক হলো দুর্বল খেলা পরিচালনা।
চলতি মৌসুমে দলের কোচ হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে রুমানিয়ান ভ্যালেরিও তিতাকে। তাঁর জীবনবৃত্তান্ত এবং অভিজ্ঞতা অনেক বেশি সমৃদ্ধিশালী। পাঁচ বছর বসুন্ধরা কিংসের দায়িত্বে ছিলেন স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজন। লীগ শিরোপাসহ ১১ ট্রফি ঘরে এসেছে তাঁর সময়ে। বসুন্ধরা কিংসের লক্ষ্য তো একটিই, আত্মবিশ্বাসী ভালো খেলার মাধ্যমে বারবার সমর্থক ও ভক্তদের বিজয়ের সান্নিধ্য উপহার দেওয়া। আর তাই বসুন্ধরা কিংসের ডাগ আউটে চাপটা সব সময় বেশি ছিল এবং থাকবে। হারানো সিংহাসন ভবিষ্যতে পুনরুদ্ধার করতে হবে। কোচের দায়িত্ব দলের খেলোয়াড়দের কাছ থেকে সেরাটি বের করে আনা এবং তাঁদের একটি দল হিসেবে খেলতে উদ্বুদ্ধ করা। কোচের ব্যক্তিত্বে সবাইকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা থাকতে হবে। খেলোয়াড়দের সঙ্গে তাঁর রসায়ন হতে হবে চমৎকার। পাশাপাশি দলের সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক দৃঢ় করতে ভূমিকা রাখতে হবে। দলটিকে ঐক্যবদ্ধ করে তুলতে সহায়ক হবে। নতুন কোচ খেলোয়াড়দের কতটুকু ব্যবহার করতে পেরেছেন জানি না কিংবা তাঁরা তাঁকে কতটুকু বুঝতে পেরেছেন। টিম কম্বিনেশন তৈরির ক্ষেত্রে যৌক্তিক কারণে বারবার সমস্যা হয়েছে। প্রথম থেকেই নম্বর লাইনের অনুপস্থিতি। চোট সমস্যা, খেলোয়াড় পাওয়া সমস্যা। নম্বর লাইন নেই প্রথম থেকেই, কোচ তো ফরমেশন বদল করে এর সমাধানের জন্য উদ্যোগ নিতে পারতেন—এমন কথা একজন খ্যাতিমান সাবেক খেলোয়াড় বলেছেন, যিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের হয়ে জাতীয় দলে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। বসুন্ধরা কিংস তো পেশাদার মানসিকতাসম্পন্ন সংগঠকদের দ্বারা পরিচালিত হয়। এখানে কোচের বিষয়ে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করা হয় না! তবে কোচের কাছে একটিই প্রত্যাশা, রেজাল্ট। এটি না দিতে পারলে তাঁর বিদায়ের ঘণ্টা বাজতে পারে। জানি না তিতার ভাগ্যে কী ঘটবে।
বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি মো. ইমরুল হাসান। সেই ২০১৭ সাল থেকে ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ফুটবলপিপাসু মৃদুভাষী এই ব্যক্তিত্ব সবাইকে নিয়ে কাজ করায় বিশ্বাসী। আশাবাদী এই সংগঠক গত এপ্রিল মাসে একটি দৈনিকে বিশেষ সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘দলের সমস্যা আর দুর্বলতা নিয়ে কাজ করছি। আগামী মৌসুমে এবারের মৌসুমের মতো সমস্যা থাকবে না। ’
এরপর চলতি মাসেই আরেকটি দৈনিককে বলেছেন, ‘আমরা মোহামেডান ও আবাহনীকে বারবার হারিয়েছি। তারাও আমাদের হারাতে পারে, এটাই ফুটবল। তবে আমরা কিভাবে হেরেছি, সেটা বুঝতে হবে! আমাদের ঘরের বেশ কিছু ফুটবলার ইনজুরি ছিল। আমরা সবার সার্ভিস পাইনি। তারিক কাজী খেলতেই পারেনি। প্রায় পুরো মৌসুম বিশ্বনাথ ইনজুরিতে। আরো অনেকেই এবার ইনজুরিতে কাটিয়েছে। মিগুয়েলকে পাইনি। ৯ নম্বর পজিশনটাই যদি না থাকে, তাহলে শক্তিটা কমে যায়। আর রবসন না থাকায় গ্যাপটা থেকেই গেছে। রবসন খুব ভালো খেলোয়াড়, তার খেলা দর্শকদের সব সময় চোখে পড়েছে। দলকে টেনে নেওয়ার মতো সব গুণ তার ছিল। ’ এদিকে একটি ইংরেজি দৈনিক লিখেছে, গত মৌসুমের সঙ্গে এবারের মৌসুমের দলগত শক্তিতে অনেক পার্থক্য আছে। আর তাই দলটি মাঠের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াইয়ে ভুগেছে।
লেখক: কলামিস্ট ও বিশ্লেষক। সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি, এআইপিএস এশিয়া।
আজীবন সদস্য, বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন। প্যানেল রাইটার, ফুটবল এশিয়া