চুয়াডাঙ্গায় দুটি পৃথক হত্যা মামলায় তিন আসামির ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আকবর আলী শেখ আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
দুটি মামলাই জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হয়।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আলমডাঙ্গা উপজেলার হারদী ইউনিয়নের বামানগর গ্রামের কাশেম আলীর ছেলে স্বাধীন আলী (৩৭), যিনি জেহালা ইউনিয়নের ক্লিনিকপাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করেন; একই মামলার অপর আসামি আশিকুর রহমান ওরফে বাদশা (২৭), চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের ফার্মপাড়ার মৃত বিপ্লব হোসেনের ছেলে; এবং পৃথক মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জমির উদ্দিন (৪৮), জীবননগর উপজেলার গঙ্গাদাশপুর গ্রামের মৃত ইব্রাহিম মণ্ডলের ছেলে।
প্রথম মামলা
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ৯ মে রাতে জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জেরে একদল দুর্বৃত্ত কামাল হোসেনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। কামালের স্ত্রী বাড়ির বাইরে বের হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে পড়ে থাকতে দেখে। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার দুদিন পর, ১১ মে নিহতের স্ত্রী সেলিনা আক্তার আলমডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে আলমডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (নিরস্ত্র) ইকরামুল হোসাইন একই বছরের ৩১ জুলাই আদালতে পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এ মামলায় ১ নম্বর আসামি স্বাধীন আলী ও ৬ নম্বর আসামি আশিকুর রহমান বাদশা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া শেষে আদালত তাদের সন্দেহাতীতভাবে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড ও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। মামলার অপর পাঁচ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় মামলা
অন্যদিকে, ২০২২ সালের ১৬ জুন দুপুরে পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে বাবলু রহমানকে কোদাল দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়। ওই দিনই নিহতের স্ত্রী চায়না খাতুন বাদী হয়ে জীবননগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত শেষে জীবননগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সৈকত পাড়ে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ মামলার একমাত্র অভিযুক্ত ছিলেন জমির উদ্দিন।
১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া শেষে আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা জজ কোর্টের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট মারুফ সারোয়ার বাবু বলেন, রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট। এ রায়ের মাধ্যমে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
এসআরএস