হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় পাহাড়ি ছড়া থেকে অবৈধভাবে সিলিকা বালু উত্তোলনের দায়ে ১৪ জনকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রোববার (১২ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে দণ্ডপ্রাপ্তদের চুনারুঘাট থানা থেকে হবিগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে উপজেলার বদরগাজি গিলানিছড়ায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে তাদের আটক করা হয়। পরে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শফিকুল ইসলাম পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই দণ্ড দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নুর উদ্দিন (৩৩), জাকারিয়া (২৬), শাহজাহান মিয়া (৩২), শাহীন মিয়া (২১), ওয়াহিদ মিয়া (২৩), আব্দুল করিম জুনেদ (১৯), মো. ইউসুফ (২৩), মো. এনামুল হক (১৯), মো. জামাল মিয়া (২১), রিপন মিয়া (২৪), মো. নয়ন মিয়া (২২), মো. আতর আলী (৪২), মো. নুরুল ইসলাম (৪৩) ও মো. সারাজ মিয়া (৩০)।
সম্প্রতি বদরগাজি গিলানিছড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ি ছড়া থেকে ড্রেজার মেশিনে দেদারসে বালু তোলা হচ্ছে। বছরের পর বছর অনিয়ন্ত্রিত উত্তোলনে তছনছ হয়ে যাচ্ছে পুরো এলাকা। ছড়ার তলদেশ খুঁড়ে বালু তোলায় সরু ছড়া পরিণত হয়েছে গভীর খাদে। এতে আশপাশের পরিবেশ ও জনবসতি হুমকির মুখে পড়েছে। নিয়মিত বালু তোলার কারণে ছড়ার দুই তীর ভাঙছে, ঘরবাড়ি ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর চুনারুঘাট, মাধবপুর ও বাহুবল উপজেলার কোনো পাহাড়ি ছড়ায় সিলিকা বালুর মহাল ইজারা দেওয়া হয়নি। তবুও এসব এলাকায় চলছে অবাধ বালু উত্তোলন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে কয়েকটি বালু লুটের চক্র। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখানো হয়। চণ্ডিছড়া ও সাতছড়ি চা-বাগান এলাকার মূল্যবান বালু দিনে কম, রাতে বেশি- প্রতিঘণ্টায় ১০ থেকে ১২টি ট্রাকে লুটে নেওয়া হচ্ছে।
ইউএনও মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, রোববার ভোর থেকে অভিযান শুরু হয়। দীর্ঘ অভিযানে ১৪ জনকে আটক করে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে প্রত্যেককে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে বালু উত্তোলনের যন্ত্রপাতিও জব্দ করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুর রহমান বলেন, দণ্ডপ্রাপ্তদের বিকেলে কঠোর নিরাপত্তায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এসআরএস