পাথরঘাটা (বরগুনা): সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণের এক মাস ২১ দিন পর সন্ধান না পেয়ে ধর্ষণের অভিযোগ এনে আদালতে মামলা করেছে তার মা।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও জেলা জজ লায়লাতুল ফেরদৌস মামলাটি গ্রহণ করে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এজাহারভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বরগুনা জজ আদালতের বিশেষ পিপি রনজুয়ারা সিপু।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার ছোনবুনিয়া গ্রামের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ১৫ বছরের নাবালিকা মেয়ের সঙ্গে বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার কড়ইবাড়িয়া ইউনিয়নের ঝাড়াখালী গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে মো. মুছার (২৫) ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। মুছা তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হলে মুছা জোর করে মেয়েকে তুলে নেওয়ার হুমকি দেয়। মুছার এমন আচরণ মেয়েটি তার বাবা-মায়ের কাছে বলে। এরপর থেকে মেয়েটি মুছার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এতে মুছা প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে ওঠে। ৩১ আগস্ট সকাল অনুমান সাড়ে ৭টার সময় ওই ছাত্রী স্কুলে রওনা হয়ে কালমেঘা মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে পাকা রাস্তার ওপর পৌঁছে। এমন সময় আসামি মুছা ও তার তিন বন্ধু স্কুলছাত্রীকে জোরপূর্বক খুনের ভয় দেখিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়।
মেয়ের মা বলেন, আমার মেয়ে প্রতিদিনের মতো স্কুল থেকে বিকেলে বাসায় না ফেরায় আমি ওই দিন পাথরঘাটা থানায় সাধারণ ডাইরি করি। আমার মেয়েকে বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের বাসায় খুঁজতে থাকি। পরে মো. স্বপন নামে এক আত্মীয়র কাছে জানতে পারি আসামি মুছাসহ কয়েকটি ছেলে আমার নাবালিকা মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। আসামির বাবা জসিম উদ্দিন ও মায়ের কাছে গিয়ে অনুরোধ করলে তারা আমার মেয়েকে ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেওয়ার পরেও এক মাস ২১ দিন হয়ে গেছে এখনো মেয়েকে ফেরত দেয়নি।
তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ে মুছার কাছেই আছে। তবে বেঁচে আছে কিনা জানি না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস আসামি মুছা আমার ছোট্ট মেয়েটিকে কোথাও আটক রেখে ধর্ষণ করতে পারে। এমনও হতে পারে টাকার বিনিময় মেয়েটিকে বিদেশে পাচার করেছে মুছা। অথবা মেয়েকে হত্যা করে লাশ গোপনও করতে পারে। কোথায় কী অবস্থায় আমার মেয়ে আছে তা জানি না। আসামি মুছার ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগও করা যায়নি।
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী হাসান বলেন, থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করার পরে মেয়ের অভিভাবক কেউ থানায় আসেনি। আমরা মেয়েটিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে থানায় কেউ মামলা করতে আসেনি, এলে মামলা নিতাম।
আরএ