ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২১ মহররম ১৪৪৭

সারাদেশ

সৈয়দপুরে এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:৪৩, জুলাই ১৬, ২০২৫
সৈয়দপুরে এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা

মাত্র এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই নীলফামারীর প্রথম শ্রেণির সৈয়দপুর পৌরসভা এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। জেলা শহরের বিভিন্ন সড়ক, দোকানপাট ও বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

এ অবস্থার জন্য অনুন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থাকেই দুষছেন তারা। তবে পৌর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এখনও দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে দীর্ঘদিন পর শহরে ভারী বৃষ্টি হয়।

ঘণ্টাব্যাপী এ বৃষ্টিপাতে মুন্সীপাড়া, নতুন বাবুপাড়া, পুরাতন বাবুপাড়া, বাঁশবাড়ী, মিস্ত্রিপাড়া, বাঙালিপুর ও নিজপাড়াসহ নিম্নাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। এসব এলাকার প্রায় ৮০ শতাংশ বাড়িঘরে ১-২ ফুট পর্যন্ত পানি জমে যায়। প্রতি বছরই সামান্য বৃষ্টিতে শহরজুড়ে একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এমনকি শহরের গুরুত্বপূর্ণ শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কও পানিতে তলিয়ে যায়।

শহরবাসীর অভিযোগ, সৈয়দপুর পৌরসভা প্রথম শ্রেণির হলেও রাস্তাঘাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার করুণ দশা থেকে বের হতে পারছে না। খানাখন্দে ভরা সড়ক এবং অপর্যাপ্ত ও অপরিষ্কার ড্রেনের কারণে প্রতি বর্ষায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের কাছে একাধিকবার অভিযোগ জানানো হলেও কোনো সাড়া মেলে না।  

শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, সড়কের দুই পাশের ড্রেন অত্যন্ত নিম্নমানের। নিয়মিত পরিষ্কার না করায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি দোকানের ভেতরে ঢুকে পড়ে। যতক্ষণ না পানি নামছে, ততক্ষণ প্রায় ৫০০ ব্যবসায়ীকে ব্যবসা বন্ধ রাখতে হচ্ছে।

৮ নম্বর ওয়ার্ডের পান দোকানি মনসুর আলী বলেন, পুরো বর্ষাকাল এখানকার হাজারও পরিবার পানিবন্দি হয়ে কাটায়। জলাবদ্ধতা যেন আমাদের নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাস্টার ড্রেন নির্মাণের দাবিতে বহুবার সাবেক মেয়র ও বর্তমান প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছি, কিন্তু শুধু আশ্বাসই পেয়েছি, বাস্তবায়ন কিছুই হয়নি।  

এ অবস্থায় শহরের ১ নম্বর রেলগেট থেকে হাতিখানা কবরস্থান পর্যন্ত রাস্তা নিজেরা উঁচু করার উদ্যোগ নিয়েছেন স্থানীয় ফল ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা। কিন্তু ভারী বৃষ্টিতে সেই রাস্তাও ভেঙে গেছে।  

স্থানীয় ফল ব্যবসায়ী দুলাল বলেন, সমস্যার কথা বলতে বলতে আমরা ক্লান্ত। নিজেরা সমাধানের চেষ্টা করেও কোনো লাভ হচ্ছে না।

এ বিষয়ে সৈয়দপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সহিদুল ইসলাম বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমাদের নিজস্ব টিম রয়েছে। তবে বাজেট ঘাটতির কারণে মাস্টার ড্রেন নির্মাণ বা সংস্কার সম্ভব হচ্ছে না। এবারের বাজেটে শহর উন্নয়নে প্রায় ১২২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে ২-৩টি সড়কে সংস্কার কাজ চলছে। আশা করছি, ডিসেম্বরের মধ্যেই শহরের ভোগান্তি অনেকটাই কমে আসবে।

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পৌরসভার প্রশাসক নুর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, এ বছরের বাজেটে পৌরসভার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আগামী মাসে দুটি দুভোগপূর্ণ সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হবে। একই সঙ্গে ড্রেনের কাজও চলবে। আশা রাখি এসব কাজ শেষ হলে পৌরবাসীর দুর্ভোগ অনেকটাই লাঘব হবে।

এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।