সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে জনতা ব্যাংকে ঢুকে চেক ছিনতাই ও ব্যবসায়ীকে মারপিটের ঘটনায় মামলা দায়েরের বিষয়ে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে ওসি আসলাম আলীর বিরুদ্ধে।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষের মামলা না নিয়ে উল্টো ছিনতাইকারী আওয়ামী লীগ নেতা শুকুর আলীর পক্ষে মামলা নিয়েছেন তিনি।
এদিকে থানায় মামলা না নেওয়ায় ব্যাংক ম্যানেজার আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা শুকুর আলীসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে শাহজাদপুর চৌকি আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোসলেম উদ্দীন মামলাটি আমলে নিয়ে শাহজাদপুর থানাকে এফআইআর হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দেন বলে জানান আইনজীবি অ্যাডভোকেট রাশেদুল ইসলাম।
মারপিটে আহত ব্যবসায়ী আমির হামজা অভিযোগ করে বলেন, ব্যবসায়িক লেনদেনের সূত্রে আওয়ামী লীগ নেতা শুকুর আলীর কাছে ৯৬ লাখ টাকা আমার পাওনা ছিল। ওই টাকার অনুকূলে তিনি জনতা ব্যাংক বাঘাবাড়ি শাখার একটি চেক দিয়েছিলেন। কিন্তু একাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় গত ২০ জুলাই আমি ব্যাংকে চেক ডিজঅনারের কাগজের জন্য যাই। তখন ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার হাবিবুর রহমান ডিজঅনারের কাগজ তৈরি করেছিলেন। তাৎক্ষণিক শুকুর আলীসহ ১০/১২ জন ঢুকে পড়েন। তার ভাতিজা সেলিম ব্যাংক কর্মকর্তার কাছ থেকে চেকটি কেড়ে নিয়ে ছিড়ে ফেলেন। এ সময় বাঁধা দিতে গেলে তারা চেয়ার ও হাতুড়ি দিয়ে আমাকে পেটায়।
তিনি বলেন, ঘটনার পরদিন ২১ জুলাই শাহজাদপুর থানা পুলিশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের জিডি এন্ট্রি করলেও মামলা নেয়নি। অথচ ওইদিনই ছিনতাইকারী শুকুর আলীর মামলা নিয়েছেন। এখানে ওসি সাহেব পক্ষপাতিত্ব করেছেন বলে দাবি তার।
জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আমির হামজা ৯৬ লাখ টাকার একটি চেক উপস্থাপন করে আমার সামনে। চেকটা যখন উপস্থাপন করে, তখন ব্যাংকে ওই একাউন্টে টাকা না থাকায় আমরা একাউন্ট হোল্ডার শুকুর প্রামাণিকের সঙ্গে কথা বলি। তিনি ১০ দিনের সময় নেন। ২০ জুলাই ওই চেক ডিজ অনারের ডেট ছিল। এদিন আমির হামজা চেক ডিজঅনার নিতে এলে যথারীতি সেটা প্রস্তুত করি। কিন্তু হঠাৎ পেছন থেকে শুকুর আলীর ভাতিজা সেলিম আমার হাত থেকে চেক কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলেন। তখন দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়।
ব্যাংকের ম্যানেজার আলমগীর হোসেন বলেন, ঘটনার পরদিন আমরা থানায় জিডি করেছি। তবে মামলা নিতে ওসি সাহেব নানা অজুহাত দেখালে বাধ্য হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।
শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম আলী বলেন, শুকুর আলী পক্ষের একজনের মাথা ফেটে যাওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। ব্যাংকের পক্ষ থেকে জিডি করা হয়েছে। তারা মামলা করতে না এসে আদালতে গেছেন। দুটি মামলাই আমরা তদন্ত করবো।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) মো. কামরুজ্জামান বলেন, মামলার বিষয়ে ওসি সাহেব বলতে পারবেন। কারণ মামলা নেওয়া বা না নেওয়ার এখতিয়ার তার। আপনি তাকেই জিজ্ঞেস করেন, ব্যাংকের মামলা কেন নিলেন না।
এমএম