ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ ভাদ্র ১৪৩২, ২৬ আগস্ট ২০২৫, ০২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

সারাদেশ

দুই যুবককে হত্যা-লাশ গুম, সাবেক ডিআইজির বিরুদ্ধে মামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:০৯, আগস্ট ২৫, ২০২৫
দুই যুবককে হত্যা-লাশ গুম, সাবেক ডিআইজির বিরুদ্ধে মামলা সাবেজ ডিআইজি আনিসুর রহমান

দুই যুবককে হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগে রাজশাহীর সাবেজ ডিআইজি ও যশোরের তৎকালীন পুলিশ সুপার আনিসুর রহমানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।

রোববার (২৪ আগস্ট) সাইদুর রহমান নামের এক নিখোঁজ যুবকের বাবা কাজী তৌহিদুর রহমান খোকন এ মামলা দায়ের করেন।

অভিযোগ আমলে নিয়ে যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রহমত আলী কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী মিলন আহমেদ।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন—টিএসআই রফিকুল ইসলাম, শংকরপুরের সাবেক কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফা, পিরোজপুরের কুমারখালী গ্রামের ফুলু মিয়া, রমিজ শেখ, নাসির শেখ, সাইফুল শেখ, হারুন অর রশিদ শেখ, জাহিদুল শেখ ও আল আমিন তালুকদার।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, তিনি যশোরে থাকেন। তবে তার গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের কুমারখালীতে। সেখানে তাদের অনেক সম্পত্তি রয়েছে। পুলিশ সদস্যরা ও কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফা ছাড়া অন্য আসামিরাও সবাই পিরোজপুরের। তারা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হওয়ায় বিগত সরকারের আমলে জমি দখলসহ নানা অপরাধে জড়িত ছিলেন।

বাদী জানান, তিনি জানতে পারেন গ্রামে থাকা তার সম্পত্তি আসামিরা জোর করে দখল করে নিয়েছেন। পরে বিষয়টি যাচাইয়ে তিনি ছেলে সাইদুর রহমান সাইদকে ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল গ্রামের বাড়িতে পাঠান। তখন আসামিরা তাকে ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকি দেয়। পরে ৫ এপ্রিল দুপুরে সাইদ ও তার বন্ধু শাওন শহরের পৌর পার্কে ঘুরতে গেলে আসামি গোলাম মোস্তাসহ অন্যদের উপস্থিতিতে পুলিশ সুপার আনিসুর রহমানের নির্দেশে টিএসআই রফিক তাদের মারধর করে আটক করেন।

খবর পেয়ে তৌহিদুর রহমান কোতোয়ালি থানায় যোগাযোগ করলে তারা এ বিষয়ে কোনো সহায়তা করেনি। পরে পুলিশ সুপারের কাছে গেলে তিনি দুই যুবককে আদালতে সোপর্দ করার আশ্বাস দেন।

অন্যদিকে, টিএসআই রফিক ও গোলাম মোস্তফা তাদের দুজনকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করেন। এরপরেও তাদের আদালতে সোপর্দ কিংবা ছেড়ে না দেওয়ায় এক পর্যায়ে তার স্ত্রী হীরা বেগম আদালতে মামলা করেন।

খবর পেয়ে টিএসআই রফিক হীরা বেগমকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের বাড়িতে আটকে রেখে মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেন। রাজি না হলে তাকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিদ্যুতের শক ও হত্যার হুমকি দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করানো হয়। এতে হীরা বেগম অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরে মারা যান। এরপর সাইদ ও তার বন্ধু শাওনকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বাদীর দাবি, তাদের দুজনকে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়েছে। সে সময় আসামিরা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পাননি বলে জানিয়েছেন তৌহিদুর রহমান। বর্তমানে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হওয়ায় আদালতে মামলা করেছেন।

এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।