ঢাকা, রবিবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৭ জুলাই ২০২৫, ০১ সফর ১৪৪৭

সারাদেশ

বাগেরহাটে চাচা-ভাইপোকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে মারধর, ছাড়া পেলেন টাকা দিয়ে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:২৭, জুলাই ২৭, ২০২৫
বাগেরহাটে চাচা-ভাইপোকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে মারধর, ছাড়া পেলেন টাকা দিয়ে

বাগেরহাট: বাগেরহাটে দিনে দুপুরে চাচা-ভাইপোকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে মারধর ও জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২৭ জুলাই) দুপুরে শহরের জেলা কারাগার সড়ক থেকে মো. জাহাঙ্গীর কাজী (৪২) ও মো. ইয়াসিন বিশ্বাস (৩৫) নামের ওই দুই ব্যক্তিকে অপহরণ করে ঘটনা ঘটে।

তারা দুজন পরস্পর চাচা-ভাইপো। পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ হিসেবে অর্ধলক্ষাধিক টাকা আদায়ের পর এদিন বিকেলে জিম্মিকারীরা তাদের ফকিরহাট উপজেলার কাটাখালী মোড়ে ফেলে গেছে।

অপহরণের শিকার দুজনের বাড়ি খুলনা জেলায় কয়লা উপজেলায় তেতুলতলা গ্রামে। তারা মোংলায় বসবাস করেন এবং সুন্দরবনে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘সামনেই জেলখানা, তাকাইলে দেখা যায়। পাশে মনে হয় দেড়শ গজ হবে না পুলিশ সুপারের কার্যালয়। এখান থেকে মানুষ উঠায় নিয়ে যায়। মুহূর্তেই মাঝে এসে যেন ছোঁ দিয়ে নিয়ে গেল। মাইরও দিছে। ’

অপহৃত জাহাঙ্গীর ও ইয়াসিনের সঙ্গে এক সাথে মোংলা থেকে বাগেরহাটে এসেছিলেন মো. রুমি শেখ। তিনি বলেন, ‘কোর্টে (আদালতে) আমাদের কাজ ছিল। আমার এক আত্মীয় আছে জেলহাজতে, জাহাঙ্গীর ভাইয়েরও এক ছোট ভাই আছে। কোর্টের কাজ সেরে আমরা হেঁটে সেখানে (কারাগারে) যাচ্ছিলাম। ’

তিনি বলেন, ‘ফোনে কথা বলতে বলতে আমি একটু পিছনে পড়ি, হঠ্যাৎ করে দেখি কয়টা বাইক (মোটরসাইকেল) নিয়ে এসে জাহাঙ্গীর ভাই আর ইয়াসিনকে পিটিয়ে রাস্তায় শুয়ায়ে ফেলছে। তারা ৫-৬ জনে মিলে তাদের বাইকে তুলে জোরে চালায়ে দশানীর দিকে চলে গেল। তারপর ফোন দিচ্ছি কিন্তু পাচ্ছি না। এর অনেক পরে ফোন রিসিভ করছে, তখন টাকা দাবি করতেছে। ’

রুমি শেখ ও জাহাঙ্গীরের পরিবার বলছে, তাদের জিম্মি করার পর জাহাঙ্গীরের মোবাইল থেকেই তারা ফোন করে। সেই নম্বর থেকে কথা বলেছে টাকা চাইছে। মারছে আর ফোন দিয়ে টাকা চাইছে।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পরিবারের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা আদায়ের পর বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ওই দুই জনকে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার কাটাখালী এলাকায় ফেলে যায় জিম্মিকারীরা।

সেখান থেকে জাহাঙ্গীর কাজী বলেন, ‘আমাকে খুব মাইরছে। রাস্তায় লোকজন ছেলে। কিন্তু কেউ আগুইনি। আমার মনে হয় হাত-পা ভাইগ্যা গেছে।

কারা তাকে তুলে নেয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আগে তাগোর কাউরে চিনি না। এখান থেকে তুলে নিয়ে গেছে, চুলকাঠীর দিকে নিয়ে হাইওয়েতে উঠেছে। তারপর আরও চালায়ে এক জায়গায় নিছে। চারটে মোটরসাইকেল ছিল। আরও সেখানে লোক ছিল। আমার কাছে ৫ হাজার টাকা ছিল, নেছে। আর ফোন করে আরও ৫৫ হাজার টাকা নেছে বাড়ির তে। আমারে মারছে আর বাড়ি টাকা চাইছে। ’

বাগেরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদ-উল-হাসান বলেন, ‘আমরা এমন কোন অভিযোগ পাইনি। তবে মুখে মুখে শুনেছি। এ নিয়ে আমরা কাজ করতেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

এমআরএম

 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।