ঢাকা: বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রার এবারের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতির মোটিফ। নানা আলোচনা-সমালোচনা, অঘটনের পরও শোভাযাত্রায় দেখা মিলেছে সেই মোটিফের।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) আনন্দ শোভাযাত্রা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদে গিয়ে এই চিত্র দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, আনন্দ শোভাযাত্রা শেষে চারুকলা অনুষদের ভেতরে রাখা ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি, ইলিশ, বাঘ, পায়রাসহ অন্যান্য মোটিফগুলো। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা ও পহেলা বৈশাখে ঘুরতে চারুকলায় আসা দর্শনার্থীরা সেসব মোটিফ ঘুরে দেখছেন এবং ছবি তুলছেন। তবে সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা যায় ফ্যাসিবাদের আলোচিত সেই মোটিফ ঘিরে। কেউ শুধু সেই মোটিফের ছবি তুলছেন, তো কেউ মোটিফের সঙ্গে নিজের ছবি তুলছেন। কেউ ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতির সামনে প্রিয়জনের ছবি তুলে দিচ্ছেন, তো কেউ তুলছেন সেলফি।
তেমনি একজন হাবিবুর রহমান। রাজধানীর নিকেতন থেকে শোভাযাত্রায় অংশ নিতে আসা এই শিক্ষার্থী বলেন, গত কয়দিন ধরে ফেসবুকে ফ্যাসিবাদের এই মুখাকৃতির ছবি দেখছি। শোভাযাত্রার সময়ও দেখলাম। তখন ভালোভাবে ছবি তুলতে পারিনি। এখন চারুকলায় এসে তুলছি। তবে এখানেও অনেক ভিড়।
অরূপ কুরি নামের আরেক দর্শনার্থী বলেন, প্রতিবারই শোভাযাত্রা শেষে মোটিফ দেখতে আসি। তখন স্মৃতি হিসেবে ছবি তুলে রাখি। এবারও এলাম৷ সব মোটিফেরই ছবি তুলব। তবে ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতির মোটিফ নিয়ে মানুষের আগ্রহ বেশি। এবার এই মোটিফের কারণেই শোভাযাত্রায় নতুনত্ব এসেছে।
এর আগে সকাল ৯টায় বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বরণ করে নিতে চারুকলার সামনে থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। তখনও সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল এই ফ্যাসিবাদের মোটিফ। এই মোটিফের ছবি তুলতে তখনও হুড়োহুড়ি লেগে যায়।
গত কয়েকদিন ধরেই গণমাধ্যম ও সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনায় ছিল ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতির মোটিফ। প্রথমে মোটিফটি বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়। কিন্তু গত শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদে নববর্ষের শোভাযাত্রার জন্য বানানো ওই মোটিফ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় অজ্ঞাত এক যুবক। সেই আগুনে পুড়ে যায় শান্তির প্রতীক পায়রাও। এই ঘটনায় শাহবাগ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি মামলা করে ঢাবি প্রশাসন।
এরপর ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতির মোটিফ পুনরায় বানানোর চ্যালেঞ্জ নেন শিল্পীরা। মাত্র একদিনে কর্কশিট দিয়ে আবার ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতির মোটিফ তৈরি করেন তারা। যা আজ শোভাযাত্রায় সবার প্রথমে ছিল।
উল্লেখ্য, এ বছরের আনন্দ শোভাযাত্রায় ২৮টি জাতিগোষ্ঠী, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন দেশের অতিথিরা অংশ নেন। বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় ছিল সাতটি বড় মোটিফ, সাতটি মাঝারি মোটিফ ও সাতটি ছোট মোটিফ।
আরও পড়ুন>> আগুনে পুড়িয়েও শোভাযাত্রায় ঠোকানো যায়নি ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২৫
এসসি/এসএএইচ