ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২, ২৯ আগস্ট ২০২৫, ০৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

রাজবাড়ীতে পাট-হোগলাপাতায় তৈরি হচ্ছে বাহারি পণ্য

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:০০, এপ্রিল ২৭, ২০১৯
রাজবাড়ীতে পাট-হোগলাপাতায় তৈরি হচ্ছে বাহারি পণ্য পাট-হোগলাপাতা দিয়ে বাহারি পণ্য বানাচ্ছেন নারীরা। ছবি: বাংলানিউজ

রাজবাড়ী: রাজবাড়ী জেলা সদরের ভবদিয়া গ্রামে গড়ে ওঠা গ্লোবাল গোল্ডেন জুট অ্যান্ড ক্রাফটস লিমিটেডে পাট ও হোগলাপাতা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ব্যাগ, ফুলদানি, টব, ঝুড়ি, পাপোশ, ম্যাট ও টুপিসহ শতাধিক বাহারি পণ্য।

পরিবেশবান্ধব এসব পণ্যের ব্যাপক চাহিদা থাকায়, সেগুলো রফতানি হচ্ছে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মান, জাপান, চীন ও কোরিয়াসহ আটটি দেশে।

তৈরির পর এসব পণ্য ঢাকা হয়ে পাঠানো হয় চট্টগ্রাম বন্দরে।

সেখান থেকেই বিদেশের বাজারে রফতানি করা হয় পাট ও হোগলাপাতা দিয়ে তৈরি পরিবেশবান্ধব এসব পণ্য।

এ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বেশির ভাগই শ্রমিক হলো নারী। পুরুষের পাশাপাশি কাজের সুযোগ পেয়ে কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছেন তিন শতাধিক গ্রামীণ নারী।

প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক সুখজান বেগম (৪৫) বাংলানিউজকে বলেন, আমি নদী ভাঙনের শিকার। আমার স্বামী বৃদ্ধ হওয়ায় সংসার চালানো অনেক কষ্ট হচ্ছিলো। দু’বেলা দু’মুঠো ভাত জোটাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলাম। আমার ছেলে কাজ শুরু করলেও এ অভাব দূর হয়নি। পরে আমি এখানে কাজ পেয়ে এখন কিছুটা ভালো আছি। এখানে আমি পাট ও হোগলাপাতা দিয়ে ঝুড়ি তৈরি করি। পাট-হোগলাপাতা দিয়ে বাহারি পণ্য বানাচ্ছেন নারীরা।  ছবি: বাংলানিউজকর্মরত আরেক শ্রমিক রোকেয়া বেগম বলেন, আমার মতো আরও তিনশ নারী এই কারখানায় কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। এখানকার বেশিরভাগ শ্রমিকই নারী। এই গ্রামের অনেক বিধবা, বয়স্ক, স্বামী পরিত্যক্তা ও প্রতিবন্ধী নারী এখানে কাজ করে ভালোভাবে দিন পার করছেন।

প্রতিষ্ঠানটির ইনচার্জ হাজী মো. মাসেম বাংলানিউজকে বলেন, গ্রামীণ পর্যায়ে এমন পরিবেশবান্ধব কারখানা গড়ে ওঠায় এখানকার নারীরা কাজ পেয়েছেন। পুরুষের পাশাপাশি তারাও এখন অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছেন। প্রতিষ্ঠানটিতে পণ্য তৈরির জন্য স্থানীয় বাজার থেকে পাট ও নোয়াখালী থেকে হোগলাপাতা সংগ্রহ করা হয়।

প্রতিষ্ঠানটির জেনারেল ম্যানেজার ও পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, পরিবেশবান্ধব এসব পণ্যের ব্যাপক চাহিদা থাকায় এগুলো বিশ্বের আটটি দেশে রফতানি করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটিতে পুরুষের পাশাপাশি কাজের সুযোগ পেয়ে নারীরাও কর্মক্ষেত্রে এগোচ্ছেন। এখানে তৈরির পর এসব পণ্য ঢাকা হয়ে পাঠানো হয় চট্টগ্রাম বন্দরে। সেখান থেকেই রফতানি করা হয় বিদেশের বাজারে। কিন্তু দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে নাব্যতা সংকট ও বিভিন্ন কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় সময়মত পণ্য পরিবহন করা সম্ভব হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি এদিকে নজর দিতেন, তাহলে বিদেশে পণ্য পাঠানো আরও সহজ হতো। ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বাড়তো।

রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মো. শওকত আলী বাংলানিউজকে বলেন, গ্লোবাল গোল্ডেন জুট অ্যান্ড ক্রাফট লিমিটেডের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের কথা আমি শুনেছি। ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেছি। তাদের বৈদ্যুতিক সমস্যাটা বেশি। আমি তাদের বলেছি, একটি আবেদন নিয়ে আসতে। খুব তাড়াতাড়ি যাতে তাদের কারখানায় ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে সে ব্যপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও পরিবেশবান্ধব এসব পণ্য তৈরির উদ্যোক্তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৯
এসএ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।