ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২১ মহররম ১৪৪৭

সারাদেশ

পাঁচবিবিতে অধিকাংশ সিসি ক্যামেরা গায়েব, বাড়ছে অপরাধ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:১৩, জুলাই ১৭, ২০২৫
পাঁচবিবিতে অধিকাংশ সিসি ক্যামেরা গায়েব, বাড়ছে অপরাধ পাঁচবিবিতে অধিকাংশ সিসি ক্যামেরা গায়েব

জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি পৌরসভা ও আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২০২৩ সালে পৌর প্রশাসন ও থানা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে স্থাপন করা দুই শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরার অধিকাংশই এখন গায়েব। ফলে ভারত সীমান্তবর্তী এই পৌর এলাকায় আবারও বাড়ছে চুরি, ছিনতাই, হত্যাকাণ্ডসহ নানা অপরাধ।

জানা গেছে, রাজশাহী বিভাগের জয়পুরহাট জেলার অন্তর্গত ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত পাঁচবিবি পৌরসভাটি ১০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনে নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। জনসংখ্যা প্রায় ৩৬ হাজার ৭২৫ জন। সীমান্তঘেঁষা হওয়ায় পৌর এলাকা ও আশপাশে প্রায়ই নানা অপরাধ সংগঠিত হয়ে থাকে। এ পরিস্থিতিতে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনতে ২০০টির বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছিল, যার ফলে তখন অপরাধ প্রবণতা অনেকটাই কমে আসে।

তবে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের দাবিতে আন্দোলনের সময় বিক্ষুব্ধ জনতা পৌর শহরের অধিকাংশ সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে বা খুলে নিয়ে যায়। এ অবস্থায় সীমান্তবর্তী এলাকায় অপরাধের হার আবারও বেড়ে গেছে।

স্থানীয় ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালক রেজাউল ইসলাম বলেন, আগে রাতে নিশ্চিন্তে গাড়ি চালাতাম, সিসিটিভি ক্যামেরা থাকায় ভয় লাগতো না। এখন অটো রেখে প্রস্রাব করতেও ভয় লাগে।

একই উদ্বেগ প্রকাশ করেন পাঁচবিবি উপজেলার এক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আতোয়ার রহমান। তিনি বলেন, এই শহর থেকে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে, কিন্তু এখনও উদ্ধার হয়নি। যদি ক্যামেরাগুলো সচল থাকত, তাহলে এমনটা নাও হতে পারত।

পাঁচবিবি বণিক সমিতির সভাপতি তাইজুল ইসলাম বলেন, এই শহরে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় দুই হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আগে নির্ভয়ে ব্যবসা চালাতাম। কিন্তু ৫ আগস্টের ঘটনার পর ক্যামেরাগুলো গায়েব হওয়ায় এখন আতঙ্কের মধ্যেই ব্যবসা চালাতে হয়। আমরা চাই দ্রুত এগুলো পুনঃস্থাপন করা হোক।

এর আগে স্থাপিত ক্যামেরাগুলো পৌরসভা ও থানার নিয়ন্ত্রণ কক্ষে মনিটরিং করা হতো। বর্তমানে কয়েকটি বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ক্যামেরা দেখা গেলেও বেশিরভাগ স্থানে শুধু সেট-আপ বক্স ও তার ঝুলে থাকতে দেখা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে পাঁচবিবি পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মারুফ আহসান বলেন, পৌর প্রশাসকের নির্দেশে আমরা সিসিটিভি ক্যামেরার পয়েন্টগুলো নির্ধারণের কাজ শুরু করেছি। এ জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশা করছি, খুব দ্রুতই ক্যামেরাগুলো পুনঃস্থাপন করা যাবে।

পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সিসিটিভি ক্যামেরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ৫ আগস্টে দুর্বৃত্তদের ভাঙচুরে বেশির ভাগ ক্যামেরা নষ্ট হয়ে গেছে বা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে আমরা আবারও নতুন করে ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা করছি।

এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।