পঞ্চগড়: ভারতের শিলিগুড়ি থেকে এক বাংলাদেশি তরুণীকে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তরের পাশাপাশি নারী ও শিশুসহ নয় বাংলাদেশিকে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশ-ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাত থেকে শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া ও সদর উপজেলার দুটি সীমান্ত দিয়ে তাদের পুশ-ইন করা হয়।
এর মধ্যে তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধায় আটক একই পরিবারের চারজনসহ অন্য পাঁচজনকে হস্তান্তর করার বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন পঞ্চগড়-১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরুল ইসলাম।
এদিকে নীলফামী-৫৬ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ব্যাটালিয়নের সদস্যরা পুশ-ইন করা পাঁচজনকে পুলিশি হেফাজতে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামানও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাবান্ধা বিওপির ৭৩১/১৬-আর সীমান্ত পিলার বরাবর কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক হয়। এ বৈঠকের মাধ্যমে ভারতে অবৈধভাবে অবস্থানকারী পপি রায় (২২) নামে এক তরুণীকে বিজিবির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করে বিএসএফ।
পপি রায় এক বছর স্বামীর সঙ্গে শিলিগুড়িতে অবস্থান করে একটি মন্দিরে কাজ করছিলেন। তাকে শিলিগুড়ি পুলিশ আটক করে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে, পরে বিএসএফ তার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে বিজিবির মাধ্যমে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়। তার বাড়ি দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ থানায়।
তবে একই সময়ে সীমান্তের মেইন পিলার ৭৩২ এর ৪ সাব-পিলার এলাকা দিয়ে এক নারী ও তার তিন সন্তানকে পুশ-ইন করে বিএসএফ। তারা হলেন-আছমা খাতুন (৩৫), তার তিন সন্তান সামির মোড়ল (১৭), সালাম মোড়ল (১৫) ও শাহিনা (৭)।
তারা জানান, আছমার স্বামী ভারতীয় নাগরিক। সেই সূত্রে দীর্ঘদিন মুম্বাইয়ে বসবাস করছিলেন তারা। মুম্বাই পুলিশ তাদের আটক করে শিলিগুড়িতে পাঠানোর পর বিএসএফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশ-ইন করে।
অপরদিকে একই রাতে পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকার ডাংগিপুকুর দিয়ে আরও পাঁচ নারীকে পুশ-ইন করে বিএসএফ।
তারা হলেন-সাদিয়া খাতুন (৩৫), শারমিন সুলতানা সুমি (৩৫), মল্লিকা (৩২), ময়না খাতুন (৪৫) ও হালিমা (৩১)। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিজিবি তাদের আটক করে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, তাদের নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
অন্যদিকে পুশ-ইন করা নয়জনের বাড়ি যশোর ও ময়মনসিংহ জেলায়।
পুলিশ ও বিজিবি সূত্র জানায়, এর আগেও বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত পঞ্চগড় সদর ও বোদা উপজেলার দুই সীমান্ত এলাকা দিয়ে ১৭ জনকে পুশ-ইন করে বিএসএফ। এ নিয়ে গত দুই-তিন দিনে পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে মোট ১৫৭ জন নারী, পুরুষ ও শিশুকে পুশ-ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
সর্বশেষ ১১তম দফায় বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত নতুন করে আরও নয়জনকে পুশ-ইন করা হলো।
এসআই