যশোর: এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার সাধ অপূর্ণই থেকে গেল সুমাইয়া ছায়ার। অসাবধানতায় রিকশার চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে ১৩দিন চিকিৎসার পর মৃত্যুর কাছে হার মানতে হল এই মেধাবী শিক্ষার্থীকে।
সুমাইয়া ছায়া (১৮) যশোর সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী। তিনি সদর উপজেলার দোগাছিয়া গ্রামের মারফত হোসেনের মেয়ে। ছিলেন এইসএসসি পরীক্ষার্থী।
পরিবার থেকে জানা গেছে, গত ২৫ জুলাই শুক্রবার দুপুরে দড়াটানা থেকে খড়কি বোনের বাড়িতে যাওয়ার বৃষ্টির কবলে পড়েন ছায়া। তা থেকে রক্ষা পেতে রিকশায় থাকা পলিথিন টেনে পায়ের নিচে গোজার জন্য মাথা নিচু করেছিলেন। এ সময় অসাধানতাবশত তার ওড়না রিকশার চাকায় পেঁচিয়ে যায়।
মুহুর্তেই গলায় ফাঁস লেগে তিনি রিকশা থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়ে নিস্তেজ হয়ে যান। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার হলে সেখান থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন চিকিৎসক।
খালাতো ভাই শিমুল ভুঁইয়া জানিয়েছেন, ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে অপারেশনের পর আট দিন লাইফ সাপোর্টে ছিলেন সুমাইয়া ছায়া। সেখানেই বুধবার (০৬ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টার দিকে মারা যান তিনি।
মিটফোর্ড হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের ব্রেইন ও স্পাইন বিশেষজ্ঞ সার্জন ডাক্তার ফিরোজ আহমেদ আল-আমিন বলেন, দুর্ঘটনায় ছায়ার মেরুদণ্ড ছিঁড়ে যায় এবং স্পাইনাল কর্ড সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে তার স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সম্ভাবনা ছিল না।
অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার মেরুদণ্ডের হাড়গুলো সংযুক্ত করা হয়। তবে স্পাইনাল কর্ড ছিঁড়ে যাওয়ায় তা আর সম্ভব হয়নি। অপারেশনের পর প্রথমে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। অবস্থার অবনতি হলে ২৯ জুলাই রাত ১টার দিকে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত তাকে আর বাঁচানো গেল না।
স্বজনেরা জানান, দুর্ঘটনার পর জ্ঞান ফিরে আসলেই পরীক্ষা দেওয়া ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন ছায়া। বার বার বলেছেন, ‘আমি পরীক্ষা দিতে চাই’।
এসএইচ