ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে খুলনার উপকূলীয় উপজেলা কয়রা, দাকোপ ও বটিয়াঘাটায় বেশ কয়েকটি এলাকার নদীর বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গাছ ও গাছের ঢাল ভেঙেছে।
শুক্রবার (০৩ মে) গভীর রাতে ওইসব এলাকার বেড়িবাঁধগুলোতে ভাঙন ধরলে এলাকাবাসী তা মেরামত করেন। তবে জোয়ারের কারণে এখন পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙনের স্থানগুলো প্রবল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে কয়রা ও দাকোপ এলাকায়।
স্থানীয়রা জানান, রাতে দাকোপ উপজেলায় ভাটার সময় বানিয়াশান্তা এলাকায় বাঁধ ভেঙে যায়। এলাকাবাসী রাতভর সেই বাঁধ মেরামত করেন। কিন্তু জোয়ারের পানির চাপে আবারও তা ভেঙে গেছে। এছাড়াও দাকোপের বরনপাড়া, বটিয়াঘাটার মল্লিকের মোড়ের কচি বানিয়া, বারোআড়িয়ার সুন্দরমহলের রাস্তা ভেঙে গেছে। কয়রার দক্ষিণ বেদকাশীর গোলখালী এলাকায় শুক্রবার গভীর রাতের জোয়ারে পানি ছাপিয়েছে। বাঁধের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অংশ আংটিহারা এলাকা। কয়রার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের আংটিহারা এলাকায় শনিবার সকালে স্থানীয় জনসাধারণের সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ মেরামতে স্বাধীন সমাজকল্যাণ সংস্থার সদস্যরা স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করেছেন। কয়রার কপোতাক্ষ নদের ঘাটাখালী বেড়িবাঁধে রাতে ঝড়ের আঘাতে রাস্তা আর নেই, আছে রাস্তার কঙ্কাল।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের খুলনার প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ রক্ষায় কাজ করছে।
এদিকে খুলনা মহানগরীতে শুক্রবার রাত থেকে শুরু হয়ে শনিবার সকাল পর্যন্ত থেমে থেমে দমকা হাওয়া ও বৃষ্টি হয়। পরে কিছুক্ষণ আকাশ রোদ্রজ্জল হয়ে আবার মেঘে ঢেকে যায়। বিকেলে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে খুলনাজুড়ে।
ঘূর্ণিঝড় ফণীর ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে খুলনা জেলা প্রশাসনের তথ্যাদি থেকে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে খুলনায় ৯৯০টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ এবং ৩ হাজার ৬৫০টি ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ জানান, ঘূর্ণিঝড় ফণী শক্তি হারাতে হারাতে বাংলাদেশে দুর্বল হয়ে আঘাত হেনেছে। শনিবার সকাল ৯টায় ঘূর্ণিঝড়টি খুলনা অতিক্রম করেছে। এর প্রভাবে প্রায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ফণী প্রথম খুলনায় আঘাত হানবে এমন খবরের পর থেকে জেলা-উপজেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলো, বিশেষ করে সিপিপি’র স্বেচ্ছাসেবকদের তৎপরতায় উপকূলের তিন উপজেলার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ শুক্রবার রাতে আশ্রয় কেন্দ্রে নিরাপদে থাকতে পেরেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০১৯
এমআরএম/জেডএস