ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

বরিশালে সর্বোচ্চ ৭৪ কিলোমিটার গতিতে আঘাত করে ‘ফণী’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০:২৪, মে ৫, ২০১৯
বরিশালে সর্বোচ্চ ৭৪ কিলোমিটার গতিতে আঘাত করে ‘ফণী’

ঢাকা: অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হয়ে ‘ফণী’ ভারতে আঘাত হানলেও বাংলাদেশে সেটি সাধারণ ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ঘণ্টায় ৭৪ কিলোমিটার গতিতে আছড়ে পড়েছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। সরকারি হিসেবে ঝড়ে চারজনের মৃত্যু ও ৬৩ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, বরিশালে ঘূর্ণিঝড় ঘণ্টায় ৭৪ কিলোমিটার বেগে আঘাত করেছিল।

ঘূর্ণিঝড়ের সার্বিক দিক নিয়ে শনিবার (০৪ মে) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক জানান, ৩ মে সন্ধ্যা থেকে ফণী’র অগ্রভাগ বাংলাদেশ স্পর্শ করার পর উপকূলসহ সারাদেশের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

 

‘শনিবার সকাল ৬টায় স্থলভাগের উপর দিয়ে ভারতের অংশ থেকে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, খুলনা ও যশোর অঞ্চলে অবস্থান করছিল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে। ’

পরিচালক বলেন, সকাল ৬টায় ঘূর্ণিঝড়ের চারপাশের বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার। আমাদের কাছে রিপোর্ট আছে, বরিশালে ঘূর্ণিঝড় ঘণ্টায় ৭৪ কিলোমিটার বেগে আঘাত করেছিল। এছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে কোথাও ৪৫, কোথাও ৩৭ কিলোমিটার বেগে আঘাত হেনেছে এবং ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হয়েছে।

সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, দুপুরের দিকে এটি স্থল নিম্নচাপ হিসেবে ঢাকাকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ অঞ্চলে অবস্থান করছিল। স্থল নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় আমরা পায়রা ও মংলা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলেছি। এর পরিবর্তে সবগুলো বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

‘এটা একটা প্র্যাকটিস যে যখন বিপদ সংকেত নামবে তখন ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দিয়ে ১৮ থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ ও সতর্কতার সঙ্গে চলাচল করতে বলি। ’

দুপুরের ওই সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক বলেন, বিপদ কেটে গেছে বলা যায়।

‘যাদের সাইক্লোন সেন্টারে নিয়ে গেছেন এখন তাদের বাড়ি ফিরে যেতে পরামর্শ দিতে পারি। বেলা ৪টা থেকে তারা আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে বাড়ি ফেরা শুরু করতে পারেন’, বলেন আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক।

আবহাওয়ার সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়, ফরিদপুর-ঢাকা অঞ্চল এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে স্থল গভীর নিম্নচাপ আকারে দুপুর ১২টায় পাবনা-টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ অঞ্চল এবং এর পার্শ¦বর্তী এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। গভীর নিম্নচাপটির প্রভাবে বাংলাদেশের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে এবং দেশের অনেক স্থানে অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।

গভীর নিম্নচাপটির প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘণ্টায় ৫০-৬০ কি. মি. বেগে এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঘণ্টায় ৪০-৫০ কি. মি. বেগে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

অমাবস্যা ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের কারণে উপকূলীয় জেলাগুলোতে ২-৪ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।

বাংলাদেশ সময়: ২০২১ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০১৯
এমআইএইচ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।