ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৪ জুলাই ২০২৫, ২৮ মহররম ১৪৪৭

জাতীয়

কর্মীদের শালীন পোশাক পরার নির্দেশনা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০:২০, জুলাই ২৪, ২০২৫
কর্মীদের শালীন পোশাক পরার নির্দেশনা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত সব স্তরের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের শালীন পোশাক পরিধানের নির্দেশনা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সোমবার (২১ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ-২ এ নির্দেশনা দিয়েছে।

নারী কর্মীদের জন্য নির্দেশনায় বলা হয়েছে, অফিসে শাড়ি, সালোয়ার–কামিজ ও ওড়না কিংবা অন্যান্য পেশাদার ও শালীন পোশাক পরিধান করতে হবে। শর্ট স্লিভ ও ছোট দৈর্ঘ্যের পোশাক এবং লেগিংস পরিহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফরমাল স্যান্ডেল বা জুতা, সাদামাটা হেডস্কার্ফ বা হিজাব পরতেও বলা হয়েছে।

পুরুষ কর্মকর্তা–কর্মচারীদের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, তাদের ফরমাল শার্ট (লম্বা বা হাফ হাতা) ও প্যান্ট পরতে হবে। জিনস ও গ্যাবার্ডিন প্যান্ট পরা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, নির্ধারিত পোশাকবিধি লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা–কর্মচারীর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংক যে নির্দেশনাটি দিয়েছে, সেটির আদেশের ১১ ক্রমিক নম্বরে আরও তিনটি নির্দেশনা রয়েছে। ১১ (ক) নম্বরে নারী কর্মীদের প্রতি আচরণের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক স্টাফ রেগুলেশন ২০০৩–এর ৩৯ ধারায় বর্ণিত নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে। যৌন হয়রানিসংক্রান্ত অভিযোগগুলো ঘটনা ঘটার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে মানবসম্পদ বিভাগ-১–এর নির্দিষ্ট পরিপত্রের মাধ্যমে গঠিত কমিটির কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে।

১১ (খ) নম্বরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের বিষয়ে মানবসম্পদ বিভাগ-২–এর অফিস নির্দেশ যথাযথভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।

১১ (গ) নম্বরে ইতিবাচক কর্মপরিবেশ তৈরি করার জন্য দাপ্তরিক শিষ্টাচার ও আচরণবিধি তথা সততা, নৈতিকতা, সময়ানুবর্তিতা, শৃঙ্খলাবোধ, অর্পিত দায়িত্ব–কর্তব্য পালনে নিষ্ঠা ইত্যাদি, সহকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ ও আন্তরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক (পারস্পরিক সম্মান, সৌজন্যবোধ, সহযোগিতামূলক মনোভাব ইত্যাদি) মেনে চলতে বলা হয়েছে।

গৃহীত সিদ্ধান্তের ১২ নম্বরে বলা হয়েছে, ১১ নম্বর ক্রমিকে দেওয়া নির্দেশনা পরিপালনের জন্য অফিস, বিভাগ, প্রকল্প, সেল, ইউনিটভিত্তিক পর্যবেক্ষণের জন্য একজন কর্মকর্তাকে মনোনয়ন দিতে হবে। ওই নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে তদারকি করবেন মনোনীত কর্মকর্তা। এর ব্যত্যয় হলে বিভাগীয় প্রধানকে অবহিত করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা–কর্মচারীর বিরুদ্ধে নির্দেশনা ও শৃঙ্খলাভঙ্গের বিষয়ে অভিযোগ পাঠাবেন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন বলেন, এক প্রতিষ্ঠানে সবাই এক ধরনের পোশাক পরবে, সেই লক্ষ্য থেকেই এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ২১ জুলাই থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর হয়েছে।

তিনি বলেন, পোশাক নিয়ে যেন সাম্য ও ঐক্য থাকে, কোনো ধরনের মানসিক বৈষম্য না থাকে। আর শালীন পোশাক যেকোনো প্রতিষ্ঠানের নারী–পুরুষের জন্য বাধ্যতামূলক। নারীদের ক্ষেত্রে শর্ট স্লিভ ও লেংথের ড্রেস ও লেগিংস পরিহার করতে বলা হয়েছে। কাউকে হিজাব পরতে বাধ্য করা হয়নি। তবে যারা পরবেন, তাদের সাদামাটা রঙের হিজাব পরতে হবে।

আরিফ হোসেন খান বলেন, এখন একেক ব্যাচে ২০০–২৫০ জন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পাস করা তরুণেরা বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরিতে প্রবেশ করছেন। তাদের মধ্যে এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন, এমন আচরণের প্রবণতা দেখা যায়। বেশ কিছুদিন এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পোশাক কী পরতে হবে, সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জেডএ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।