রংপুর: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর ও জেলা কমিটির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ বাণিজ্য ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ১৬ জন নেতা একযোগে পদত্যাগ করেছেন।
পদত্যাগকারীদের মধ্যে মহানগর কমিটির ১১ জন ও জেলা কমিটির পাঁচ জন রয়েছেন।
জেলা কমিটির পদত্যাগী সদস্যরা হলেন—মুবতাসিম ফুয়াদ সাদিদ, জুনাইদ ইসলাম সাদিদ, সৃজন সাহা, মাহতাব হোসেন আবির ও সাওম মাহমুদ সিরাজ।
এ সময় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীও সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম ছাড়ার ঘোষণা দেন।
রোববার (১৮ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করে তারা এ পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে সিয়াম আহসান আয়ান বলেন, সম্প্রতি রংপুর জেলা ও মহানগর কমিটির আহ্বায়ক, সদস্যসচিবসহ কিছু নেতার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এবং এসবের সপক্ষে পাওয়া প্রমাণ আন্দোলনের মূল চেতনা ও আদর্শের পরিপন্থি। এই গুটিকয়েক নেতার অপকর্মের দায় নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাওয়া আমাদের ওপরও বর্তাচ্ছে। যা অত্যন্ত লজ্জাজনক। এজন্য আমরা পদত্যাগ করছি।
আরেক পদত্যাগী নেতা মাহতাব হোসেন আবির বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে রংপুরের ঘাঘট নদের পাড়ে গ্রামীণ কুটির শিল্প মেলায় ব্যাপক জুয়ার অভিযোগ ওঠে। সেখান থেকে মহানগর ও জেলা কমিটি মিলে ১৪ লাখ টাকা চাঁদা নেয়। তখন আমরা শীর্ষ নেতাদের কাছে কৈফিয়ত দাবি করলেও তারা কোনো জবাব দেননি। এ ছাড়া মামলা বাণিজ্য, ফেনীর বন্যার সময় ত্রাণের অবশিষ্ট ৮৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ এবং রংপুর সিটি করপোরেশনের ২৫ কর্মচারীর নিয়োগে কয়েক লাখ টাকা লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। এসবের প্রতিবাদেই আমরা পদত্যাগ করছি।
অভিযোগ অস্বীকার করে মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমদ বলেন, আমি কোনো অনৈতিক বা দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডে জড়াইনি। অবশ্যই কারও না কারও স্বার্থে আঘাত লেগেছে বলেই এমনটি করা হচ্ছে। যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা সঠিক নয়।
অন্যদিকে, রংপুর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ বলেন, যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে তা ষড়যন্ত্রমূলক। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠনকে বিতর্কিত করতেই এসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে। শিগগিরই আমরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সবকিছু পরিষ্কার করব।
এর আগে, গত ১৫ মে জেলা কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ তুলে সংগঠনের জেলা কমিটির সদস্য মাহমুদুর রহমান পদত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৪ নভেম্বর ইমতিয়াজ আহমদকে আহ্বায়ক ও রহমত আলীকে সদস্যসচিব করে ১১২ সদস্যের মহানগর কমিটি এবং ইমরান আহমেদকে আহ্বায়ক ও আশফাক আহমেদ জামিলকে সদস্যসচিব করে ১৫৫ সদস্যের জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এমজে
