ঢাকা, শনিবার, ৮ ভাদ্র ১৪৩২, ২৩ আগস্ট ২০২৫, ২৮ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

জনসেবা খাতে কমছে বিনিয়োগ, বাড়ছে ভোগান্তি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:০৬, মার্চ ২৮, ২০১৮
জনসেবা খাতে কমছে বিনিয়োগ, বাড়ছে ভোগান্তি

ঢাকা: বাংলাদেশের জনসেবা খাতে আর্থিক ও সামাজিক বিনিয়োগ কমছে। পাশাপাশি অন্তর্ভূক্তিমূলক নীতি, পর্যবেক্ষণ, স্বচ্ছতা এবং জাবাদিহিতার অভাবে সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

বুধবার (২৮ মার্চ)  রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইন-এ আয়োজিত ‘জেন্ডার সংবেদনশীল জনসেবা ও অন্তর্ভূক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি’ বিষয়ক দু’দিনব্যাপী একটি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য উঠে আসে।

জনসেবা খাতের পরিস্থিতি তুলে ধরে অ্যাকশনএইড ব্যবস্থাপক নুজহাত জাবিন জানান, সরকারি জনসেবাগুলো বিশেষ করে স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও নগরসেবায় বিনিয়োগ হ্রাস পাচ্ছে।

২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ ছিলো মোট বাজেটের ৪.৭১ শতাংশ। যেখানে ২০০৯-১০ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিলো ৬.০২ শতাংশ। দক্ষ ও পেশাজীবী সেবাদাতারও অভাব রয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিলো মোট বাজেটের ১৪.৩৯ শতাংশ। যেখানে ২০০৯-১০ অর্থবছরে ছিলো ১৪.৩০ শতাংশ।

তিনি বলেন, আবার কেন্দ্রীভূত বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন ব্যবস্থার ফলে নাগরিকদের সঠিক চাহিদার প্রতিফলন বাজেটে হচ্ছে না। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা এবং পরিবহন সেবার ক্ষেত্রে সরকারের দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে দিন দিন সেবা ব্যয়বহুল ও কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ও সেবা বেসরকারিকরণের ফলে সেবা নিতে খরচ বাড়ছে মানুষের।

অ্যাকশনএইড- বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, সরকার নির্বাচিত হয় মানুষের সেবার জন্য। সরকারের উচিত দেশের সব নাগরিকের জন্য একই ধরনের সেবা নিশ্চিত করা। কিন্তু অপরিকল্পনার কারণে কাঙ্ক্ষিত সেবা পায় না মানুষ। ১০ বছর আগের বাজেটে জনসেবা খাতে যে হারে বরাদ্দ ছিলো বর্তমানে ঠিক সেই হারেই বরাদ্দ হচ্ছে। বাস্তব চিত্র হলো, প্রয়োজন অনুসারে জনসেবা খাতে বরাদ্দ ও বাস্তবায়ন হয় না।

বাংলাদেশ আরবান ফোরামের উপদেষ্টা মোস্তফা কাইয়ূম বলেন, আমাদের দেশের উন্নয়নে পিছিয়ে পড়া মানুষের অবদানই বেশি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, এই জনগোষ্ঠী আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনা কিংবা বাস্তবায়নে জায়গা পায় না। আবার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবে জনসেবা পেতে গিয়ে তারা নিগৃহীত হন।

সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশাহ্ বলেন, আমাদের দেশের নারীরা সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে নিগৃহীত। জনসেবা খাতে নারীর পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতা বাড়াতে হবে। কারণ, নারীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নই মৌলিক বিষয়। আর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ না বাড়লে নারী বঞ্চিত হবেই।

‘নারীর জন্য নিরাপদ নগরী’ নামে নিজেদের একটি গবেষণা তুলে ধরে এতে জানানো হয়, ৪২ শতাংশ নারী হাসপাতালে গিয়ে খারাপ ব্যবহারের শিকার হন। গবেষণায় অংশ নেওয়া ৮৪ শতাংশ নারীই মনে করেন শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং সেবাগুলো অনিরাপদ।  
জনসেবা খাতের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও বিভিন্ন পক্ষের সমন্বয় বাড়াতে দু’দিনব্যাপী এ সম্মেলন চলছে।  

যৌথভাবে সম্মেলন আয়োজন করে ক্রিশ্চিয়ানএইড  বাংলাদেশ, কেয়ার বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আরবান ফোরাম ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গর্ভন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৮
এমসি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।