পদ্মাসেতুর প্রথম নকশা অনুযায়ী ৪০টি পিলারের প্রতিটিতে ৬টি করে পাইল মিলিয়ে ২৪০ পাইল বসানোর কথা ছিলো। মাটির গঠনগত বৈচিত্র্য বিবেচনায় ২২টি পিলারের নতুন করে আরও একটি পাইল যোগ হয়ে এখন পদ্মায় নদীতে পাইল সংখ্যা দাঁড়াবে ২৬২টি।
পুনরায় নকশা করা ২২ পিলারের মধ্যে ৬টির অবস্থান জাজিরা প্রান্তে, ৯টির অবস্থান মাঝনদীতে আর বাকি ৭টি মাওয়া প্রান্তে।
মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল) পদ্মাসেতু নির্মাণ প্রকল্প কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়। ২২টি পিলারে প্রতিটাতে একটি করে অতিরিক্ত পাইল খাড়াভাবে গাঁথা হবে বলে তারা জানিয়েছেন।
প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, পাইল নিয়ে সৃষ্টি জটিলতা এখন আর নেই। সমস্যা কাটাতে পদ্ধতিগত দিক একটু পরিবর্তন হয়েছে। তবে কোথাও কাজ আটকে নেই।
প্রকল্প কর্মকর্তার দেওয়া তথ্যে দেখা যায়, মাওয়া প্রান্তের নদীতে ২, ৩, ও ৪ এবং ৫-এর পাইলিং কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে ৩ নাম্বার পিলারের কাজ পুরোপুরি শেষ। ৪ এবং ৫-এর পিলারের কাজ চলছে। এ প্রান্তে ৯ এবং ১২ নম্বর পিলারের পাইলিং কাজের প্ল্যাটফর্ম তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। খুব শিগগিরই পাইল ড্রাইভিং কাজ শুরু হবে।
এদিকে ৩৭ থেকে ৪০ নম্বর পর্যন্ত এই চারটি পিলারে ৩টি স্প্যান বসানো হয়েছে। কাজ শেষ পর্যায়ে ৪১ নম্বর পিলারে। মাসখানেকের মধ্যে ৪০ থেকে ৪১ নম্বর পিলারে আরও একটি স্প্যান বসবে। আর ৩৩ থেকে ৩৬ নম্বর পর্যন্ত ৪টি পিলারে নতুন নকশায় একটি করে পাইল বাড়বে। এর মধ্যে ৩৩, ৩৪ ও ৩৬ নম্বর পিলারে আগে থেকেই ৬ পাইল পুরোপুরি ড্রাইভ করা আছে। এগুলোর ঠিক মাঝখানে খাড়াভাবে একটি করে পাইল ড্রাইভ হবে। ৩৫ নম্বর পিলারে ৩টি পাইলের তলদেশে ড্রাইভ শেষ হয়েছে। আর ৪টি ড্রাইভ বাকি।
একইভাবে ১৫, ১৯, ২৪, ২৫ ও ২৮ নম্বর পিলারের প্রতিটির মাঝখানে এখন খাড়াভাবে একটি করে পাইল ড্রাইভ হবে। এ পর্যন্ত এই ৫টির কোনটিতেই কোনো পাইল ড্রাইভ করা হয়নি।
আর ৬ থেকে ১২ নম্বর পাইল এবং ২৬, ২৭, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২ নম্বর এই ১৩টি পিলারেও একটি করে পাইল বাড়বে। এসব পিলার শক্তিশালী করতে ‘স্কিন গ্রাউটিং’ নামে বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করা হবে। এ বর্ষা মৌসুমে এগুলো করা সম্ভব নয়। তাই এ বছরের শেষ দিকে শুষ্ক মৌসুমে এ কাজ করা হবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এখন পর্যন্ত পদ্মাসেতু প্রকল্পের ৫৩ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
স্টিল স্ট্রাকচারের দ্বিতল পদ্মাসেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। সেতুর ভেতর দিয়ে চলবে ট্রেন আর উপরে হবে সড়কপথ। নিজস্ব ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকায় ব্যয় হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই অবকাঠামোতে। সেতুটির নির্মাণ শেষ হলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২২ জেলার সঙ্গে সড়ক ও রেলপথে সরাসরি যুক্ত হবে রাজধানী ঢাকা।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৮
এসএ/জিপি