ঢাকা, সোমবার, ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২, ১১ আগস্ট ২০২৫, ১৬ সফর ১৪৪৭

সারাদেশ

মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় নিহতদের বাড়িতে বিএনপি নেতা এ্যানি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০:১৬, আগস্ট ১০, ২০২৫
মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় নিহতদের বাড়িতে বিএনপি নেতা এ্যানি মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় নিহতদের বাড়িতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি।

লক্ষ্মীপুর: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার পূর্ব চন্দ্রগঞ্জের জগদীশপুর এলাকায় মাইক্রোবাস খালে পড়ে লক্ষ্মীপুরের একই পরিবারের নিহত সাতজনের বাড়িতে গেলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। এ সময় পাশাপাশি কবরস্থানে থাকা ছয়জনের কবর জিয়ারত ও শোকার্ত পরিবারকে সমবেদনা জানান তিনি।

 

শনিবার (৯ জুলাই) বিকেলে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের পশ্চিম চৌপল্লী গ্রামে ওমান প্রবাসী মো. বাহার উদ্দিনের বাড়িতে উপস্থিত হন এ্যানি। এ সময় প্রবাসী বাহার ঘটনার জন্য মাইক্রোবাসের মালিক এবং চালককে দায়ী করে তাদের বিচারের দাবি জানান।  

শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, এ পরিবারের সাতজন নিহত হয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা কাছে দোয়া করি, তাদের যেন বেহেশত নসিব করেন। চালক, মালিক, যাত্রী আমাদের সবাইকে সর্তক থাকতে হবে। আমরা এ পরিবারকে শান্তনা দিতে তাদের বাড়িতে আসছি। পরিবারের পাশে আমরা দাঁড়িয়েছি।  

নিহতদের পরিবারের বরাত দিয়ে এ্যানি বলেন, গাড়ির মালিক পক্ষ নিহতের পরিবারের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে। মালিককে ওই পরিবারের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থাও করতে হবে। এ সময় তিনি সরকারকে ওই পরিবারের প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানান।  

ওমান প্রবাসী বাহার উদ্দিন বলেন, চালক এবং গাড়ির মালিকের বিচার চাই। আমাদের সাতজন সদস্য মারা গেছে। সেখানে আমাদের সান্ত্বনা দেওয়ার বদলে আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে। গাড়ির মালিক তার গাড়ি নিয়ে চিন্তিত ছিল। মালিক গাড়ি চালককে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেন। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে আমার চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে গাড়ির মালিক খারাপ আচরণ করেন।  

নোয়াখালীর একটি হাসপাতালের চিকিৎসা জনিত অবহেলার অভিযোগ করে বাহার আরও বলেন, গাড়ি থেকে বের করার পরও আমার স্ত্রী জীবিত ছিলেন। স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তিনি অক্সিজেন গ্রহণ করে। এখানকার ডাক্তাররা তাকে আইসিইউতে নেওয়ার পরামর্শ দেয়। অ্যাম্বুলেন্সে করে নোয়াখালীর মাইজদী প্রাইম হসপিটালে নিয়ে যাই। হাসপাতালের লোকজন বলছে তাকে চিকিৎসা দিতে হলে পুলিশ লাগবে। তাদের অনেক অনুরোধ করার পরও চিকিৎসা দেয়নি। সেখান থেকে নিয়ে আসার সময় নোয়াখালীর চোরাস্তা এলাকায় আমার স্ত্রী মারা যান।  

প্রসঙ্গত, ওমান প্রবাসী মো. বাহার উদ্দিনকে ঢাকার বিমানবন্দর থেকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসতে তার বাবা-মা-নানি, স্ত্রী-মেয়ে-ভাতিজি, শ্বশুর ও শ্যালকসহ ১১ জন যান। আসার পথে গত ৬ আগস্ট তাদের বহনকৃত মাইক্রোবাসটি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চন্দ্রগঞ্জ পূর্ব বাজারে রহমতখালী খালে পড়ে যায়। মাইক্রোবাসটিতে চালকসহ ১৩ জন ছিল। গাড়ি খালের পানিতে ডুবে সাত জনের মৃত্যু হয়।  

নিহতরা হলেন- প্রবাসী বাহারের মা মুরশিদা (৫০), স্ত্রী কবিতা বেগম (২৩), মেয়ে মীম (২), নানি ফয়জুননেছা (৮০), ভাইয়ের স্ত্রী লাবনী (২৫), ভাতিজি লামিয়া (৮) ও রেশমী (৯)। সাতজনের মধ্যে ছয়জনকে ওইদিন বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। তবে প্রবাসী বাহারের নানি ফয়জুননেছাকে হাজিরপাড়া এলাকায় দাফন করা হয়েছে।  

এ ঘটনায় শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাতে বেগমগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন ওমান প্রবাসী বাহার উদ্দিনের বাবা আবদুর রহিম।

এতে মাইক্রোবাসচালক এনায়েতকে আসামি করা হয়। তিনি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার হাজিরপাড়া ইউনিয়নের চরচামিতা এলাকার পাটওয়ারী বাড়ির মৃত ফয়েজ আহমেদের ছেলে। তাকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।