সিলেট: বরাক, সুরমা-কুশিয়ারা। তিন নদীর মোহনা জকিগঞ্জ।
সোমবার (২ জুন) জকিগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর ডাইকের (নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ) ২০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। সকালে তিনটি স্থানে ডাইক ভাঙনে উপজেলাজুড়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ভোরের দিকে জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের রারাই গ্রামে প্রথমে ডাইক ডুবিয়ে দেয়। পানির স্রোতে ডাইকে ভাঙন দেখা দেয়। এরপর সোমবার সকালে উপজেলার বাখরশাল এবং খলাছড়া ইউনিয়নের লোহারমহল এলাকায় আরও ডাইক ভেঙে যায়। এতে প্রবল স্রোতে লোকালয়ে পানি ঢুকতে থাকে।
স্থানীয়রা জানান, স্রোতের তুড়ে সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। জকিগঞ্জ পৌর শহরসহ বিভিন্ন এলাকা দিয়ে নদী উপচে পানি ঢুকছে। এতে অনেকের বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে রোববার (১ জুন) দিনভর বিভিন্ন স্থানে ডাইকে ফাঁটল দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কয়েকটি এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা বালু ও মাটি ভর্তি বস্তা ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকেও কয়েকটি স্থানে পলিথিন দিয়ে বাঁধ ঢেকে রাখার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তবুও শেষ রক্ষা হয়নি।
জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রশাসন সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। বন্যাকবলিত মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে কাজ চলছে। এরইমধ্যে ৫৭টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে পরিস্থিতি এখনো ভালো আছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশল দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, কুশিয়ারা নদী প্রতিরক্ষা বাঁধের আট কিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। যেখানে বাধই ডুবে গেছে, সেখানে ভাঙন দিয়ে কী হবে। তাছাড়া বাধের যেসব অংশ ভাসমান, সেসব অংশ যাতে ভাঙন সৃষ্টি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের তথ্যমতে, উজানে ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে সোমবার কুশিয়ারা নদীর পানি বিকেল ৩টা পর্যন্ত জকিগঞ্জের আমলসিদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়া কুশিয়ারার পানি বিয়ানীবাজারের শেওলা পয়েন্টে ৪৬ সেন্টিমিটার এবং ফেঞ্চুগঞ্জে ৩৭ সেন্টিমিটার এবং কানাইঘাটে পয়েন্টে সুরমা নদীরর পানি বিপৎসীমার ৮৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
এনইউ/এএটি