ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের সদর ইউনিয়নের হাজী ডাঙ্গী ও টিলার চর গ্রামে ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে নদীপাড়ের মানুষ। গত কয়েকদিন পদ্মা নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র স্রোতে হাজীডাঙ্গী এইচবিবি পাকা সড়কের কিছু অংশ ধসে যাওয়ার পাশাপাশি টিলারচর গ্রামে নতুন করে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন।
সরেজমিন ওই এলাকা দুটিতে গিয়ে দেখা যায়, সদর ইউনিয়নের হাজী ডাঙ্গী গ্রামের পাকা সড়কের কয়েকটি স্থানে ধস দেখা দিয়েছে। এখানে স্থানীয়ভাবে কিছু বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে।
এছাড়া একই ইউনিয়নের টিলার চর গ্রামের নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে জানায় এলাকাবাসী। নদীর পাড় পানিতে প্লাবিত হওয়ায় কি পরিমাণ জায়গা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে তা অনুমান করা যাচ্ছে না।
ভাঙনের বিষয়ে উপজেলার টিলারচর গ্রামের নদীপাড়ের বসতি মো. মুনসুর ব্যাপারী (৬৫) ও শেখ খোরশেদ (৪৭) জানায়, নদীতে পানি বাড়ায় তীব্র স্রোতের তোরে নদী তীরের অনেকটা জায়গা বিলীন হয়েছে। নদী পাড়ে থাকা ভেসাল ও দুয়ারীর জন্য পুঁতে রাখা বাঁশ নিমিষেই নদী গর্ভে বিলীন হতে দেখেছেন তারা।
অন্যদিকে হাজীডাঙ্গী গ্রামের পাকা সড়কের কয়েকটি স্থান ধসে গিয়ে ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে ওই এলাকার নদী তীরের বসতিরা।
ভাঙনের বিষয়ে হাজীডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা সোলায়মান সিকদার (৫৮) ও সুফিয়া বেগম (৫৫) বলেন, বর্ষার পানিতে একটু একটু করে পাড় ভেঙে নদী এখন তাদের ঘরের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ভিটে-মাটি হারিয়ে রাস্তায় গিয়ে উঠতে হবে আমরাসহ এই এলাকার শত শত পরিবারকে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আলেপ মণ্ডল বলেন, ভাঙনের তীব্রতা অল্প থাকা অবস্থায় ব্যবস্থা না নিলে বসতবাড়ির পাশাপাশি হাজীডাঙ্গী গ্রামে অবস্থিত একটি মডেল মসজিদ, মাদরাসা ও স্কুল নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
নদী ভাঙনের বিষয়ে চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিরা খাতুন বলেন, “নদী ভাঙনের খবর পেয়ে ওই এলাকা দুটি পরিদর্শন করে ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিষয়টি অবহিত করার পাশাপাশি চিঠি দেওয়া হয়েছে।
ভাঙন রোধে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, হাজীডাঙ্গী গ্রামের ধসে যাওয়া পাকা সড়কের আপদকালীন ভাঙন রোধে ইতোমধ্যে ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যেই কাজ শুরু হবে।
এছাড়া টিলারচর গ্রামের অংশটা পানির নিচে থাকায় কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। পানি কমে নদীর পাড় জাগলে সেখানে জিওব্যাগের ডাম্পিং করা হবে। ভাঙন রোধে চরভদ্রাসন উপজেলার কয়েকটি পয়েন্ট মিলে ৩.১৫ কিলোমিটার জায়গায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে রয়েছে বলেও জানান পাউবোর এই নির্বাহী প্রকৌশলী।
আরএ