ঢাকা, সোমবার, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৮ জুলাই ২০২৫, ০২ সফর ১৪৪৭

সারাদেশ

ঘুষ গ্রহণের মামলায় সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সাবেক স্টেনোগ্রাফারের ৭ বছরের কারাদণ্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:২৫, জুলাই ২৮, ২০২৫
ঘুষ গ্রহণের মামলায় সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সাবেক স্টেনোগ্রাফারের ৭ বছরের কারাদণ্ড

সাতক্ষীরা: ঘুষ গ্রহণের মামলায় সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সাবেক স্টেনোগ্রাফার এ কে এম শহীদুজ্জামানকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে সাত হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রায় ঘোষণাকালে আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সোমবার (২৮ জুলাই) খুলনা বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো: আশরাফুল ইসলাম এই রায় ঘোষণা করেন।

সাজাপ্রাপ্ত শহীদুজ্জামান সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার পারকুমিরা গ্রামের মো. সোহরাব উদ্দিনের ছেলে। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো: ইয়াছিন আলী।

আদালত সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা সদর থানাধীন দেবনগর বেগম রোকেয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়নে ৩ লাখ টাকা অনুদান পাওয়ার জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: মেহেদী হাসান জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আবেদন করেন। আবেদনটি নিয়ে তিনি সাঁটলিপিকার এ কে এম শহীদুজ্জামানের অফিস রুমে যান।

২০১৭ সালের ৩০ জুলাই শহীদুজ্জামান আবেদনপত্রটি গ্রহণ করে সিল ও স্বাক্ষর করে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে বলেন, অনুদান পাইয়ে দিলে সেক্ষেত্রে তাকে শতকরা ৩০ শতাংশ হারে টাকা দিতে হবে। সে সময়ে ওই প্রধান শিক্ষক স্কুলের উন্নয়নের কথা বিবেচনা করে তাকে তখন ১০ হাজার টাকা অগ্রিম প্রদান করেন। পরবর্তীতে অভিযুক্ত শহীদুজ্জামান তাকে বলে, স্কুলের নামে আরও ২ লাখ টাকা পাইয়ে দিতে পারবো। সেক্ষেত্রে তাকে আরও ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক যোগাযোগ করলেও শহীদুজ্জামান তাকে ঘোরাতে থাকে এবং বাকি টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। এতে তিনি উৎকোচ দিতে রাজি হন।

২০১৮ সালের ৩১ মে অভিযুক্তের সাথে দেখা করলে ওই শিক্ষককে বাকি টাকা দ্রুত দেওয়ার জন্য তাগিদ দেয়া হয়। বিষয়টি অনৈতিক বিবেচনা করে প্রধান শিক্ষক দুর্নীতি দমন কমিশনের শরণাপন্ন হন।

ওই বছরের ৩ জুন প্রধান শিক্ষক মেহেদী হাসান এ ব্যাপারে খুলনার দুদক পরিচালকের নিকট আবেদন করেন। পরে তাকে গ্রেপ্তারের জন্য দুদক কর্মকর্তারা ফাঁদ পাতে।

২০১৮ সালের ১২ জুন সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ কার্যালয়ে ওৎ পাতে দুদক কর্মকর্তারা। ওই দিন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মেহেদী হাসান শহীদুজ্জামানের রুমে প্রবেশ করে এবং পূর্ব উল্লিখিত ৫০ হাজার টাকা প্রদান করতে চাইলে অভিযুক্ত শহীদুজ্জামান বলে, এক লাখ টাকা উৎকোচ না দিলে তার কাজ হবে না। এ কথা শুনার পর তিনি বিভিন্নস্থান হতে আরও ৫০ হাজার টাকা জোগাড় করে তাকে প্রদান করেন। টাকাটি নিয়ে শহীদুজ্জামান তার প্যান্টের বাম পকেটে রাখেন। ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি প্রধান শিক্ষক সংকেত দিয়ে জানানোর সাথে সাথে শহীদুজ্জামানের রুমে প্রবেশ করে দুদক কর্মকর্তারা তাকে ঘুষের ১ লাখ টাকাসহ আটক করেন।

এ ঘটনায় ওই দিন দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয় খুলনার সহকারী পরিচালক মো: মহতাব উদ্দিন বাদী হয়ে সাতক্ষীরা থানায় মামলা দায়ের করেন, যার নং ২৫। একই বছরের ২৮ নভেম্বর দুদকের সহকারী পরিচালক মো: শাওন মিয়া শহীদ্জ্জুামানকে আসামি করে আদালতে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন এবং একই আদালতে ২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর চার্জ গঠন করা হয়।

এ মামলায় তাকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও সাত হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

 

এমআরএম

 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।