ঢাকা, রবিবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৭ জুলাই ২০২৫, ০১ সফর ১৪৪৭

সারাদেশ

১০ হাজার ‘অজ্ঞাত’ আসামি করে ‘এসআই হত্যা’ মামলা, প্রত্যাহার চেয়ে স্মারকলিপি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:৪২, জুলাই ২৭, ২০২৫
১০ হাজার ‘অজ্ঞাত’ আসামি করে ‘এসআই হত্যা’ মামলা, প্রত্যাহার চেয়ে স্মারকলিপি সংগৃহীত ফাইল ছবি

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে ৫ আগস্ট সংঘটিত ছাত্র-জনতা হত্যাকাণ্ডের পর ১০ হাজার ‘অজ্ঞাত’ আসামি করে পুলিশের দায়ের করা ‘এসআই হত্যা’ মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সংগঠনটির দাবি, এই মামলা ইতিহাস বিকৃতি ও জনগণের প্রতিবাদ দমনের অপচেষ্টা।

রোববার (২৭ জুলাই) সংগঠনটির হবিগঞ্জ জেলা শাখার পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।  

স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন সংগঠনের আহ্বায়ক আরিফ তালুকদার ও সদস্য সচিব মাহদি হাসান। তারা এটি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল জাবেদের কাছে জমা দেন।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এসআই সন্তোষের গুলিতে নিরীহ মানুষ নিহত ও শতাধিক আহত হলে উত্তাল হয়ে ওঠে বানিয়াচং। সাধারণ মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তবে সেই প্রতিরোধকে ‘হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে তুলে ধরে পুলিশের পক্ষ থেকে ১০ হাজার ‘অজ্ঞাত’ ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। যা আন্দোলনকারীদের ভাষায় ইতিহাস বিকৃতি ও নিপীড়নের অপচেষ্টা।

স্মারকলিপিতে তিনটি দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবির মধ্যে রয়েছে— এসআই হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা মামলা স্থায়ীভাবে প্রত্যাহার; নিহত ও আহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও পুনর্বাসন; ন্যায্য প্রতিবাদকে ‘সন্ত্রাস’ বা ‘হত্যাকাণ্ড’ বলার সরকারি অপপ্রয়াসের প্রতিবাদ ও নিন্দা।

স্মারকলিপি দেওয়ার দিন শহীদ মিনার চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধনেও এসব দাবি তুলে ধরা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী ও সংগঠনটির ভাষ্য অনুযায়ী, সাগরদিঘীর পশ্চিমপাড় ঈদগাহ মাঠ থেকে বিশাল একটি মিছিল বের হয়ে গ্যানিংগঞ্জ হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে জড়ো হয়। পরে থানার সামনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভকারীরা ইটপাটকেল ছোড়ে। পুলিশ তখন কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড ও গুলি ছোড়ে।

পুলিশ জানায়, ওইদিন ঘটনাস্থলে ও হাসপাতালে আটজন নিহত হন। এক সাংবাদিক এবং থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সন্তোষকেও পিটিয়ে হত্যা করা হয়।  

ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে, এক আহত ছাত্রের বাবার পক্ষ থেকে এবং নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে মোট তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়।

নিহতদের মধ্যে ছিলেন- হোসাইন মিয়া, আশরাফুল ইসলাম, তোফাজ্জল হোসেন, মোজাক্কির মিয়া, সাদিকুর রহমান, শেখ নয়ন হোসেন, সোহেল আখঞ্জী, আকিনুর রহমান ও আনাস মিয়া।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলেন, এই মামলা শুধু বিচারহীনতার নিদর্শন নয়, বরং জনগণের প্রতিবাদকে দমন করার একটি ভয়ানক উদাহরণ। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।