ঢাকা, শনিবার, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৬ আগস্ট ২০২৫, ২১ সফর ১৪৪৭

সারাদেশ

আ. লীগের দোসর জাপার কার্যক্রমেও নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে: নুর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩:০৪, আগস্ট ১৫, ২০২৫
আ. লীগের দোসর জাপার কার্যক্রমেও নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে: নুর ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ফ্যাসিবাদের পতন হলেও আজকে অনেকের মাঝে ফ্যাসিবাদী বহিঃপ্রকাশ দেখা যাচ্ছে। যেই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ছাত্রলীগের তাণ্ডব, দখল, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সবাই লড়াই করেছিল গণঅভ্যুত্থানের একবছরে আজ অনেকের মধ্যেই তার পুনরাবৃত্তি দেখা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, যেই ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে নতুন বাংলাদেশ হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। সেই সরকার ফ্যাসিবাদের বিচারের ক্ষেত্রে অগ্রগতি করতে পারেনি। ফ্যাসিবাদ নিষিদ্ধ করলেও ফ্যাসিবাদের দোসরদের আস্ফালন এখনো দেখা যায়। গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদকে টিকিয়ে রেখেছিলো ১৪ দলের শরিকরা। তাদেরই একটি শরিক দল জাতীয় পার্টি। তাদের আস্ফালন আজ দেখা যাচ্ছে। তাই অনতিবিলম্বে জাতীয় পার্টির কার্যক্রমেও নিষেধাজ্ঞা দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি। কেবল জাতীয় পার্টিই নয়, গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ এবং তাদের দোসর জাতীয় পার্টিসহ জড়িতদের নির্বাচনের আগেই তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রমের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি করেন।  

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পৌর মুক্তমঞ্চে গণ অধিকার পরিষদ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  

২০১৮ এর কোটা সংস্কার থেকে ২৪ এর গলঅভ্যুত্থানের স্মৃতিচারণ এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ও রাষ্ট্র সংস্কার শীর্ষক গণসমাবেশে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংস্কারের ক্ষেত্রে যে রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলা হয়েছে, সেই রাষ্ট্র সংস্কারে জুলাই সনদের এখনো পর্যন্ত কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। সরকার যে খসড়া ঘোষণাপত্র দিয়েছে সেখানে পরবর্তী নির্বাচিত সরকার তা বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। মূলত শুধু নির্বাচনের জন্য বা কাউকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয় বরং স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশের জন্য ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছে। তাই রাষ্ট্র সংস্কার নির্বাচনের আগেই করতে হবে। পরবর্তী সংসদ নয় জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এ সরকারকে নির্বাচনের আগেই নিতে হবে।  

তিনি বলেন, জুলাই সনদের ভিত্তিতে এবং রাজনৈতিক সমঝতা ও ঐক্যের ভিত্তিতে আগামী নির্বাচন হবে এবং দ্বিকক্ষ বিশষ্ট সংসদ হবে। সংসদে সব দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে সংসদের উচ্চ কক্ষে আনুপাতিক হারে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চত করতে হবে এবং এটি গণঅধিকার পরিষদের পরিষ্কার ঘোষণা।  

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন ঘোষণা নিয়ে তিনি সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক করে বলেন, যেই জাতীয় ঐক্য ও সংহতি গড়ে উঠেছিলো তা দলবাজি, দখলবাজি ও এবং চাঁদাবাজির কারণে অনৈক্য দেখা দিয়েছে। যার ফলে একে অপরের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি করা হচ্ছে। এ অবস্থা চলমান থাকলে ফ্যাসিবাদ আবারো সুযোগ পাবে এতে নির্বাচন যথা সময়ে হবে না।  

তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার দিকে মনোযোগ না দিয়ে সবাই শুধু ক্ষমতা ভোগ করা আর অর্থ বিত্তের মালিক হওয়ার দিকে মনোযোগ। এ সরকারের বেশ কিছু উপদেষ্টার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি সীমাহীন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

তাই উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করার পাশিপাশি প্রশাসনকে ঢেলে না সাজিয়ে নির্বাচন করলে এ সরকার বিদায় নিতে পারবে না। নির্বাচনের আগে সংকট দেখা দিলে আরেকটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনের দাবি জোরালো হবে এবং গণ অধিকার পরিষদের অবস্থান সেদিকেই থাকবে।

সমাবেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি আশরাফুল হাসান তপুর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান, সিনিয়র সহসভাপতি ফারুক হাসানসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।

সমাবেশকে কেন্দ্র করে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সভাস্থলে যোগ দেন।

জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।