ঢাকা, শুক্রবার, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৫ আগস্ট ২০২৫, ২০ সফর ১৪৪৭

সারাদেশ

হাসিনা বাংলাদেশে আসেন পিতৃহত্যার শোধ নিতে: এ্যানি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:২৩, আগস্ট ১৫, ২০২৫
হাসিনা বাংলাদেশে আসেন পিতৃহত্যার শোধ নিতে: এ্যানি আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন এ্যানি

লক্ষ্মীপুর: বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, হাসিনা পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশে এসেছিল। আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পর থেকে জঙ্গি শাসনের মধ্য দিয়ে দেশ পরিচালনা করেছিল।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির প্রতিনিধি নির্বাচনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

এ্যানি বলেন, গত ১৭ বছর মা-বোনেরা পর্যন্ত নির্যাতিত হয়েছে। হাসিনা কাউকে ছাড় দেয়নি। কারণ দেশ শাসন, দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসা, দেশের মানুষের প্রতি দরদ এটা কখনো চিন্তা করে নাই। হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিল পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য। এটা সাধারণ মানুষের মুখে সব সময় ছিল।

তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট তার বাবাকে যখন হত্যা করা হয়েছিল, সে আলোচনার সুযোগ আজ তারা পায়নি, পাচ্ছে না। কারণ মানুষের মনের মধ্যে এরা দাগ কাটতে পারে নাই। মানুষের হৃদয়ে আওয়ামী লীগ ছিল না, মানুষের হৃদয় শেখ মুজিব ছিল না, মানুষের হৃদয় হাসিনা ছিল না, শেখ মুজিব পরিবার ছিল না। কারণ অনেক ফ্যাসিস্ট এবং বর্বর কায়দায় জুলুম নির্যাতন জঙ্গি শাসনের মধ্য দিয়ে তারা দেশটাকে পরিচালনা করেছিল সেই স্বাধীনতার পর থেকে।

শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দলে পরিণত হতে পারেনি। শেখ হাসিনা জনগণের বন্ধু হতে পারেনি, গণশত্রু এবং জনশত্রুতে পরিণত হয়েছে। ১৭ বছরে অত্যাচার-নির্যাতন, সবশেষ জুলাই আন্দোলন ৫ আগস্টে গিয়ে শেষ হয়েছে। শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। আওয়ামী লীগ গত ১৭ বছর বর্বর যুগের অধ্যায় তৈরি করেছে। তারা যখন বলে চূড়ান্ত ক্ষমতা দরকার, গণতন্ত্রের অগ্রাধিকার নয়, উন্নয়নের অগ্রাধিকার, কেন?- কারণ তখন দুর্নীতি করা যাবে। ফ্যাসিস্ট, তারা একটি কর্তৃত্ববাদী শাসক, একটি স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে আওয়ামী লীগ অরাজনৈতিক ফ্যাসিস্ট দলে পরিণত হয়েছে। ফ্যাসিবাদের দল আওয়ামী লীগ। এদের রাজনৈতিক দল বলা যায় না৷

এ্যানি আরও বলেন, আমরা ১৯৭৫ সাল দেখেছি, ৭ নভেম্বর বিপ্লবী এবং সংহতি দিবস দেখেছি। প্রেসিডেন্ট জিয়া গণমানুষের সঙ্গে ছিলেন, জনমানুষের সঙ্গে ছিলেন। গ্রামে গেছেন, খাল খনন করেছেন। প্রেসিডেন্ট জিয়া মানুষের সঙ্গে এমনভাবে মিশে গেছেন, তাকে বলা হয় বা বিএনপিকে বলা হয় গণমানুষের দল, জনমানুষের দল। প্রেসিডেন্ট জিয়াকে রাখাল রাজা বলা হতো। প্রেসিডেন্ট জিয়ার সময় গণতন্ত্র ছিল। তিনি গণতন্ত্র মানুষের দরজায় নিয়ে গেছেন।

জুলাই আন্দোলন সহজ ব্যাপার ছিল না, ছোট ব্যাপার ছিল না। যার কারণে তারেক রহমানের প্রতি আজ মানুষের আস্থা এবং বিশ্বাস। তারেক রহমান সম্মানিত হয়েছেন। আমরা তার ওপর ভরসা করতে পারি। আশা রাখতে পারি, আস্থা রাখতে পারি। আন্দোলনের পরবর্তী ৫ আগস্ট আমরা সাহস পাচ্ছি, মনোবল পাচ্ছি। সে সাহস এবং মনোবলের কারণে দেশের মানুষের মধ্যে তার প্রতি আস্থা এবং বিশ্বাস আরও বেড়েছে। আমরা সবাই অপেক্ষায় আছি, কবে নাগাদ তারেক রহমান দেশে ফিরবেন, দেশের নেতৃত্ব দেবেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন। যদিও ষড়যন্ত্র থেমে নেই। হাসিনার অর্থ, হাসিনা দুর্নীতি, অর্থপাচার, আর সবাই তো পালিয়ে যায়নি। দেশে এখনো অনেকেই আছে, যোগ করেন তিনি।

শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি প্রশ্ন রেখে বলেন, কেউ যদি বলে ১৭ বছর আর জুলাই ৩৬ দিন আলাদা, না আলাদাভাবে আমরা দেখি না। ৩৬ দিনে সরকারের কাছে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে যারা ১০ লাখ টাকা পায়, ১৭ বছরের যে গুম-খুন হয়েছে, সে কি টাকা পাবে না সরকারের কাছ থেকে? যারা আহত হয়েছে তারা যদি ১ লাখ টাকা করে পায়, তাহলে ১৭ বছর যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারা কি টাকা পাবে না? তাহলে এ পার্থক্য কেন? এ পার্থক্য তারেক রহমান আগামী দিনে রাখবেন না। তারেক রহমান প্রত্যেকটা পরিবারের পাশে দাঁড়াবেন, খালেদা জিয়া প্রত্যেকটা পরিবারের পাশে দাঁড়াবেন। বিএনপি সরকার গঠন করবে, প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দলের পাশে দাঁড়াবে।

তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে পূর্ব চর মনসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাছিবুর রহমান, জেলা আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান, সদর উপজেলা (পূর্ব) বিএনপির আহ্বায়ক মাইন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজ, সদস্য সচিব মোখলেছুর রহমান হারুন, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ মো. এমরানসহ অনেকে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নুরুল আলম।

এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।