ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৭ আগস্ট ২০২৫, ১২ সফর ১৪৪৭

সারাদেশ

নির্বাচন কমিশন শিগগিরই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে: নজরুল ইসলাম খান

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১:৫৩, আগস্ট ৭, ২০২৫
নির্বাচন কমিশন শিগগিরই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে: নজরুল ইসলাম খান ময়মনসিংহ নগরে বিজয় মিছিল করেছে বিএনপি

ময়মনসিংহ: বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, গতকাল (৫ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য সময় ঘোষণা করেছেন। আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাই।

তিনি লন্ডনের মিটিংয়ে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে যে কথা দিয়েছিলেন, তা রক্ষা করেছেন। কিন্তু তিনি তারিখ ঘোষণা করতে পারেন না। আইনে এটা ঘোষণার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তিনি নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেবেন। আমরা আশা করব, নির্বাচন কমিশন যতটা সম্ভব শিগগিরই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন।  

বুধবার (৬ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় ময়মনসিংহ নগরের টাউন হল চত্বরে ময়মনসিংহ মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির যৌথ বিজয় মিছিলের আগে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় নির্বাচন প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, লড়াই এখনো শেষ হয় নাই। আমাদের লড়াই শুধু ফ্যাসিবাদের পতনের জন্য ছিল না, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য ছিল। এজন্য আমরা একটি নিরপেক্ষ নির্বাাচনের কথা বলেছি। অনেকেই নানাভাবে বাঁধা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমরা ক্রমাগত বলেছি- আমরা জনগণের শাসন চাই। আমরা এমন সরকার চাই- এমন সরকার দেশ পরিচালনা করুক, যাদের জনগণ নির্বাচিত করবে। তারা জনগনের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, জনগণকে জবাবদিহি করবে। এমন একটা গণতন্ত্রের সরকার আমরা চাই।    
 
এ সময় দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছরে যারা জীবন দিয়েছে, তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে হলে, তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তায়বন করতে হলে বিএনপিকে নির্বাচিত করতে হবে। আর এ নির্বাচনে বিজয়ের একমাত্র মূল অস্ত্র হচ্ছে জনগণের হৃদয় জয় করা, জনগণের ভালোবাসা এবং তাদের সমর্থন অর্জন করা। তাই আজকের এ দিনে শপথ নিন, আমরা কেউ এমন কাজ করবো না, এমন কথা বলবো না, যাতে জনগণ কষ্ট পায়।  

শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিগত ১৬ বছরের গণতন্ত্রের লড়াইয়ে যারা আহত হয়েছে, নিহত হয়েছে, কারাবন্দি হয়েছে তাদের প্রতিও আমার শ্রদ্ধা। এ লড়াইয়ে অনেক মা সন্তান হারিয়েছেন। তাদের একজন আমাদের মা খালেদা জিয়া। তিনি এ লড়াইয়ের সময়ে তার এক পুত্রকে হারিয়েছেন। তিনি বিদেশ গিয়ে থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন এবং বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছেন। অনেক ভাই তার ভাইকে হারিয়েছেন। সে রকম আরেকজন ভাই আমাদের নেতা তারেক রহমান। তিনি তার ভাইকে হারিয়েছেন। অনেকেই কারাবন্দি হয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়া। যাকে মিথ্যা অভিযোগে বছরের পর বছর কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে। সেখানে ভুল চিকিৎসা করে তাকে অসুস্থ বানিয়ে ফেলা হয়েছে।

প্রবীণ এ বিএনপি নেতা আরও বলেন, আমাদের লড়াইয়ের ফসলের পূর্ণতা পাওয়ার সময় এসেছে। আমরা লড়াই করেছিলাম ফ্যসিবাদের পতনের জন্য। আমরা আন্দোলন করেছিলাম, তাদের পতনের পর একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হবে। নানাভাবে এ প্রয়াসকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তারপরও দেশের সব শ্রেণিপেশাপর মানুষের লড়াইয়ে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শেখ হাসিনা ভীরু নারী দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। এর আগে আরও অনেক সরকারের পতন হয়েছে কিন্তু কেউ পালিয়ে যায় নাই।

সমাবেশে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।

এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু, উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার রোকনসহ অনেকে।  

সমাবেশ শেষে একটি বিশাল বিজয় মিছিল নগরের টাউন হল থেকে শুরু হয়ে স্টেশন রোড চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এতে ময়মনসিংহ মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।