রাজধানীতে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে ডাকাতি হওয়া ১৭৫ ভরি স্বর্ণের মধ্যে ২৩ ভরি স্বর্ণ সাভার থেকে উদ্ধার করেছে মিন্টুরোডের ওয়ারী জোনের গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে সাভারের নামাবাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব সাহার মালিকানাধীন সঞ্জীব স্বর্ণালয়ে অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তারের পর এসব স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মানিকগঞ্জ জেলা সদরের ঝিটকা ইউনিয়নের মদন হালদারের ছেলে গণেশ (৩৫), সাভার নামাবাজার স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব সাহা (৪৮), ও তার কর্মচারী ইমন (২৮)।
ভুক্তভোগী স্বর্ণ ব্যবসায়ী মনির বাংলানিউজকে বলেন, 'আমি রাজধানীর উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরে থাকি। ঢাকার তাঁতীবাজারে সুমন জুয়েলার্স নামে স্বর্ণের পাইকারি দোকান আছে আমার। গত ১৯ আগস্ট আমার উত্তরার বাসা থেকে সকালে ৫ জন কর্মচারী ১৭৫ ভরি স্বর্ণ নিয়ে প্রাইভেটকারে করে তাঁতিবাজারের দিকে রওনা করেন। সকাল ৭টার দিকে তেজগাঁও এলাকার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে পৌঁছালে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে একটি প্রাইভেটকার ও একটি নোয়াহ গাড়ি এসে তাদের গতিরোধ করে। প্রায় ৮/১০ জন পুলিশ পরিচয়ে গাড়িসহ তাদের জিম্মি করে ১৭৫ ভরি স্বর্ণ লুট করে নিয়ে যায়। পরে তেজগাঁও থানায় মামলা দায়ের করলে এ পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করলো। পাশাপাশি প্রায় ৪০ ভরি স্বর্ণসহ নগদ ১৫ লাখ টাকা উদ্ধার করে পুলিশ।
ডিবি পুলিশ জানায়, গত ১৯ আগস্ট তেজগাঁও থানায় একটি ডাকাতি মামলা হয়। পরে এই মামলাটি তদন্তের ভার পায় মিন্টুরোডের ওয়ারী জোনের গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে বরিশাল, পটুয়াখালী ও বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে প্রথমে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয় গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে স্বর্ণ বিক্রির ১৫ লাখ টাকাসহ ১৭ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। পরে গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্যমতে সাভারের নামাবাজরে অভিযান পরিচালনা করে গণেশ নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ডাকাতি হওয়া স্বর্ণ সরাসরি ডাকাতের কাছ থেকে ক্রয় করেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। তবে তার দোকানে কোনো স্বর্ণ পাওয়া যায়নি। গণেশের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার পাশের দোকান সঞ্জীব স্বর্ণালয়ে অভিযান পরিচালনা করে ২৩ ভরি ১২ আনা স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় সঞ্জীব সাহা ও তার কর্মচারী ইমনকে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া মিন্টু রোডের ওয়ারি জোনের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ফজলুল করিম বলেন, গ্রেপ্তার গণেশের দোকানের কোনো নাম নেই। তিনি ডাকাতের কাছ থেকে সরাসরি স্বর্ণ ক্রয় করে সেগুলো গলিয়ে পাশের দোকান সঞ্জীব সাহার কাছে বিক্রি করতেন। তিনি সঞ্জীব সাহার কাছে ধাপে ধাপে ৭৫ ভরি স্বর্ণ বিক্রি করেছেন বলে স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় সাভার থেকে গণেশ, সঞ্জীব সাহা ও ইমন নামের একজনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ২৩ ভরি ১২ আনা স্বর্ণ।
আরএ