দক্ষিণ কোরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন কুমিল্লার তিন শিক্ষার্থী।
তারা হলেন-কমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার রাজিদ আয়মান (২০), হাসিবুল হাসান চৌধুরী (২১) ও বুড়িচং উপজেলার শিহাব (২২)।
আহতদের পরিবারের সদস্যরা শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ আগস্ট দক্ষিণ কোরিয়ার ওনজু শহরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় তারা গুরুতর আহত হন। পরে তিনজনকেই আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। দুর্ঘটনার নয়দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তাদের কারও জ্ঞান ফেরেনি।
রাজিদ আয়মান কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌর ফতেহাবাদ গ্রামের স্কুলশিক্ষক নান্নু মিয়ার ছেলে। হাসিবুল হাসান চৌধুরী উপজেলার ধামতী ইউনিয়নের ধামতী গ্রামের ওমর ফারুক চৌধুরীর ছেলে। শৈশব থেকেই রাজিদ ও হাসিবুলের বন্ধুত্ব অটুট। স্কুল থেকে কলেজ পর্যন্ত একই বেঞ্চে বসা, একই পোশাক পরা—সব ক্ষেত্রেই ছিল তাদের মিল। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় দুজনই জিপিএ-৫ অর্জন করেন।
২০২৪ সালে তারা ভর্তি হন দক্ষিণ কোরিয়ার কিউংডং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ বিভাগে। বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জন করে পরিবার ও দেশের জন্য অবদান রাখার স্বপ্ন ছিল তাদের। কিন্তু দুর্ঘটনার পর সেই স্বপ্ন থমকে গেছে। পরিবার ও এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে গভীর উৎকণ্ঠা।
রাজিদের বাবা নান্নু মিয়া বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার ছেলের স্বপ্ন ছিল বিদেশে পড়াশোনা করবে। অনেক কষ্টে টাকা জোগাড় করে তাকে কোরিয়ায় পাঠিয়েছি। কিন্তু এখন সে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। প্রতিদিনের চিকিৎসা ব্যয় বহন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে। আমি সবার কাছে দোয়া চাই।
হাসিবুলের বাবা ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, ওরা বাজার থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর থেকে আর জ্ঞান ফেরেনি। আমার স্ত্রী সারাক্ষণ কান্নাকাটি করছে। জানি না ছেলেকে আর জীবিত দেখতে পাব কি না। দেশবাসীর কাছে সন্তানের জন্য দোয়া চাই।
আইসিইউ চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে হিমশিম খাচ্ছেন পরিবারগুলো। কোরিয়ায় চিকিৎসা খরচ অনেক বেশি হওয়ায় তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। স্বজনদের দাবি, সরকারের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিদেরও এ অবস্থায় সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া জরুরি।
আরবি